ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের উপ-সহকারী প্রকৌশলী সমরজিত ঘরামীসহ ৩ জন অফিস সহকারীকে পিটিয়ে আহত ও ভাংচুর করেছে আওয়ামী লীগ নেতারা। খবর পেয়ে ভাঙ্গা থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ সেখান থেকে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী জাফরউল্লাহর রাজনৈতিক সচিব ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এনামুল হক অপুকে আটক করে। মারামারির ঘটনায় আরো আহত হয় অফিস সহকারী সেক মো. সেলিমুজ্জামান, মো. সাঈদুল ইসলাম ও বলাই চন্দ্র দাস।

আজ রবিবার (১৯ মে) সকালে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় জনতা ও উপজেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তারা সমরজিত ঘরামীকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা হাসপাতালে চিকিৎসা দেন।

উক্ত ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সমরজিত ঘরামী বাদী হয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা ও এনামুল হক অপুকে আসামি করে ভাঙ্গা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। ঘটনার পর থেকেই উপজেলা প্রশাসনের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ চলছে, একইসঙ্গে প্রতিটি দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনার বিচারের দাবি জানিয়েছেন।

থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কাজী সাঈদুর রহমান বলেন, সকালে আওয়ামী লীগের দুই নেতার সঙ্গে কথা কাটাকাটি এবং মারপিটের খবর আমাদের কাছে আসলে আমরা দ্রুত পুলিশ পাঠাই। এবং এলাকার পরিস্থিতি শান্ত করাসহ একজনকে আটক করি। থানায় মামলা হয়েছে, পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্ব) হিমাদ্রী খীসা বলেন, সরকারি একজন কর্মকর্তা তার দায়িত্ব পালনে কোন অবহেলা থাকলে তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিকট লিখিত অভিযোগ দিবে। কিন্তু একজন সরকারি কর্মকর্তাসহ কর্মচারীদের এভাবে প্রকাশ্যে মারপিট কোনোভাবেই কাম্য নয়। ইতোমধ্যে মামলা হয়েছে এবং একজন আটক আছে। আমি আশা করব পুলিশ দ্রুত সময়ের মধ্যে বাকী আসামিকেও আটক করবে। তাছাড়া বিষয়টি নিয়ে আমরা উপর মহলের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেব।

এ ব্যাপারে উপ-সহকারী প্রকৌশলী সমরজিত ঘরামী বলেন, আজ সকালে আমি ও আমার সহকারীরা অফিস খুলতেই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা ও সাবেক উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান এনামুল হক অপু অফিস কক্ষে প্রবেশ করে। এ সময় তারা আমার কাছে ৫টি আর্সেনিকমুক্ত টিউবয়েল দাবি করেন। আমি আইন বর্হিভূত কোন কাজ করতে পারবনা বলতেই তারা আমার ওপর চড়াও হয়।

আমি তাদেরকে বোঝাতে চেষ্টা করলে তারা আমাকে মারতে মারতে অফিস কক্ষের ভেতরে তালা দিতে যায়। এ সময় আমার অফিস সহকারীরা বাধা দিলে তাদেরকেও মারধর করে। তাদের মারধরের কারণে আমার মোবাইল ফোনসহ বেশ কয়েকটি দামি জিনিস নষ্ট হয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে উপজেলা প্রশাসনের অন্যান্যরা এগিয়ে আসলে তারা চলে যায়।

এ ব্যাপারে আওয়ামী লীগের কোনো নেতাই সংবাদকর্মীদের কাছে কোনো ধরনের বক্তব্য দিতে রাজি হননি। ঘটনার পর থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আকরামুজ্জামান রাজা এলাকা ত্যাগ করেছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।