নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা; দিন দিন বাড়ছে প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। এ নিয়ে সারা বিশ্বের মানুষই এখন উদ্বিগ্ন। কোনোভাবেই আটকানো যাচ্ছে না মৃত্যুর মিছিল। প্রাণঘাতী এই ভাইরাস ইতোমধ্যেই হানা দিয়েছে বাংলাদেশে। করোনায় আক্রান্ত হয়ে দেশে মারা গেছেন দু’জন। আর আক্রান্ত হয়েছেন ২৭ জন। এছাড়াও করোনার উপসর্গে নিয়ে খুলনায় দুজন, সিলেটে লন্ডন ফেরত নারী ও কিশোরগঞ্জে ইতালি ফেরত এক প্রবাসীর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে স্থানীয় সুত্রে।

এমন পরিস্থিতিতে দেশ ও জাতীর উদ্দেশ্যে সরকারের পাশাপাশি নানা সচেতনতামূলক বার্তা দিচ্ছেন শোবিজ অঙ্গনের তারকারাও। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে প্রচার করা হচ্ছে অসংখ্য সচেতনবার্তা।

জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী তার ফেসবুকে লিখেছেন- ‘আমেরিকার আর্মি নাকি চিন্তা করছে নিউইয়র্ক সিটির হোটেলগুলাকে হাসপাতালে পরিণত করার। যত হাসপাতাল আছে সব রোগীতে ভরে যাচ্ছে। তাই তাদের এই ভাবনা।

আর আমরা হাসপাতাল থাকার পরও কাজে লাগাবো না? এই তিনদিনে কতগুলা মন ভেঙে দেয়ার ঘটনা যে শুনেছি। জ্বর হয়েছে, কোনো প্রাইভেট হাসপাতাল নিচ্ছে না। কাশি হয়েছে, নিচ্ছে না।

ডায়রিয়া হয়েছে, নিচ্ছে না। আজকে শুনলাম কিডনির রোগীর ডায়লাইসিস করাবে, ইউনাইটেড হাসপাতাল করবে না। কারণ রোগী কিছুদিন আগে ইন্ডিয়া থেকে এসেছে। হচ্ছেটা কী দেশে? মানুষ কী বিনা চিকিৎসায় মারা যাবে?’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘কেন প্রাইভেট হাসপাতালগুলাকে করোনা চিকিৎসা করার জন্য প্রস্তুত করা হবে না? নির্ধারিত সরকারি হাসপাতাল কয়জনের চিকিৎসা দিতে পারবে? করোনা ছাড়াও মানুষের জ্বর, শ্বাসকষ্ট হতে পারে।

তাদের কি চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার নাই? করোনা রোগীরও কী চিকিৎসা পাওয়ার অধিকার নাই? সরকারে থাকা বন্ধুরা, আপনারা কী দয়া করে এই জিনিসগুলা অ্যাড্রেস করতে পারেন?

নিশ্চিত করতে পারেন মানুষ যে কোনো রোগ নিয়ে যে কোনো হাসপাতালে গেলেই চিকিৎসা পাবে। তার জন্য যা যা করা দরকার, পিপিই-ট্রেনিং যা লাগে দ্রুত করান। দরকার লাগে হাই পাওয়ার টাস্কফোর্স করেন টপ ডাক্তার আর সশস্ত্র বাহিনীর লোকজন দিয়ে।’

সবশেষে ফারুকী লিখেছেন, ‘স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপর আর ভরসা কইরেন না এই বেলা। দুই মাস সময় পাইয়াও তারা যে নিদারুণ অযোগ্যতা আর অবহেলার পরিচয় দিছে, তার জন্য তাদেরকে ইতিহাসের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।’

রাজধানীর ডেল্টা মেডিকেল কলেজে ও হাসপাতালে একজন চিকিৎসক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। গতকাল রবিবার (২২ মার্চ ২০২০) তার শরীরে করোনার অস্তিত্ব ধরা পড়ে। তিনি মিরপুরের টোলারবাগের এক করোনা (কোভিড-১৯) আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা করেছিলেন। হাসপাতালের ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার হিসেবে কাজ করছেন ৩০ বছর বয়সী ওই চিকিৎসক।  বাংলাদেশ ডক্টর’স ফাউন্ডেশনের প্রধান প্রশাসক ডা. নিরুপম দাস সংবাদমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

উল্লেখ্য, দেশে নতুন করে আরও ৩ জন করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে একজন নারী ও দুইজন পুরুষ। গতকাল রবিবার (২২ মার্চ ২০২০) বিকালে করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা। এ নিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৭ জনে। তবে এদের মধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৫ জন।

আমাদের বাণী ডট কম/২৩ মার্চ ২০২০/টিএ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।