ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা; বিশ্বজুড়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপের মধ্যে জুলাই মাসে প্রবাসীরা দেশে ২৬০ কোটি মার্কিন ডলারের রেকর্ড রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর আগে কোনো একক মাসে এত রেমিট্যান্স কখনও আসেনি।
রেকর্ড রেমিট্যান্সের কারণে ৩০ জুলাই পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে হয়েছে তিন হাজার ৭২৯ কোটি ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ তিন লাখ ১৬ হাজার ২০৪ কোটি টাকা।
আজ সোমবার (০৩ আগস্ট ২০২০) বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কাজী ছাইদুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রতি বছরই দুই ঈদের আগে পরিবার-পরিজনের জন্য বেশি অর্থ দেশে পাঠান বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থানকারী প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত জুলাই মাসে রেমিট্যান্স এসেছে ২৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ডলার। একক মাস হিসেবে যা বাংলাদেশের ইতিহাসে এযাবৎকালের সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। এর আগে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল চলতি বছরের জুনে। ওই মাসে রেমিট্যান্স এসেছিল ১৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সদ্যসমাপ্ত ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসীরা মোট এক হাজার ৮২০ কোটি ৪৯ লাখ ডলার সমপরিমাণ অর্থ দেশে পাঠিয়েছেন। দেশীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ এক লাখ ৫৪ হাজার ৭৪২ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা ধরে)। এর আগে কোনো অর্থবছরে এত অর্থ দেশে আসেনি। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড হয়। ওই সময়ে প্রবাসীরা এক হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। সেই হিসাবে আগের অর্থবছরের তুলনায় সদ্যসমাপ্ত অর্থবছরে রেমিট্যান্স বেড়েছে ১৭৮ কোটি ৫৩ লাখ ডলার বা ১৫ হাজার কোটি টাকা।
জানা গেছে, গত অর্থবছর রেমিট্যান্সের ওপর ঘোষিত ২ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করে সরকার। এরপর থেকেই বৈধ চ্যানেলে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বাড়তে থাকে। তবে করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বব্যাপী লকডাউনের ফলে মার্চ ও এপ্রিল দুই মাস রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ কিছুটা কমে যায়। পরে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ঈদের মাস মে’তে আবারও রেমিট্যান্সপ্রবাহ বেড়ে যায়। যার ধারাবাহিকতায় রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পেল বাংলাদেশ। করোনায় বৈশ্বিক অর্থনীতির পরিস্থিতি অবনতি না হলে রেমিট্যান্স আরও বেশি হতো বলে মনে করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা।
এদিকে ২০১৯-২০ অর্থবছরের মতো রেমিট্যান্স বাড়াতে চলতি অর্থবছরও এ খাতে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। বাজেট বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের সামগ্রিক কল্যাণ ও সুযোগের সমতা নিশ্চিতকরণ, কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি এবং বাজারের চাহিদা অনুযায়ী প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে সরকার কাজ করছে।’
আমাদের বাণী ডট কম/০৩ আগস্ট ২০২০/পিপিএম