শ্রীনগরে ১১ বছরের এক মাদরাসা ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নং-৫ (৮) ১৯। উপজেলার বালাশুর বউ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষক মো. ইমন ওই এলাকার সামাদ শেখের ছেলে।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা, বাবা বলেন, গত তিন মাস পূর্বে একই এলাকার সামাদ শেখের ছেলে শ্রীনগর সরকারি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মো. ইমন শেখ (২২) আমার ১১ বছরের মেয়েকে কৌশলে একাধিকবার জোরপ পূর্বক ধর্ষণ করে। ঘটনার মাস খানেক পরে হঠাৎ মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে আমাদের সব খুলে বলে।

স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে মেয়ের প্রাথমিক পরীক্ষা করানোর পরে জানতে পারি সে প্রায় তিন মাসের গর্ভবতী হয়ে পড়েছে। মান-সম্মানের ভয়ে প্রথমে ইমনের পরিবারকে বিষয়টি জানাই। এ ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার লক্ষ্যে বালশুর বাজারের ব্যবসায়ী হাসু মোল্লা ও আলমগীর মোল্লা আমাদেরকে সঠিক বিচারের আশ্বাস দেন এবং দশ হাজার টাকা দিয়ে দিয়ে গর্ভপাত করানোর জন্য পরামর্শ দেন। এর পরে ঢাকার একটি হাসপাতাল থেকে মেয়ের গর্ভপাত শেষে প্রায় ২০ দিন অতিবাহিত হলেও সমঝোতার ব্যাপারে হাসু মোল্লা ও আলমগীর মোল্লা কালক্ষেপন করতে থাকে।

তারা আরো বলেন, পরে স্থানীয় মেম্বার হারুন বেপারীকে ঘটনাটির বিস্তারিত জানাই। অন্যদিকে ইমনের বাবা সামাদ শেখ হাসু মোল্লার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার হওয়ায় হাসু মোল্লার সহযোগিতায় ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করছিল। উপায় না পেয়ে থানায় মামলা করতে বাধ্য হয়েছি। এ ঘটনায় ধর্ষকের শাস্তি দাবি করেন তারা।

ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী জানায়, একই বাড়ির ইমনদের ঘরে মোবাইল চার্জের জন্য গেলে ফাঁকা বাড়িতে তিন মাস আগে ইমন আমাকে প্রথম জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনার বিষয়ে মুখ খুললে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তার ৬-৭ দিন পরে ইমন আমাকে তার রুমে নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক পুনরায় একই কাজ করে। অসুস্থ হয়ে পড়লে মায়ের কাছে এ ঘটনার বিষয়ে খুলে বলি। এ সময় ধর্ষক ইমনের বিচারের দাবিও করে ওই ছাত্রী।

সাবেক বিএনপি নেতা ও রাঢ়ীখাল ইউনিয়নের বর্তমান আওয়ামী লীগ নেতা হাসু মোল্লার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সামাদ শেখের মাধ্যমে আমি ঘটনা শুনেছি। তবে তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সত্য নয়। আলমগীর মোল্লার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাদের বিচার শালিস করে দেয়ার কোনও আশ্বাষ দেইনি। তিনিও তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বীকার করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য হারুন বেপারী বলেন, ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর মা বাবা আমাকে বিস্তারিত জানালে আমি তাদেরকে এ ঘটনায় আইনী ব্যবস্থা নেয়ার পরামর্শ দেই।

শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইউনুচ আলীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। ভিক্টিমকে ডাক্তারি পরীক্ষা করানো হয়েছে। আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।