সবমিলিয়ে পাঁচ সন্তানের বাবা-মা তারা। তারা হলেন পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার কাউখালী গ্রামের বাসিন্দা অসহায় শুকুর দেওয়ান (৭০) ও সহুরা বেগম (৬৫)। এক সময় তাদের বাড়িঘর, জমিজমা, হাস-মুরগি, গরু-ছাগলের খামার এ সবই ছিল। কিন্তু ছেলেমেয়েরা দেখভাল না করায় আজ তাদের ঠাঁই হয়েছে পাশের বাড়ির গোয়ালঘরে।

শুকুর দেওয়ান ছিলেন গ্রামের স্বচ্ছল কৃষক। তার নিজের বাড়ি, চাষবাসের উপযোগী জমি, প্রচুর হাস-মুরগি আর গরু-ছাগলের খামার ছিল। বিয়ের পর তাদের সংসারে একে একে চার মেয়ে ও এক ছেলের জন্ম হয়। বড় হওয়ার পর চার মেয়ে মর্জিনা, রোকেয়া, খোদেজা ও সালমাকে ভালো ঘর দেখে বিয়ে দেন। একমাত্র ছেলে হোসেন দেওয়ানকেও (৩০) বিয়ে করান। একমাত্র ছেলে ও পুত্রবধূকে নিয়ে ভালোই চলছিল শুকুর দেওয়ানের চারজনের সংসার।

কিছুদিন আগে বার্ধক্যজনিত কারণে অসুস্থ হন শুকুর দেওয়ান। তখন চিকিৎসার কথা বলে তাকে পাশের গলাচিপা উপজেলায় নিয়ে যান একমাত্র ছেলে হোসেন দেওয়ান। সেখানে গিয়ে চিকিৎসার বদলে বাবার সব সম্পাতি নিজের নামে দলিল করে নেন তার ছেলে।

পরে জালিয়াতি করে নিজের নামে লিখে নেয়া বাবার সমস্ত সম্পত্তি চাচা তাজু দেওয়ানের কাছে বিক্রি করে দেন। এরপর গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান ছেলে হোসেন দেওয়ান। কিছুদিন পর জমির দখল নেন শুকুর দেওয়ানের ভাই তাজু দেওয়ান। সে সময় তিনি বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন শুকুর দেওয়ান ও তার স্ত্রীকে। তখন ছেলের নামে সব জমি লিখে দেয়ায় বাবা-মাকে আশ্রয় দেননি চার মেয়ের এক মেয়েও। তখন বাধ্য হয়ে পাশের বাড়ির একটি গোয়ালঘরে আশ্রয় নেন অসহায় এই বৃদ্ধ দম্পতি। এরপর থেকে গোয়ালঘরেই দিন কাটছে দেওয়ান দম্পতির। প্রতিবেশীদের দেয়া খাবার খেয়েই কোনোমতে দিন কাটছে এই বৃদ্ধ দম্পতির।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।