দ্বিতীয় দফায় রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রত্যাবাসনে বৃহস্পতিবার প্রস্তুত ছিল বলে দাবি করছে মিয়ানমার। কিন্তু শরণার্থী প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া কেন হয়নি এই বিষয়ে তারা অবগত নন বলে দাবি করেন দেশটির সমাজকল্যাণ, ত্রাণ এবং পুনবার্সন মন্ত্রী ইউ উইন মিয়াট আয়ে।

বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় বারের মতো রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন ব্যর্থ হয়েছে। মিয়ানমারে নাগরিকত্ব ও নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন অধিকার নিশ্চিত না হওয়ায় এ মুহূর্তে বাংলাদেশের ক্যাম্প থেকে ফিরতে চাচ্ছেন না রোহিঙ্গারা। মিয়ানমারে নিজেদের অধিকার ফিরিয়ে দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন রোহিঙ্গারা।

সমাজকল্যাণ মন্ত্রী ইউ উইন মিয়াট আয়ে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার শরণার্থীদের গ্রহণের জন্য অনেক কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ থেকে কেউ ফেরত আসেনি। আমরা এর কারণ জানি না। রোহিঙ্গাদের গ্রহণের জন্য প্রস্তুত ক্যাম্প সন্ধ্যা পর্যন্ত খোলা ছিল।’

প্রত্যাবাসনের তালিকাভুক্তদের মধ্য থেকে গত তিন দিনে প্রায় ৩০০ রোহিঙ্গার মতামত নিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর এবং বাংলাদেশ। তবে তাদের কেউ মিয়ানমারে ফিরতে রাজি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু করা যায়নি।

মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, হালা ফো কং গ্রাম এবং রাখাইনের তাং পাইও এবং লাট ওয়াল গ্রামে শরণার্থীদের গ্রহণের উদ্দেশ্যে বাড়ি তৈরি করা হয়েছিল।

মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের জন্য রোহিঙ্গারা চারটি শর্তের দাবি করেছেন। রোহিঙ্গাদের দাবি, প্রত্যাবাসনের জন্য আগে তাদের নাগরিকত্ব দিতে হবে। জমি-জমা ও ভিটেমাটির দখল ফেরত দিতে হবে। নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। রাখাইনে তাদের সঙ্গে যা হয়েছে, সেজন্য ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

বার্মিজ রোহিঙ্গা সংগঠনের চেয়ারম্যান ইউ তুন খিন বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সংগঠনের প্রতিনিধি শরণার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করেছিল। কিন্তু শরণার্থীরা রাখাইনে নিশ্চয়তা চাই। এ কারণে প্রত্যাবার্সন কার্যকর হয়নি।’

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে মোমেন রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের অনাগ্রহকে ‘দুঃখজনক’ বলেছেন। আর জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বলেছে, রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায় ফেরা নিশ্চিত করতে হলে তাদের মধ্যে আস্থা তৈরির বিকল্প নেই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।