বেতন বৈষম্যে জর্জরিত বেসরকারি শিক্ষকরা। শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড আর শিক্ষকরা শিক্ষার মেরুদণ্ড। অথচ জাতির মেরুদণ্ডের পথপ্রদর্শকরা কি অবস্থায় আছেন?

নেপোলিয়ন বলেছিলেন, তোমরা আমাকে শিক্ষিত মা দাও আমি তোমাদের শিক্ষিত জাতি দেবো। কিন্তু আমরা বেসরকারি শিক্ষকরা আর কতদিন মানবেতর জীবনযাপন করলে শিক্ষিত মা দেবে? আজ সমাজের সবচেয়ে অসহায় মানুষ বেসরকারি শিক্ষকরা। কারণ তারা ইচ্ছে করলেই সবকিছু করতে পারে না।

একজন মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভকে মাসে ৩০-৩৫ হাজার টাকা বেতন দেয়া হয়। একটি প্রাইভেট ব্যাংকে চাকরি করলে ২৫-৩০ হাজার টাকা বেতন দেয়া হয়। আর জাতি ও সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পেশায় যারা নিয়োজিত, যাদের দ্বারা জাতি উন্নয়নের উচ্চ শিখরে উঠবে তাদের সঠিক মর্যাদা আর পারিশ্রমিক না দিলে কীভাবে জাতির উন্নয়ন হবে।

একজন সহকারী শিক্ষককে ১২ হাজার ৫০০ টাকা বেতন আর ১০০০ টাকা বাড়ি ভাড়া ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা দেয়া হয়। তারপর আবার ১০ শতাংশ কর্তন করে অবশিষ্ট থাকে ১২৭০০ টাকা। কি করে এই বেতনে তার জীবন চলবে। একজন ৮ম শ্রেণি পাস সরকারি পিওনের বেতন ১৬ হাজার টাকা। যে কিনা বড় বড় অফিসারদের চা বানিয়ে খাওয়ায়। আর শিক্ষককে দেয়া হয় তার চেয়ে অনেক কম, অথচ তারা গ্র্যাজুয়েট। দেশে আজ নৈতিকতার বড়ই অভাব।

পেটে ক্ষুধা নিয়ে কি করে শিক্ষকরা ছাত্রদের নৈতিকতা শিক্ষা দেবে? যেখানে শিক্ষকরা নিজেরাই অনৈতিকতার মধ্যে আছে। বর্তমান সরকার প্রধান শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী সবাই শিক্ষার প্রতি আন্তরিক। এই অবস্থায় সকলের প্রতি আকুল আবেদন দেশ বাঁচাতে চাইলে শিক্ষককে বাঁচান। আমাদের আর বেতন বৈষম্যের মধ্যে রাখবেন না। তাই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ করে আমাদের পাঁচ লাখ পরিবারকে বাঁচান।

লেখক: সহকারী শিক্ষক, ইটাখোলা সিনিয়র আলিম মাদরাসা, মাধবপুর, হবিগঞ্জ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।