মোহাম্মদ আলী শামীম; শিক্ষা বিভাগের যুগোপযোগী উন্নয়নের জন্য প্রথমেই ধন্যবাদ জানাতে হয় বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে।স্বাধীনতার পূর্বে এদেশের মানুষ মানব সম্পদে রূপান্তরিত হবার জন্য তেমন কোন উন্নয়ন পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক গোষ্ঠী কিংবা ব্রিটিশরা করেনি।যার প্রমান স্বাধীন বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্হাপনের ইতিহাস দেখলে সহজে অনুমান করা যায়।

স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের প্রায় স্হানে এবং এরপর দেশের সকল এলাকায় বেসরকারি ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্হাপিত হয়।যার মূল উদ্দেশ্য হলো স্বাধীন বাংলাদেশের জানগণ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়া।মানব সম্পদে গঁড়ে উঠা।স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতির জন্য বঙ্গবন্ধুর হৃদয় দিয়ে কাজ করেছিলেন।পঁচাত্তরের ১৫ ই আগস্টের পর সেঠি তেমন বিস্তার ঘটেনি।

তারপরও দেশ প্রেমিক জনতা ও ব্যক্তি উদ্দ্যোগে এলাকা,গ্রাম,মহল্লা,শহর, উপ শহর ও মহানগরের বিভিন্ন স্হানে, বেসরকারি ভাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছেন শিক্ষা বিস্তারের জন্য।যার বাস্তব ফল হলো বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বর্তমানে শিক্ষা বৃদ্ধি ও শিক্ষার অধিকার বাস্তবায়ন।

বঙ্গবন্ধুর সরকারের পর বেসরকারি ভাবে গঁড়ে উঠা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সমূহ, সঠিক পরিকল্পনা মাফিক কোন অগ্রগতি সাধন করতে পারেনি বাংলাদেশের শাসকরা।যদিও বাংলাদেশের ৯৭ ভাগ শিক্ষা বিস্তারের ভূমিকা পালন করে আসছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও তার শিক্ষকগণ।দেখা গেছে দেশের অন্যান্য বিভাগ এগিয়ে গেলেও, সরকারি ভাবে পিছনে ফেলে রাখা হয়েছে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদেরকে।এর জন্য দায়ী অতীতের সরকার এবং ব্রিটিশ নিয়মের আমলাগণ।সকল পেশাজীবীর ভাগ্যের পরিবর্তন হলেও পরিবর্তন হয়নি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের!

২০০৮ সালের নির্বাচনের পর বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর, শিক্ষা বিভাগে ধারাবাহিক যে পরিবর্তন হচ্ছে তা অতুলনীয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অবকাঠামো, শিক্ষার্থীর জন্য সহযোগিতা ও শিক্ষার অগ্রগতি ধারাবাহিক চলমান।এভাবে থাকলে দ্রুত উন্নয়ন সম্ভব।

তবে বেসরকারি শিক্ষকদের যে উন্নতি প্রয়োজন সেঠি বাস্তবে প্রতিফলন হচ্ছেনা।বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের উন্নয়নের জন্য সরকার প্রধানের যথেষ্ট ইচ্ছা রয়েছে। শিক্ষা বিভাগের আমলতান্ত্রিক হৃদয় হীনতার জন্য বেসরকারি শিক্ষকদের পরিবর্তন আটক রয়েছে।শিক্ষা বিভাগের আমলাগণ যদি সরকার প্রধানের ইচ্ছার সাথে এগিয়ে দিতে পারতেন তাহলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সমস্যাগুলি সমাধান করতে পারতেন।

কলেজ শিক্ষকদের পদোন্নতিতে শিক্ষা বিভাগের আমলাগণ, অনুপাত প্রথা নামক একটি অযৌক্তিক আইন করে দীর্ঘ কাল রেখেছেন।যা কোন সভ্য আইন হিসেবে মেনে নেয়া যায়না।আশা রাখি এই অনুপাত প্রথা দ্রুত বাতিল করে একটি সুন্দর অবস্হানে আসবে।

২/ অযৌক্তিক অনুপাত প্রথায় পদোন্নতি পাবার পর, অবশিষ্ট কলেজ শিক্ষকগণ দশ বছরে ৮ম গ্রেডে, এক হাজার টাকা বেতন বৃদ্ধি আরেকটি অমানবিক আইন রয়েছে।যা কোন ভাবে মানবিক হতে পারেনা।আশা রাখি এই বিষয়টিও সরকার প্রধান সমাধান করবেন।
৩/ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিও নীতিমালায় অসংখ্য অসংগতি আইন করে হাজার হাজার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তিতে বাঁধাগ্রস্ত। এসব অযৌক্তিক আইন শিক্ষা বিভাগের আমলাগণ ইচ্ছা মতো করে করেছেন।এসব অসংগতির জন্য নীতিমালা হয়েছে বিতর্কিত।যা পরিবর্তন একান্ত প্রয়োজন।

৪/ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বোনাস ২৫%! যারা এসব আইন করছেন তারা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ১০০% ভাগ বোনাস নিচ্ছেন! অথচ দেশের অধিক জনগোষ্ঠীকে মানবসম্পদে রূপান্তরিত করার জন্য,বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা ৯৭% ভূমিকা পালন করছেন। তাদেরকে ২৫% বোনাস দেয়া পুরো অযৌক্তিক। দ্রুত শতভাগ বোনাসের ব্যবস্থা করা হলে তা হবে রাষ্ট্রের জন্য সুশাসনের সুষম বন্টন।

৫/ চিকিৎসা ভাতা পাঁচশত টাকা! বর্তমান সময়ে একজন ডাক্তারকে দেখাতে হলে ফি লাগে এক হাজার টাকা।এর জন্য বেসরকারি শিক্ষকদের জন্য রাষ্ট্রীয় ভাবে চিকিৎসার ব্যবস্থা করুণ নতুবা সম্মান জনক চিকিৎসা ভাতার ব্যবস্থা করুণ।
৬/ আবাসন ভাড়া বেশিকদের একহাজার টাকা।যারা এ আইন করেছেন তারা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে এ খাতে হাজার হাজার টাকা নিচ্ছেন।যা সংশোধন করা অতীব জরুরী।

এসব বিতর্কিত আইন শিক্ষা বিভাগের আমলাগণ করেন।এর দোষ বহন করতে হয় সরকারকে।বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এসব অসংগতি সমাধান করতে পারেন এবং করে যাচ্ছেন।শিক্ষা বিভাগের আমলাগণ সরকার প্রধানের কাছে সমস্যা সমাধানের জন্য এগিয়ে যাবার স্বদিচ্ছার অভাবে সেসব বিষয় সমাধান হচ্ছেনা।বঙ্গবন্ধুর কন্যা সমস্যা সৃষ্টি জন্য রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় নয়,তিনি রাষ্ট্রীয় সমস্যা সমস্যার সমাধানের জন্য দিন রাত কাজ করে যাচ্ছেন।

বেসরকারি শিক্ষক সমাজ মনে করে, বঙ্গবন্ধুর কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে, শিক্ষা বিভাগের আমলাগণ সমস্যা তুলে ধরবেন এবং তিনি সমস্যার সমাধান করবেন।তিনি যদি অবগত না হোন তাহলে সমস্যা অতীতের মতো যুগের পর যুগ থেকে যাবে।তাই শিক্ষাবান্ধব সরকারের উন্নয়নের গলারকাঁটা হিসেবে, শিক্ষা বিভাগের আমলাগণ প্রতীয়মান হয়।

লেখকঃ প্রভাষক মোহাম্মদ আলী শামীম
সমন্বয়ক,
পদোন্নতি বঞ্চিত প্রভাষক সমাজ,
কেন্দ্রীয় কমিটি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।