নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা; বিশ্বব্যাপী দাবানলের মত ছড়িয়ে পড়ছে করোনাভাইরাস। এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত বিশ্বের প্রতিটি দেশেই যেন বিদ্যুতের গতিতে এ ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশের লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এর সংখ্যা। সাথে লাশের মিছিলও হচ্ছে বড়। আর এই ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দরকার জনগম সংযোগ এড়িয়ে চলা মুখে মাস্ক পড়া এমনকি প্রতি মূহুর্তে হ্যান্ড সেনিটাইজার কিংবা সাবান দিয়ে বিশ সেকেন্ড হাত ধুয়ে ফেলে। আর দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে দেশের বিভিন্ন সরকারি কলেজে রসায়ন বিভাগের ল্যাবে স্যানিটাইজার তৈরি করা হচ্ছে। বৈশ্বিক দুর্যোগ করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে স্যানিটাইজারের সংকট ও দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলে ক্যাডার সার্ভিসের সবচেয়ে বৃহৎ শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা এগিয়ে এসেছেন দেশের মানুষের নিরাপত্তায় সরকারকে সহযোগিতা করতে।

রাজধানীর ঢাকা উদ্যান কলেজের সহকারী অধ্যাপক নুসরাত জাহান এ ব্যাপারে তার ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছেন। এ ছাড়া শিক্ষা ক্যাডার সম্পর্কিত বিভিন্ন ফেসবুক গ্রুপে এসব কার্যক্রম তুলে ধরা হচ্ছে।

গতকাল রবিবার ও আজ সোমবার দেশের বেশ কিছু সরকারি কলেজের ল্যাবরেটরিতে তারা তৈরি করেছেন কয়েক হাজার বোতল হ্যান্ড স্যানিটাইজার। ইতোমধ্যে কয়েক হাজার পিস তৈরি হয়ে গেছে যা এখন দুর্যোগ মোকাবিলায় বিতরণের অপেক্ষায়। উপকরণে ঘাটতি দেখা না দিলে এইভাবে শিক্ষা ক্যাডারের মাধ্যমেই দেশের চাহিদা অনুযায়ী স্যানিটাইজারের যোগান দেওয়া সক্ষম হবে বলে জানান প্রস্তুতকারকরা।

স্যানিটাইজার প্রস্তুতকারী সরকারি কলেজগুলোর মধ্যে রয়েছে ঢাকা কলেজ, সরকারি সোহরাওয়ার্দী কলেজ, সরকারি কবি নজরুল কলেজ, সরকারি গুরুদয়াল কলেজ, চট্টগ্রাম কলেজ, রাজশাহী কলেজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ , এম.সি কলেজ, আনন্দ মোহন কলেজ (ময়মনসিংহ), কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, সরকারি সিটি কলেজ (চট্টগ্রাম) চট্রগ্রাম সরকারি কলেজ, সৈয়দপুর সরকারি কারিগরি কলেজ, হাজী মহসিন কলেজ (চট্রগ্রাম) জয়পুরহাট সরকারি কলেজ, এম.আর কলেজ (পঞ্চগড়), সরকারি বৃন্দাবন কলেজ (হবিগঞ্জ) কারমাইকেল কলেজ (রংপুর), দিনাজপুর সরকারি কলেজ, রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ, নিউ গভ. ডিগ্রি কলেজ।

কয়েকটি কলেজ ইতোমধ্যে স্যানিটাইজার তৈরি করে দরিদ্র শ্রমজীবী মানুষের মধ্যে বিতরণ করেছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ সারা দেশে ৩০০টি কলেজে শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা কর্মরত আছেন। কিন্তু সব কলেজে স্যানিটাইজার তৈরির উপকরণ নেই। পর্যাপ্ত সরকারি সহায়তা পেলে সারাদেশের সব কলেজে এটি তৈরি করে কারোনা মোকাবেলায় সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখতে পারবেন বলে মনে করেন শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তারা।

উল্লেখ্য, সর্বশেষ নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ৩৩ জনের দেহে করোনাভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন তিনজন। ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন পাঁচজন। বর্তমানে চিকিৎসাধীন ২৫ জন। মোট আক্রান্তদের মধ্যে ১১ জনের দীর্ঘমেয়াদি রোগব্যাধি রয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৩৩ জনের মধ্যে রাজধানী ঢাকায় সর্বোচ্চ ১৫ জন আক্রান্ত হন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মাদারীপুরে ১০ জন, নারায়ণগঞ্জে তিনজন, গাইবান্ধায় দুজন, কুমিল্লায় একজন, গাজীপুর ও চুয়াডাঙ্গায় একজন করে আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেছে।

আজ সোমবার (২৩ মার্চ ২০২০) বিকেলে করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত অনলাইন লাইভ ব্রিফিংয়ে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা এ তথ্য জানান।

আমাদের বাণী ডট কম/২৩ মার্চ ২০২০/টিএ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।