সুজন ভট্টাচার্য্য (ব্যুরো প্রধান চট্টগ্রাম): বান্দরবানের লামা উপজেলার মাতামুহুরি নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের হিড়িক পরেছে।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লামা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের টিটিএনডিসি নামক এলাকায় মাতামুহুরি নদী থেকে উত্তোলিত বালি পাহাড়সম স্তুপ করে দুইটি নির্দিষ্ট জায়গায় জমা করে রাখা হয়েছে।সেখান থেকে প্রতিদিন ৩/৫ ট্রাকে করে দিনেরাতে ২০ থেকে ৩০ বার বালি নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে পৌরসভা ও উপজেলার দূর্গম এলাকার বিভিন্ন উন্নয়নের কাজে।

বালি উত্তোলনের মূল হোতা চেয়ারম্যান পাড়ার বাসিন্দা শাহীন,ও পৌর সদর এলাকার বাসিন্দ শামীম।লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামালের নাম ভাঙিয়ে তার আপন ফুফাতো ভাই পরিচয়ে মোহাম্মদ হামিদ বালি উত্তোলনকারীদের ইন্দন দিচ্ছে বলে জানান এলাকাবাসী।

এছাড়াও ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদুল আলম এর বিরুদ্ধে মসজিদ কমিটির নাম ভাঙ্গিয়ে শাহিন এর কাছ থেকে ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে ও অভিযোগ পাওয়া গেছে।

অবাধে বালি উত্তোলনের ফলে ইতিমধ্যেই নদীর পাড়ে সৃষ্টি হয়েছে বিশাল ফাটলের।

এই বিষয়ে টিটিএনডিসি এলাকার মসজিদ পরিচালনা কমিঠির সভাপতি আমির হোসেন,জানান, মসজিদের জায়গায় বালি রাখার জন্য গত বছর ৫০ টাকা এবং এই বছর ৩০ হাজার টাকা ফরিদ কমিশনার কে দেন শাহীন।

এই বিষয়ে বান্দরবান জেলা পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা সামিউল আলম বলেন বিষয় টি সম্পর্কে অবগত ছিলাম না।ইতিমধ্যে লামার বিভিন্ন পয়েন্ট বালি উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্হা গ্রহণের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অবৈধ বালি উত্তোলনকারীদের ছাড় দেওয়া হবেনা।অতিদ্রুত ওই এলাকায় অভিযান পরিচালনার কথা ও জানান সামিউল।

এই ব্যাপারে অভিযুক্ত লামা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফরিদুল আলম বলেন,যারা বালি তুলে তারা মসজিদ থেকে বালি রাখার জন্য জায়গা টা ভাড়া নিয়েছে।তিনি আরো বলেন পুরো টাকায় মসজিদ কমিটির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।,আমার এখানে ১ টাকার ও লাভ নাই।এইভাবে অবৈধ বালি উত্তোলনে পর সেগুলো রাখার জন্য মসজিদ কতৃপক্ষ জমি ভাড়া দিতে পারেন কিনা,এমন প্রশ্ন ফরিদুল আলম বলেন এটা আমি জানিনা।আমি এখন মিটিং আছি বলে ফোনের লাইন কেটে দেন।

চলতি বছরের গত আগষ্ট মাসে লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজা রশিদ এই প্রতিবেদক কে জানান,আমি লামাতে নবাগত। অনেক বিষয় সম্পর্কে আমি এখনো পুরোপুরিভাবে অবগত নই।তিনি আরো বলেন আপনি যে তথ্যটি আমাকে জানালেন সেই জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।পরিবেশ অধিদপ্তের সাথে সমন্বয় করে এই অবৈধ বালি উত্তোলনের সাথে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবেনা।পরিবেশ আইনে যতবড় ক্ষমতাশালী ব্যক্তি অবৈধ বালি উত্তোলনের সাথে জড়িত থাকুক না কেন সবাই কে আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা হবে।

এরপর এতদিন পার হয়ে গেলেও বালিখেকোদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্হা গ্রহণ করা না হওয়ার কারণ জানতে চাইলে ইউএনও মিটিং আছি বলে সংযোগ টি বিছিন্ন করে দেন।

অভিযোগের বিষয়ে বালি উত্তোলনের মূল হোতা শাহীন ও শামীমের বক্তব্য নেওয়া জন্য কল করা হলেও তাদের ফোনে সংযোগ না দেওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

লামা পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের এক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করা শর্তে জানান,প্রশাসনের নাকের ডগার উপর দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার সিএফটি বালি পাচার হচ্ছে।তারপর ও এদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্হা নেওয়া হচ্ছেনা সেটা লামাবাসী সকলের ই জানা।

এই ভাবে বালি উত্তোলন অব্যহত থাকলে পরিবেশের উপর এর বিরাট ক্ষতিকর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন পরিবেশবাদীরা।বালি উত্তোলন বন্ধে কঠোর এবং স্হায়ী ব্যবস্হা গ্রহণের দাবী জানিয়েন এলাকার সচেতন সমাজ।

আমাদের বাণী ডট কম/১৪ সেপ্টেম্বর ২০২০/পিপিএম

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।