আসুন ধর্ষণের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলি 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে এক মাদরাসাছাত্রীকে গত শুক্রবার রাতে ধর্ষণের পর হাত-পা ও মুখ বেঁধে নালায় ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। শনিবার সকালে মাঠে কাজ করতে যাওয়া স্থানীয় কৃষকরা তাকে উদ্ধার করে। একই রাতে হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রীকে মুখ বেঁধে ধর্ষণ করেছে এক বখাটে কিশোর। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে শিশুটির অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। আগের দিন বৃহস্পতিবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ছয় বছরের এক শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। শেরপুরে তিন স্কুলছাত্রী ধর্ষণের শিকার হয়েছে। এসব ঘটনাসহ ৯ জেলায় ১২টি ধর্ষণের ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। এসব ঘটনায় স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের দুই সদস্যসহ অন্তত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, চলতি মাসের প্রথম আট দিনে সারা দেশে ৪১টি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে জানিয়েছে মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি সংস্থা। গত ১ থেকে ৮ মে পর্যন্ত ছয়টি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত সংবাদ বিশ্লেষণ করে গত বৃহস্পতিবার এ তথ্য দিয়েছে সংস্থাটি। ধর্ষণের ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে জানিয়ে সংস্থাটি উদ্বেগও প্রকাশ করেছে।

মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের পর হাত-পা বেঁধে নালায়

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ধর্ষণের শিকার ১৫ বছরের ওই কিশোরীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য জেলার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

মেয়েটির বাবা জানান, শুক্রবার রাতে বাড়ির পাশ থেকে তাঁর মেয়েকে তুলে নিয়ে যায় দুই যুবক। তাদের একজনকে সে চিনতে পেরেছে। তিনি বলেন, তাঁর মেয়ে দাখিল মাদরাসার দশম শ্রেণির ছাত্রী। রাত ৯টার দিকে পাশের বাড়ি থেকে মোবাইল ফোনের চার্জার আনতে যায় সে। বাড়ি ফেরার পথে ওত পেতে থাকা দুই যুবক তাকে তুলে নিয়ে যায়। রাতভর ধর্ষণের পর তাকে হাত-পা ও মুখ বেঁধে মাঠে সেচ নালায় ফেলে যায় তারা। রাতে তাঁরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেও মেয়েকে পাননি। গতকাল সকালে কয়েকজন কৃষক মাঠে কাজ করতে গিয়ে মেয়েকে পড়ে থাকতে দেখে।

কিশোরীর বাবা বলেন, তাঁর মেয়ে দুই যুবকের মধ্যে যাকে চিনতে পেরেছে সে হলো আল-আমিন। ঘটনার পর থেকে সে পলাতক।

কালীগঞ্জ থানার ওসি ইউনুচ আলী বলেন, আল-আমিনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে পুলিশ।

ধর্ষণের শিকার স্কুলছাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক

হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলায় শুক্রবার রাতে ধর্ষণের শিকার প্রথম শ্রেণির ছাত্রীকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছেন, মেয়েটির রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছিল না।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গ্রামের মৃত আরজত আলীর ছেলে বখাটে জাহাঙ্গীর মিয়া মেয়েটিকে মুখে গামছা পেঁচিয়ে তুলে নিয়ে যায়। এরপর বাড়ির পাশের নির্জন স্থানে নিয়ে ধর্ষণের পর ফেলে রেখে চলে যায়। পরে রক্তক্ষণ হতে দেখে শিশুটিকে রাত ১২টার দিকে হবিগঞ্জ আধুনিক জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।

হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মেহেদী হাসান বলেন, মেয়েটির রক্তক্ষরণ বন্ধ হচ্ছিল না। অবস্থা খারাপ দেখে তাকে সিলেটে পাঠানো হয়।

বানিয়াচং থানার ওসি রাশেদ মোবারক বলেন, ‘ঘটনাটি আমাদের মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। দোষী ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’

তিন শিশু ধর্ষণের অভিযোগ, গ্রেপ্তার ২

শেরপুরের নকলায় প্রথম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অন্যদিকে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে জাহাঙ্গীর আলম (২৪) নামের আরেক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত জাহাঙ্গীর আলম (২৪) রুনিগাঁও এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে। গ্রেপ্তারকৃতদের গতকাল জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তিন শিশুকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য শেরপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। চিকিৎসা শেষে আদালতে তাদের জবানবন্দি রেকর্ড করা হবে বলে জানিয়েছেন নকলা থানার ওসি কাজী শাহনেওয়াজ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ১৪ বছর বয়সী কিশোরটি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে প্রতিবেশী দুই শিশুকে লিচু দেওয়ার কথা বলে বাগানে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। শুক্রবার মামলা হওয়ার পর কিশোরকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২৬ এপ্রিল ১৩ বছর বয়সী স্কুলছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে রাস্তা থেকে অপহরণ করে জাহাঙ্গীর আলম। তাকে রাজধানী ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন ওই স্কুলছাত্রীর বাবা। এ ঘটনায় জাহাঙ্গীর আলমসহ পাঁচজনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। নকলা থানার পুলিশ শুক্রবার রাতে গাজীপুরের হোতাপাড়া এলাকা থেকে জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেপ্তার এবং স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে।

ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণ, যুবক গ্রেপ্তার

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় ছয় বছরের শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে মিল্টন ফকির (২৫) নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল ভোরের দিকে ঢাকার গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত বৃহস্পতিবার প্রতিবেশী মিল্টন ফকির শিশুটিকে ফুঁসলিয়ে তাদের নির্মাণাধীন বাড়ির একটি ঘরে নিয়ে ধর্ষণ করে। আহত শিশুটি গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। টুঙ্গিপাড়া থানায় এ ব্যাপারে একটি মামলা হয়েছে।

টুঙ্গিপাড়া থানার ওসি এ কে এম এনামুল হক জানিয়েছেন, অভিযুক্ত মিল্টন ফকিরকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

স্বামীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গৃহবধূকে দলবদ্ধ ধর্ষণ

কুমিল্লার দেবীদ্বারে অটোরিকশা থামিয়ে স্বামীর কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে এক গৃহবধূকে রাতভর দলবদ্ধভাবে ধর্ষণের অভিযোগে গত শুক্রবার স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলো উপজেলার ভানী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সূর্য্যপুর গ্রামের মৃত সামসুল হকের ছেলে নবীরুল (৩৯) ও মুরাদনগর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের বাবুল খানের ছেলে শহিদ খান পাখী (৩২)। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে ধর্ষণের দায় স্বীকার করেছে। বিচারক রোকেয়া বেগম জবানবন্দি নথিভুক্ত করে তাদের জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দেন।

জানা গেছে, গত ১৮ জানুয়ারি ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটলেও আসামিদের হুমকির কারণে ভুক্তভোগী নারী ও তাঁর স্বামী মামলা করতে সাহস পাননি। অবশেষে গত শুক্রবার দুপুরে স্বামীসহ ওই নারী দেবীদ্বার থানায় এসে আটজনকে আসামি করে মামলা করেন। বাকি আসামিদের মধ্যে আছে দেবীদ্বারের সূর্যপুর গ্রামের আব্দুল হাকিমের ছেলে আকাশ (৩০), সিরাজুল ইসলামের ছেলে আলিম (২৮), আব্দুল মালেক ওরফে মালু মিয়ার ছেলে মোস্তফা, পাশের মুরাদনগর উপজেলার পাহাড়পুর গ্রামের সুলতান আহাম্মদ খন্দকারের ছেলে শামীম খন্দকার (২৮)। বাকি দুজনের পরিচয় মামলায় উল্লেখ করা হয়নি।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানায়, ঘটনার দিন বিকেলে ওই গৃহবধূ তাঁর স্বামীর সঙ্গে মুরাদপুরের শ্বশুরবাড়ি থেকে কুমিল্লা শহরের ছোটরার বাসায় যাওয়ার সময় সূর্যপুর বাজারে আসামিরা তাঁদের আটক করে। তাঁরা অবিবাহিত বলে সাব্যস্ত করে ২০ হাজার টাকা চাঁদা চায় তারা। একপর্যায়ে গৃহবধূকে স্বামীর কাছ থেকে আলাদা করে কুমিল্লা শহরে তাঁর বাবার বাসায় পাঠানোর কথা বলে আটকে রাখে। পরে আসামিরা সাহারপাড় গ্রামের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে তাঁকে রাতভর ধর্ষণ করে।

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে দুজন আটক

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে সপ্তম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে থানায় তিন যুবকের নামে মামলা হয়েছে। গতকাল দুপুরে ওই ছাত্রীর বাবা মামলাটি করেন। মামলার আসামিরা হলো কালীগঞ্জ উপজেলার বলিদাপাড়া গ্রামের বদর উদ্দীনের ছেলে খায়রুল ইসলাম (২২), একই গ্রামের মৃত রবিউল ইসলাম নবীর ছেলে গোলাম মোর্তুজা বাপ্পি (২৪) ও রবিউল ইসলামের ছেলে জাকারিয়া ওরফে টুটুল (২৩)। পুলিশ খায়রুল ও গোলাম মোর্তুজা বাপ্পিকে আটক করেছে। অন্যজন পালিয়ে গেছে।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত দুজনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। অন্যজনকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

বাউল শিল্পীকে ধর্ষণ, প্রধান আসামি মানিক আটক

বরগুনার বেতাগীতে এক কিশোরী বাউল শিল্পী ধর্ষণের শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি মানিককে (৩৫) গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। গত শুক্রবার রাতে রাজধানীর মুগদা এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

র‌্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের সিনিয়র সহকারী পরিচালক এএসপি মিজানুর রহমান ভুঁইয়া বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

গত ২৭ এপ্রিল ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটে। গত ২ মে মানিকসহ দুজনকে আসামি করে বেতাগী থানায় মামলা করে ভুক্তভোগী কিশোরী।

জানা গেছে, ঘটনার দিন রাত ৮টার দিকে বাউল গানের আসরে যাওয়ার উদ্দেশে চাচা ও চাচাতো ভাইসহ বাকেরগঞ্জে যাচ্ছিল ওই কিশোরী। পথে মানিক ও আলমগীর নামে দুই ব্যক্তি তাদের আটকায়। একপর্যায় সঙ্গে থাকা তাঁর চাচা ও চাচাতো ভাইকে মারধর করে এবং তাকে অপহরণ করে পুটিয়াখালীর একটি কলাবাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে।

ধর্ষণে প্রতিবন্ধী তরুণী অন্তঃসত্ত্বা, ইউপি সদস্যসহ তিনজন গ্রেপ্তার

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে এক তরুণীকে (১৯) ধর্ষণের অভিযোগে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের এক সদস্যসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গত শুক্রবার মামলা করার পর তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলো উপজেলার গর্ন্ধব্যপুর দক্ষিণ ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের সদস্য অহিদুল ইসলাম (৬০), একই ওয়ার্ডের ডাটরা-শিবপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের ছেলে এমরান হোসেন (১৯) ও সিরাজুল ইসলামের ছেলে আরেফিন ওরফে আমিনুল (২০)। পলাতক আসামিরা হলো একই গ্রামের ইসমাইলের ছেলে রাব্বি (১৮), বিল্লাল হোসেনের ছেলে মেরাজ (২০) ও মৃত ছেরাজল হকের ছেলে মোস্তফা কামাল (৬৫)। তাদের মধ্যে অহিদুল ও মোস্তফা কামাল সালিসদার।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে চার আসামি মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। তিনি এখন ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে পুলিশ ও চিকিৎসকরা জানিয়েছে। ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ইউপি সদস্য অহিদুল ইসলাম ও স্থানীয় বাসিন্দা মোস্তফা কামাল গত কয়েক দিন ধরে চেষ্টা করছিলেন। একপর্যায়ে সালিসে বসে চার ধর্ষককে পাঁচ লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। সেই টাকা মেয়েটিকে দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সব টাকা মেয়েটিকে দেওয়া হয়নি। এ নিয়ে বিরোধের জের ধরে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানি হয়। এরপর চার ধর্ষকের মধ্যে একজনের সঙ্গে মেয়েটির বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সালিসদাররা। কিন্তু পুলিশ ঘটনা জানার পর গত শুক্রবার মেয়েটিকে উদ্ধার করে পরীক্ষার জন্য চাঁদপুর সদর হাসপাতালে পাঠায়। হাজীগঞ্জ থানার ওসি আলমগীর হোসেন ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন।

বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

রাজবাড়ীতে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী (২২) তরুণীকে ধর্ষণ এবং ধর্ষণের ফলে আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই অভিযোগে দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামি সদর উপজেলার মুকুনদিয়া গ্রামের রওশন মীরের ছেলে মিন্টু মীরকে (২৮) গত শুক্রবার রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। এর আগে গত বৃহস্পতিবার সকালে ওই নারীর বোন বাদী হয়ে রাজবাড়ী থানায় মিন্টু মীর ও তার সহযোগী একই গ্রামের শাজাহান মীরের স্ত্রী বিউটি বেগমকে আসামি করে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলার বাদী জানান, আট মাস আগে এক দিন বিকেলে তাঁর বোন আসামি বিউটির বাড়ির সামনে দিয়ে যাচ্ছিলেন। ওই সময় বিউটি তাঁকে ডেকে বাড়ি নিয়ে যায় এবং তার চাচাতো দেবর মিন্টুকে মোবাইল ফোনে ডেকে আনে। পরে বিউটির সহযোগিতায় মিন্টু তাঁর বোনকে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি কাউকে বললে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা রাজবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এনছের আলী বলেন, মিন্টুকে গতকাল আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, বিক্ষোভ

গৃহকর্মীকে (১৯) ধর্ষণের অভিযোগে জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মাজেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে মেয়েটি বাদী হয়ে মামলাটি করেন। শুক্রবার রাতে মেয়েটি একটি মৃত কন্যাসন্তান প্রসবের পর ধর্ষণের ঘটনাটি জানাজানি হয়। ওই দিন রাতে বিক্ষুব্ধ গ্রামবাসী ওই শিক্ষা কর্মকর্তার বাড়ি ঘেরাও করে বিচার দাবি করে। অভিযুক্ত মাজেদুল ইসলাম গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন।

গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, মেলান্দহ উপজেলায় কর্মরত মাজেদুল ইসলামের বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের রঘুনাথপুর গ্রামে। তিনি স্থানীয় মো. মোতালেব হোসেনের ছেলে। তাঁর স্ত্রী স্থানীয় শ্রীরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। শিক্ষা কর্মকর্তা মাজেদুল ইসলাম গত বছরের সেপ্টেম্বরে গৃহকর্মী নিয়োগ করেন। মেয়েটি অভিযোগ করে বলেন, মাজেদুল তাঁর অফিস ছুটি থাকায় এবং তাঁর স্ত্রী ওই দিন স্কুলে থাকায় একাধিক শনিবারে তাঁকে ধর্ষণ করেছেন। ফলে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। পরে মাজেদুল নিজের টাকা খরচ করে কৌশলে গত ৮ মার্চ তাঁকে এক দরিদ্র যুবকের সঙ্গে বিয়ে দেন। বিয়ে দেওয়ার দুই মাসের মধ্যে গত শুক্রবার একটি মৃত কন্যাসন্তান প্রসব করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘মৃত কন্যাশিশুটির ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। শিশুটির পিতৃত্বের পরিচয় উদ্ঘাটনের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা করাতে হবে। এ জন্য শিশুটির শরীরের বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করা হয়েছে।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।