ঠাকুরগাঁও জেলাতে রয়েছে ৩ টি পৌরসভা, ৬ টি থানা, ৫ টি উপজেলা, ৫৩ টি ইউনিয়ন ও ৫৭০ টি গ্রাম। ঠাকুরগাঁও নামটি এসেছে প্রাচীন জমিদার নারায়ন ঠাকুর এবং তার ভাই জোতিষ ঠাকুরের নামানুসারে।

ঠাকুর অর্থাৎ ব্রাহ্মণদের সংখ্যাধিক্যের কারণে স্হানটির নাম ঠাকুরগাঁও হয়েছে। ঠাকুরগাঁও এর পূর্ব নাম নিশ্চিন্তপুর।গত দশ বছরে ঠাকুরগাঁও এর ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে যেমন- রাস্তা ঘাট(সব ধরনের যোগাযোগ ব্যাবস্থা),ব্রীজ কালভার্ট,ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কল কারখানা,আয়-ব্যায়,ব্যাবসা-বানিজ্য সহ সব ক্ষেএে অনেক পরিবর্তন হওয়ার ফলে বর্তমান ঠাকুরগাঁও একটি আধুনিক শহরে পরিনত হয়েছে।এই শহরের উপর দিয়ে বয়ে গেছে টাংগন নদী। টাঙ্গন নদীর পাড়ে অপরাজেয় ৭১ ভাস্কর্য।

ঠাকুরগাঁও একটি ছোট্ট শহর। কিন্তু এর ভেতরে ও আশেপাশে অনেক গুরুত্বপুর্ণ স্থান রয়েছে।ঠাকুরগাঁও জেলায় বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এর তালিকাভুক্ত দুটি প্রত্নতাত্ত্বিক স্থাপনা যেমন-ঢোলরহাট মন্দির ও জামালপুর জামে মসজিদ।এছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা হচ্ছে হরিপুর রাজবাড়ি।আরো আছে বাংলাদেশ তথা দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় আমগাছ বালিয়াডাংগী থানায় অবস্থিত।

এছাড়া আরো রয়েছে ঠাকুরগাঁও সদরে ঐতিহ্যবাহী বালিয়া মসজিদ, রাণীশংকৈল রাজবাড়ি ও রানীসাগর, হরিণমাড়ির পুরোনো শিবমন্দির, মোঘল আমলে নির্মিত সনগাঁও জামে মসজিদ, ফতেপুর সিক্রি, বলাকা উদ্যান, পীরগঞ্জের ফানসিটি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত পুরোনো বিমান বন্দর এ ছাড়াও রয়েছে ১৩ নং গড়েয়া ইউনিয়নে আন্তর্জাতিক স্কন মন্দির ও লস্করা গৌড়িয় মঠ মন্দির ইত্যাদি।

প্রধান শস্য- ধান,গম,আলু, ভুট্টা,পাট, আখ। রপ্তানী পণ্য– ধান,চাল,আলু,আম।শীতকালে অনেক রকমের পিঠা তৈরি হয়। শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ঠাকুরগাঁও চিনি কল অন্যতম।প্রানের ঠাকুরগাঁওয়ে রয়েছে দৃষ্টি নন্দিত আরো অনেক দর্শণীয় স্থান। ভারতীয় সীমান্তো ঘেষা নাগর নদীর তীরে গড়ে ওঠেছে দৃষ্টিনন্দন চা বাগান রনবাগ টি স্টেট যেটা বর্তমানে পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে বহুল জনপ্রিয়।ঠাকুরগাঁওয়ে অনেকগুলো নদী রয়েছে। সেগুলো হচ্ছে টাঙ্গন নদী, শুক নদী, ছোট সেনুয়া নদী, আমনদামন নদী, লাচ্ছি নদী, ভুল্লী নদী, সোজ নদী,ছোট ঢেপা নদী,কুলিক নদী, পুনর্ভবা নদী, তালমা নদী,পাথরাজ নদী,কাহালাই নদী,তীরনই নদী,নাগর নদী,তিমাই নদী এবং নোনা নদী।

এছাড়াও আছে পুরো জেলা জুড়ে গড়েয়াহাট দিঘি, লস্করা দিঘি, টুপুলী দিঘি, শাসলা ও পেয়ালা দিঘি, ঠাকুর দিঘি, আঠারো গান্ডি পোখর, আধার দিঘি, হরিণমারী দিঘি, রতন দিঘি, দুওসুও দিঘি, রামরাই দিঘি, খুনিয়া দিঘি, রানীসাগর, মেদিনীসাগর দিঘি।শিক্ষার দিক দিয়েও পিছিয়ে নেই ঠাকুরগাঁও।আমাদের জেলার অনেক কৃতিসন্তান দেশের বিভিন্ন জায়গায় কৃতিত্বের সাথে অনেক অবদান রেখে যাচ্ছে।

১৯৭১ সালে স্বাধীনতা লাভের পর ঠাকুরগাঁও এর তরুন যুবকেরা ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরক্ষরমুক্ত গ্রাম গড়ে তোলার যুদ্ধ। সেই যুদ্ধে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার কচুবাড়ি-কৃষ্টপুর গ্রাম দেশের প্রথম নিরক্ষরমুক্ত গ্রাম হিসেবে স্বীকৃতি পায়।যা বাংলাদেশের সর্বপ্রথম নিরক্ষর মুক্ত গ্রাম কচুবাড়ির কিষ্টপুর আমাদের জেলায় অবস্থিত।এখানে বসবাস করে বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর মানুষ যেমন: পলিয়া, মুন্ডা, সাওতাল, রাজবংশী, মালধরিয়া, কোচ ইত্যাদি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ। আমাদের সংস্কৃতির মধ্যে রয়েছেওয়াজ মাহফিল, ধামের গান, সত্যপীরের গান, কবি গান, পালাগান , ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়।খেলাধুলার মধ্যে রয়েছে মার্বেল, লুডু,হা-ডু-ডু,কেরাম, বউচি, চৌপাতি, গোল্লাছুট, চোরপুলিশ, ফুটবল এবং ক্রিকেট। আমাদের জেলার অথর্নীতির সীমানা ডিঙ্গিয়ে কিছু শিল্পপতি সমগ্র দেশে বিচরণ করছে। এদের মধ্যে ইএসডিও,রাজ্জাক গ্রুপ, ইজাব গ্রুপ,বাবলু এন্টারপ্রাইজ, কাজী ফার্ম,সুপ্রিয় গ্রুপ,সেলিম রেজা গ্রুপ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।অনেক বরেণ্য ব্যক্তিরও জন্ম হয়েছে আমাদের জেলায়। আমাদের জেলার মানুষ সহজ সরল।

আমি আমার জেলাকে ভীষন ভালোবাসি। গর্ববোধ করি। আসুন সবায়মিলে ঐক্য বদ্ধহয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ি। হামার ঠাকুরগাঁও জেলার উন্নয়নে সবাইমিলে কাজ করি।

আমাদের বাণী-আ.আ.হ/মৃধা

[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।