উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার সর্ব উত্তরের ১ নম্বর ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের পশ্চিমে দুর্গম পাহাড়ে ঘেরা জনপদের নাম সোনাই ত্রিপুরা পল্লী। সেখানকার ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী যুগ যুগ ধরে ছিল অবহেলিত।

তবে গত বছর অজ্ঞাত রোগে (পরে হাম হিসেবে চিহ্নিত) প্রার্দুভাবের একই পরিবারের তিনজনসহ ৪ শিশুর মৃত্যু এবং এক প্রসুতি মা, ৪ নারী ও ৮ মাস থেকে ১০ বছরের ২৪ শিশু অসুস্থ হওয়ার পর নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত এই ত্রিপুরা পল্লীতে উপজেলা প্রশাসন, সমাজপতি ও গণমাধ্যমের নজরে এসেছিল। এরপর থেকে ওই পল্লীতে পৌঁছতে শুরু করে নানা সুযোগ-সুবিধা।

এরই ধারাবাহিকতায় শনিবার দুর্গম পাহাড়ি ওই ত্রিপুরা পল্লীর ঘরে ঘরে গিয়ে ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাবৃত্তি’র টাকা পৌঁছে দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহাম্মদ রুহুল আমীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়া তালুকদার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদ, উপজেলা পল্লী জীবিকায়ন কর্মকর্তা গোলাম হোসেন, প্যানেল চেয়ারম্যান ও ইউপি সদস্য আলী আকবরসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ।

সকাল ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ইউএনও সোনাই ত্রিপুরা পল্লীর প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়ে ৬৩ জন শিক্ষার্থীর হাতে বৃত্তির টাকা তুলে দেন। এর আগে সোনাই ত্রিপুর পল্লীতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের তালিকা করা হয়েছিল।

শিক্ষাবৃত্তি দেওয়ার জন্য ত্রিপুরা পাড়ায় কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন ছিল না এমনটা জানিয়ে এ ব্যাপারে ইউএনও রুহুল আমীন এ প্রতিবেদককে জানান, পাহাড়ে ঘেরা দুর্গম সোনাই ত্রিপুরা পল্লীতে পাহাড়ের পাদদেশে ঘেষে ৫২ পরিবারের ৪ শতাধিক ক্ষুদ্র এ জনগোষ্টির বসবাস। এসব পরিবারের ৬৩ শিক্ষার্থীকে মোট ৫ লাখ টাকা ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিকের ৪০ জন, মাধ্যমিকের ২০ জন ও উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থী ৩ জন।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিকে পড়ুয়া একেকজন শিক্ষার্থী পেয়েছে মাসে ২০০ টাকা করে ২৩ মাসের জন্য এককালীন ৪ হাজার ৬০০ টাকা। মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা পেয়েছে মাসে ৫০০ টাকা করে দুই বছরের জন্য এককালীন ১২ হাজার টাকা করে। আর উচ্চ মাধ্যমিকের একেক জন শিক্ষার্থী মাসে ৮০০ টাকা করে দুই বছরের জন্য এককালীন ১৯ হাজার ২০০ টাকা করে পেয়েছেন।

সোনাই ত্রিপুরা পল্লীর সর্দার তাকিধন ত্রিপুরা জানান, ত্রিপুরা পাড়ায় নাগরিক সুযোগ-সুবিধা তেমন ছিল না। উপজেলা সদরে পৌঁছানোর জন্য একটি ভালো সড়কও এতদিন ছিল না। কিছু দিন আগে ইউএনও রুহুল আমীন স্যার স্থানীয়ভাবে একটি সড়ক তৈরি করে দিয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।