জিকরুল হক, উত্তরবঙ্গ  সংবাদদাতা;  নীলফামারীর  সৈয়দপুর উপজেলার বোতলাগাড়ি ইউনিয়নে সোনাখুলী মুন্সিপাড়া কামিল মাদরাসায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ছাত্রাবাস, অফিস কক্ষসহ ১৬টি কক্ষ পুড়ে গেছে। এসময় আগুনের লেলিহান শিখায় মূহুর্তেই ছাত্রাবাসের আসবাবপত্র, মাদরাসার অফিস কক্ষসহ রেকর্ড রুমে প্রয়োজনীয় মূল্যবান কাগজপত্র পুড়ে ছাই হয়েছে। এতে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ওই মাদ্রাসায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় বিকেলে সৈয়দপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাসিম আহমেদসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

জানা যায়, সারাদেশের মত ওই মাদরাসা করোনা পরিস্থিতিতে ছুটি ঘোষণা করা হয়। এসময় ছাত্রাবাসের সকল শিক্ষার্থী নিজ নিজ বাসায় চলে যায়। ফলে ছাত্রাবাসটি তখন থেকেই ফাঁকা ছিল। বন্ধ থাকা মাদ্রাসার ছাত্রাবাসে আগুন জ্বলতে দেখে নৈশপ্রহরী মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আহম্মদ আলী সরকারকে আগুন লাগার বিষয়টি মুঠোফোনে জানান। সাথে সাথে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিসকে আগুন লাগার ঘটনাটি জানান। কিন্তু ততক্ষণে আগুনের তীব্রতা বেড়ে মাদরাসার ছাত্রাবাসের ১৫ টি কক্ষে ছড়িয়ে পড়ে। এসময় ছাত্রাবাস ঘেষা অফিস কক্ষের রেকর্ড রুমেও আগুন হানা দেয়। ফলে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যে সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের কর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে এসে প্রায় দেড় ঘন্টার চেস্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। কিন্তু তার আগেই রেকর্ড রুমে থাকা মাদরাসাটির কামিল (মাস্টার্স) শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় গুরুত্বপূর্ণ সার্টিফিকেট, প্রতিষ্ঠানের মূল্যবান কাগজপত্রসহ অন্যান্য মালামাল, ছাত্রাবাসে থাকা শিক্ষার্থীদের বই খাতা, কাপড় চোপড় ও আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এতে প্রায় ২৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে।

নৈশপ্রহরী আবুল কালাম জানান, ছাত্রাবাসে আগুনের দৃশ্য দেখেই অধ্যক্ষ স্যারকে জানিয়েছি। ওই এলাকার অনেকেই জানান মাদরাসায় আগুন লাগায় ফায়ার সার্ভিসে খবর দেয়া হয়।

প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আহম্মদ আলী সরকার জানান, আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হয়। পরে তিনি মাদরাসায় ছুটে আসেন। তিনি বলেন ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। তিনি বলেন অফিস কক্ষের রেকর্ড রুমে থাকা শিক্ষার্থীসহ মাদরাসার প্রয়োজনীয় অতি মূল্যবান কাগজপত্র পুড়ে যাওয়ায় প্রতিষ্ঠানের মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। সার্টিফিকেটসহ প্রয়োজনীয় কাগজ সংগ্রহ করা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। অগ্নিকান্ডের কারণ সম্পর্কে জানতে সৈয়দপুর ফায়ার সার্ভিসের ল্যান্ডফোনে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও সংযোগ না মেলায় তাদের কোন মন্তব্য জানা যায়নি।

এদিকে অগ্নিকান্ডের সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও মাদরাসা কমিটির সভাপতি মো. নাসিম আহমেদ।

এ সময় সঙ্গে ছিলেন উপজেলা নির্বাচন অফিসার রবিউল ইসলাম, বোতলাগাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান আল-হেলাল চৌধুরী। এসময় তিনি ক্ষতিগ্রস্থ অফিসের রেকর্ড রুমসহ ছাত্রাবাসের প্রতিটি কক্ষ ঘুরে দেখেন। মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য শিক্ষক ও কর্মচারিদের সাথে কথা বলে ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানেন।

এসময় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে তিনি বলেন বিষয়টি নীলফামারী জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। আগুন লাগার কারণ উদঘাটনসহ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণে টেকনিক্যাল কমিটি গঠন করা হবে।

আমাদের বাণী ডট কম/০৯  জুলাই  ২০২০/পিপিএম 

সৈয়দপুরের বিজ্ঞাপন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।