ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা; গাজীপুর থেকে পঞ্চগড়ে মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করার জন্য ডেকে নিয়ে এক মডেলকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জেলার বোদা থানায় তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ১০-১২ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ওই মডেল।

গতকাল বুধবার রাতে পুলিশ মামলার প্রধান দুই আসামি উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবিদা সুলতানা লাকী ও প্রথম বাংলা আইপি টিভির চিফ নিউজ এডিটর সাজ্জাদ হোসেন মিলনকে গ্রেপ্তার করেছে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গাজীপুরের কালিয়াকৈর এলাকায় থাকতেন ধর্ষণের শিকার ওই মডেল। ইউটিউবের জন্য বিভিন্ন মিউজিক ভিডিওতে কাজ করার সময় পাঁচ বছর আগে পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সাজ্জাদ হোসেন মিলনের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ঢাকায় মিলন ভিডিও সম্পাদনার কাজ করতেন। তখন বাংলা টিভি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের চিফ নিউজ এটিডর ও গ্রাফিক্স ডিজাইনার হিসেবে কাজ করতেন সাজ্জাদ।

এই সম্পর্কের সূত্র ধরেই সাজ্জাদ নিজ এলাকা বোদায় একটি মিউজিক ভিডিও তৈরির জন্য মডেল হিসেবে কাজ করতে ওই তরুণীকে আসতে বলেন। গত মঙ্গলবার সকালে বোদায় পৌঁছান ওই তরুণী। এরপর সাজ্জাদ তাকে বোদা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবিদা সুলতানা লাকীর বাড়িতে নিয়ে যান। তার বাড়িতেই সাজ্জাদসহ ৪-৫ জন মিলে তাকে গণধর্ষণ করেন। পরদিন তাকে বোদা পৌরসভার ভাসাইনগরের একটি বাড়িতে নিয়ে ফের গণধর্ষণ করা হয়। একপর্যায়ে সেখান থেকে পালিয়ে বোদা থানায় আশ্রয় নেন ওই তরুণী।

পরে গতকাল বুধবার রাতে ওই তরুণী তিনজনের নাম উল্লেখ করে এবং ১০-১২ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার নামীয় আসামিরা হলেন, বোদা পৌরসভার ঝিনুকনগর এলাকার প্রথম বাংলা আইপি টিভির চিফ নিউজ এডিটর ও ইউটিউবার সাজ্জাদ হোসেন মিলন (৩৩), বোদা উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি নজরুল ইসলামের স্ত্রী বোদা উপজেলা যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক আবিদা সুলতানা লাকী (৪৫) ও বোদা নগরকুমারী এলাকার জসীম উদ্দিন (২২)। মামলার পর ওই রাতেই সাজ্জাদ হোসেন মিলন ও আবিদা সুলতানা লাকীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বোদা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আবু সায়েম মিয়া বলেন, ‘প্রধান দুই আসামিকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে তাদের পাঁচ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়া ধর্ষণের শিকার ওই তরুণীর ডাক্তারি পরীক্ষা ও জবানবন্দি গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।’

পঞ্চগড়ের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ ইউসুফ আলী বলেন, ‘এই ধর্ষণের ঘটনায় অনেক বিষয় বেড়িয়ে আসছে। আমরা ধারণা করছি, এই ঘটনার সাথে পুরো একটি চক্র কাজ করেছে। আদালত আসামিদের রিমান্ড মঞ্জুর করলে আরও অনেক তথ্য আমরা বের করতে পারব।’

এসপি আরও বলেন, ‘আমরা পুরো চক্রটিকেই বের করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। এ ছাড়া বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের জন্য আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।’

সূত্র; আমাদের সময়

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।