টাঙ্গাইলে সেলিম মিয়া (৩৫) নামের রোজাদার এক রিকশাচালককে পেটানোর ঘটনায় পুলিশের এক কনস্টেবলকে ক্লোজড (প্রত্যাহার) করা হয়েছে। সোমবার রাতেই আবুল খায়ের নামের ওই ড্রাইভারকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় এক সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আহত রিকশাচালক সেলিম মিয়া টাঙ্গাইল সদর উপজেলার রসুলপুর গ্রামের মোখছেদ আলীর ছেলে।

এদিকে মঙ্গলবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) সভাকক্ষে ওই রিকশাচালকে এসপি সঞ্জিত কুমার রায় ১০ হাজার টাকা তুলে দেন। তার চিকিৎসার সব খরচের দায়িত্ব নিয়েছেন এসপি।

জানা গেছে, সোমবার সকালে ওই রিকশাচালককে টাঙ্গাইল শহরের আকুর-টাকুর পাড়ায় প্রেসক্লাবের সামনে মারধর করেন পুলিশের ওই ড্রাইভার। ঘটনার ভিডিওটি ফেসবুকে বিষয়টি ভাইরাল হয়ে যায়। পরে বিষয়টি পুলিশের নজরে আসে।

সেলিম মিয়া বলেন, তিনি টাঙ্গাইল শহরের স্টেডিয়াম মার্কেট থেকে এক যাত্রীকে নিয়ে নিরালা মোড়ের দিকে যাচ্ছিলেন। কিছুক্ষণ পর টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় পৌঁছালে মোড় ঘুরাচ্ছিলেন তিনি। তখন নিরালা মোড়গামী পুলিশের একটি গাড়ি ওভারটেক করে তার সামনে থামে। ওই গাড়ি থেকে পুলিশের পোশাক পরা এক লোক এসে তাকে বলেন, তর গাড়ি চালানো রং (ভুল) হয়েছে। তুই মোড় ঘুরাইচ্ছোস, সিগলান মানস নাই, তুই মোড় ঘুরানোর সময় বাম হাত দেস নাই কেন?

সেলিম মিয়া বলেন, তখন আমি বলি, স্যার আমার ভুল হয়েছে। পরে পুলিশের গাড়ি থেকে নেমে তিনি আমাকে লাঠি দিয়ে মারেন।

রিকশাচালক সেলিম মিয়া বলেন, তিনি ২০০৩ সালে বিদেশে চাকরি করতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সুবিধা করতে না পারায় ২০০৯ সালে দেশে ফিরে আসেন। পরে তিনি পুনরায় রিকশা চালানো শুরু করেন। তার তিন সন্তান রয়েছে।

সেলিম আরো বলেন, আমাকে এসপি স্যার টাকা দিয়েছেন। আমি খুশি হয়েছি।

এ বিষয়ে এসপি সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, এ ঘটনায় রাতেই পুলিশের ওই সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই রিকশাচালককে দেখভালের জন্য একজন ডাক্তার সার্বক্ষণিক তার খোঁজ-খবর নেবেন। যেখান তার চিকিৎসা প্রয়োজন সেখানেই তার চিকিৎসা করানো হবে। এছাড়া ওই রিকশাচালক যে কয়দিন রিকশা চালাতে পারবেন না সেই কয়দিন তার পরিবারের খরচ বহন করা হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।