রেলভূমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে সৈয়দপুরে দীর্ঘ প্রায় এক মাস ধরে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ প্রচারণা চালাচ্ছে। কিন্তু ভূমিখেকোরা তা আমলেই নিচ্ছেনা। বরঞ্চ প্রতিনিয়িত শহরের নানাস্থানে অহরহ গড়ে তোলা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা। ইতোমধ্যে শহরের একটি পুরো রেলকলোনীকে মার্কেট বানানো হয়েছে। এটি ঘটেছে শহিদ মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মজিদ সড়কস্থ রেল কলোনীতে। এই এলাকার রেল কোয়াটার ভেঙ্গে পুরোদমে দোকান নির্মাণ করা হয়েছে। সহসা বোঝাই যাবে না এক সময় এটি একটি রেল শ্রমিকদের কলোনী ছিল। রাতারাতি সেখানে বসতির কলোনী বাজারে রুপ নিয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, কতিপয় রেলওয়ের অসাধু কর্মকর্তা ও সরকার দলীয় প্রভাবশালী কিছু রাজনৈতিক নেতার মদদে এসব কর্মকান্ড ঘটেছে। ওইসব নেতারা এমন প্রভাবশালী তাদের বিরুদ্ধে কেউ রা শব্দ উচ্চারণ করার সাহস পান না। ওই কলোনীতে রাতারাতি শতাধিক দোকান ঘর নির্মাণ করা হয়। এসব দোকানের প্রতি বর্গফুট জায়গা ৫ থেকে ৬ লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দখলবাজরা রাতরাতি বটগাছে পরিণত হয়েছে।

এদিকে পাড়া মহল্লায় বাংলোর জায়গাও দখলবাজদের হাত থেকে রেহাই মিলছে না। শহরের গার্ডপাড়ার রেল হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকায় রেলওয়ে হাসপাতালের প্রধান সহকারী সেগুপ্তা বাহার শবনাম বাংলোর প্রায় পাঁচ হাজার বর্গফুট আয়তনের জায়গা দখল করে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ বিষয়ে তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন এটি আমার ছেলের নামে রয়েছে, যা রেলওয়ের ভূ-সম্পদ বিভাগ থেকে বরাদ্দ নেয়া হয়েছে। তবে এ সংক্রান্ত তিনি কোন কাগজপত্র দেখাতে রাজি হননি।

অপরদিকে সরকার দলীয় নেতাদের সঙ্গে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি নেতারাও দখলে পিছিয়ে নেই। গার্ডপাড়া এলাকার বিএনপি নেতা মো. শাহিনের দখলে রয়েছে একাধিক রেল কোয়াটার। ইতোমধ্যে তার দখলকৃত রেল কোয়াটারগুলো বিক্রি করতে শুরু করেছে। দখলে থাকা শহিদ জিয়া স্কুলের প্রধান ফটক সংলগ্ন জহুরুল হক সড়কের দুটি কোয়াটার বিএনপি নেতা শাহিন ১২ লাখ টাকায় বিক্রি করেছে। আর এ দুটি কোয়াটার কিনেছেন শহরের বিচালিপট্টি সড়কের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী আলহাজ্ব জামাল উদ্দিন। কোয়াটার ভেঙ্গে এ ব্যবসায়ী সেখানে গোডাউনঘর তৈরী করেছেন। তবে ওই ব্যবসায়ী বিএনপি নেতা শাহিনের কাছে কোয়াটার কেনার সত্যতা নিশ্চিত করেন এবং বলেন আমি এই জায়গা রেলওয়ের কাছ থেকে বরাদ্দও নিয়েছি। কত বর্গফুট বরাদ্দ নিয়েছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, ৭.৫০ বর্গফুট আয়তন। কিন্তু প্রায় চার হাজার বর্গফুট জায়গা আপনার দখলে আছে এমন প্রশ্ন করা হলে ওই ব্যবসায়ী বলেন এমন অনিয়ম অন্যরা করেছে, আমিও করেছি। অবশ্য রেল কোয়াটার বিক্রেতা বিএনপি নেতা শাহিন তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ওই জায়গা আমি না আমার বড় ভাই রেয়াজ বাবু বিক্রি করেছেন।

রেলওয়ের কোয়াটার ও জায়গা দখল হয়ে যাওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে সৈয়দপুর রেলওয়ের পূর্ত বিভাগের উর্ধ্বতন উপ-সকারী প্রকৌশলী মো. তৌহিদুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান এ বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দখলবাজদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।