এক টাকা, দুই টাকার ধাতব মুদ্রা এখন ঝিনাইদহ জেলার বিভিন্ন বাজারগুলোয় অচল হয়ে পড়েছে। এমনকি ব্যাংক, বীমা, এনজিও, এবং ক্ষুদ্র প্রতিষ্ঠানে ধাতব মুদ্রা গ্রহণ করা হচ্ছে না। তাই সবার কাছে এ মুদ্রা অচল বলে গণ্য হচ্ছে। বড় বড় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে ক্ষুদে চা-পানের দোকানগুলোতে ধাতব মুদ্রা নিতে চায় না ব্যবসায়ীরা। যার ফলে এ নিয়ে ক্রেতা, বিক্রেতার মধ্যে প্রতিনিয়ত হয়ে থাকে কথা কাটাকাটি।

কোথাও দেখা গেছে, মারামারি হাতাহাতিতে রুপ নিয়েছে এই মূদ্রা গ্রহণ করাকে কেন্দ্র করে। সরেজমিনে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় বেশ কিছু মুদি দোকানে দেখা যায়, ধাতব মুদ্রার পরিবর্তে ব্যবসায়ীরা চালাকি করে চকোলেটকে মুদ্রা হিসেবে চালিয়ে দিচ্ছে। ক্রেতা, বিক্রেতার কাছ থেকে প্রয়োজনীয় পন্য ক্রয় করে ২ অথবা ১ টাকা বিক্রেতার কাছে ক্রেতার যখন পাওনা থাকে তখন বিক্রেতা ক্রেতাকে ওই টাকা না দিয়ে ক্রেতাকে এক অথবা দুইটি চকোলেট ধরিয়ে দেয়। এতে ব্যবসায়ীদের বাড়তি লাভ দেখা যায়।

উপজেলার ৯ নং ইউনিয়নের দামুকদিয়া গ্রামের ৬০ বছরের এক বৃদ্ধা মহিলা বুলবুলি বেগম বলেন, অতীতে আমরা মাটির তৈরি ব্যাংকে ১ টাকা, ও ২ টাকার মুদ্রা জমিয়ে রাখতাম। যখন অনেক টাকা জমা হতো তা দিয়ে ছেলে মেয়েদের জন্য বিভিন্ন জিনিসপত্রাদি কিনতাম। এখন আর সেটা সম্ভব হচ্ছে না। বর্তমান সময়ে সেই মাটির তৈরি ব্যাংকও কারো বাড়িতে সহজে মেলে না। যার জন্য পয়সা জমানোও যায় না। আর যদিওবা কেউ পয়সা জমিয়ে রাখে, সেই পয়সা নিয়ে পড়তে হয় বিপদে, কারণ ওই পয়সা দিয়ে কেউ পন্য ক্রয় করতে পারে না। বাজারঘাটে এই পয়সা কোন ব্যবসায়ী গ্রহণ করতে চায় না। চোখ মেললেই এখন দেখা যায় ফকফকে পরিষ্কার কাগজের বড় বড় নোট। এমন দিন আসবে নতুন প্রজন্ম ধাতব মুদ্রার নাম শুনবে কিন্তু চোখে দেখবে না।

ছোট-বড় একাধিক দোকানদার ও ব্যবসায়ীদের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলেন ,বড় ব্যাবসায়ীরা ধাতব মুদ্রা না নিলে আমরা এ মুদ্রা কিভাবে চালাবো? মধ্যম শ্রেণির ব্যাবসায়ীদের অভিযোগ, বড় নামি-দামী ব্যাবসায়ীদের কাছে ধাতব মুদ্রা অচল। ১ টাকা, ২ টাকায় কোন কিছুই পাওয়া যায় না এখন। তাছাড়া যে মানের মূদ্রাই হোক-না কেন সংখ্যায় বেশি হলে তা গুনতে ঝামেলা বলে, এ মুদ্রা তারা গ্রহণ করেন না বলে জানালেন একাধিক ছোট- বড় ব্যাবসায়ী ও দোকানদারেরা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।