ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা;  আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য শামীম ওসমানের হুঁশিয়ারি উচ্চারণের এক দিনের মাথায় সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসছে প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। বেসরকারি এই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে, করোনা রোগী ভর্তি নিতে।

  • জানা গেছে, ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের সাইনবোর্ড এলাকায় অবস্থিত প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ২৫০টি বেড রয়েছে। এছাড়াও রয়েছে ১০টা বেড নিয়ে আইসিইউ ইউনিট। হাসপাতালটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ বরাবরই। তবে করোনাকালে সবচেয়ে মারাত্মক অভিযোগ, এ হাসপাতালে আক্রান্ত তো নয়ই, কোন রকম উপসর্গ থাকলেই রোগী ভর্তি নেয়া হয় না। সম্প্রতি এক যুবক হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসার পর করোনা উপসর্গ থাকায় ভর্তি নেয়নি। পরে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর পর পরীক্ষার রিপোর্টে ওই যুবকের করোনা ধরা পরেনি।

নিজ জেলার চিকিৎসা ব্যবস্থার কথা বলতে গিয়ে মঙ্গলবার শামীম ওসমান গণমাধ্যমকে বলেন, সরকারী নির্দেশনা রয়েছে বেসরকারী প্রতিটা হাসপাতালকে করোনা আক্রান্ত রোগী ভর্তি করতে হবে। অথচ, এখন পর্যন্ত প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল রোগী ভর্তি করছে না? প্রশাসন, দায়িত্বশীল কর্মকর্তা যাদের উপর নির্দেশনা আছে, তারা কেন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। সে ব্যাপারে আমি যথেষ্ট সন্দিহান। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে যদি তারা করোনা রোগী ভর্তির ব্যপারে ব্যবস্থা গ্রহণ না করে, তাহলে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে আমি নিজেই ওই হাসপাতালে যাবো এবং প্রয়োজন হলে ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে যা যা ব্যবস্থা নেয়ার দরকার আমি ব্যবস্থা নিবো।

  • এ ব্যাপারে নারায়ণগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ বলেন, আমরা করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা দিতে প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে চিঠি দিয়েছি। কর্তৃপক্ষ মৌখিক ভাবে জানিয়েছে, আগামী সপ্তাহ থেকে করোনা রোগী ভর্তি নিবে।

অপরদিকে, প্রো-অ্যাকটিভ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক একেএম রায়হান বলেন, সংসদ সদস্য যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তা সঠিক। আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কয়েক দফা মিটিং করেছি। আমরা বর্তমানে স্বাস্থ্যকর্মী সঙ্কটে রয়েছি। আমরা ইতোমধ্যে করোনা আক্রান্তদের জন্য আইশোলেসন ইউনিট প্রস্তুত করেছি। শনিবার আমরা (হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ) একটা মিটিং করবো। আশা করি খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই করোনা রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে পারবো।

এদিকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (১৮   জুন ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৮ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ১৩৪৩  জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৪৩হাজার ৮০৩ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ১ লাখ ২ হাজার ২৯২ জনে।‘২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ১ হাজার ৯৭৫ জন। মোট সুস্থ হয়েছে ৪০ হাজার ১৬৪ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৩৯ দশমিক ২৬ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছে ৩৮ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু দাঁড়ালো ১ হাজার ৩৪৩ জন। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩১ শতাংশ। মৃত্যু বিশ্লেষণে পুরুষ ৩১ জন এবং নারী ৭ জন। মৃত ব্যক্তিদের  মধ্যে  ঢাকা বিভাগে ১৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৮ জন, রাজশাহী বিভাগে ১ জন, খুলনা বিভাগে ২ জন, বরিশাল বিভাগে ১ জন,ময়মনসিংহ বিভাগে ১ জন এবং রংপুর বিভাগে ১ জন মৃত্যুবরণ করেছে। তাদের মধ্যে হাসপাতালে ২৪ জন এবং বাসায় ১৮ জন মারা গেছে

আমাদের বাণী ডট কম/১৮  জুন ২০২০/পিপিএম 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।