পদ্মা,যমুনা, খাল-বিল বেষ্টিত পাবনা জেলা মাছের উৎপাদনের জন্য বরাবরই বিখ্যাত। এ জেলার বেড়া,সুজানগন,চাটমোহর,সাঁথিয়া,ঈশ^রদি উপজেলা দেশি মাছের ভান্ডার হিসেবে খ্যাত। প্রতিদিন প্রচুর মাছ এ অঞ্চল থেকে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরে যায়। তবে শুষ্ক মৌসুমে এ উপজেলার হাটে বাজারে এসব দেশী মাছের দেখা মিলছে না।

অধিকাংশ দিনেই মাছের তীব্র সংকট দেখা যায়। বিশেষ করে দেশি মাছের দেখা পাওয়া যায় না পাবনার বাজারগুলোতে। এসব দেশী মাছের পোনার মধ্য রয়েছে কৈ, মাগুর, পাবদা, টাকি, রুই, কাতল, চিতল,পুটি, টাটকিনি, আইড় সহ বিভিন্ন প্রজাতির দেশী মাছ। বাজারে বিদেশি চাষের মাছও কমে গেছে। তার জায়গায় বিক্রি হচ্ছে বিভিন্ন নামের সামুদ্রিক মাছ। বেড়ার বাজারগুলোতে এখন সামুদ্রিক খসল্লা, সুরমা ও কলোম্ব মাছের আধিপাত্য দেখা যায়। এসব মাছের দামও কম। ফলে অন্য মাছ কিনতে না পারায় এসব সামুদ্রিক মাছ কিনছেন অনেকে।

এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় মাছের আড়ত বেড়া সিএন্ডবি বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন চতুর বাজার ঘুরে দেখা গেছে সেখানে দেশি মাছের আমদানি গত দুই সপ্তাহে একেবারে কমে গেছে। তাছাড়া অন্যান্য উপজেলার বাজারগুলোরও একই অবস্থা।

এখানকার পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, বিগত প্রায় মাসখানেক ধরেই এ অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। এখান থেকে উপজেলার বিভিন্ন বাজারের খুচরা মাছ ব্যবসায়ীরা মাছ কিনে বিক্রি করেন। যে অল্প সংখ্যক মাছ আসছে তা কিনতে রীতিমত হুমড়ি খেয়ে পরে এসব খুচরা ব্যবসায়ীরা। চড়া দামে তীব্র প্রতিযোগীতায় কিনে নিয়ে তা খুচরা বিক্রি করতে হয়ে। ফলে সেই মাছের দাম আরও অনেক বৃদ্ধি পায় যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের বাইরে থাকে। দেশি মাছা ছাড়াও বাজারে বিদেশি চাষ করা মাছ পাওয়া যায় অল্প পরিমাণে যা কয়েক মাস আগেও আরও বেশি পাওয়া যেত এবং দামও ছিল হাতের নাগালে। যে আকারের তেলাপিয়া মাছ কেজিতে ১২০-১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে সেই মাছ এখন ১৬০-১৭০ টাকা এবং ১৩০-১৪০ টাকার বাটা মাছের দাম বৃদ্ধি পেয়ে ২০০-২২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া সিলভার কার্প, গ্রাস কার্প,পুঁটি কার্প এসব মাছের দাম আগের চেয়ে বেড়েছে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা। বিক্রেতারা বলছেন, বিদেশি মাছের আমদানিও আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে ফলে দাম বৃদ্ধি ছাড়া উপায় নেই।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিভিন্ন নদীতে চলছে কারেন্ট জাল দিয়ে দেশী পোনা মাছ ধরার মহোৎসব চলে। প্রতিদিন একশ্রেণীর অসাধু মৎসজীবি নৌকা নিয়ে কারেন্ট জালের মাধ্যমে দেশী মাছের পোনা নিধন করে। ফলে শুষ্ক মৌসুমে মাছের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। মাছের পোনা নিধনে অসাধু মৎসজীবি ভাদাই জাল, কারেন্ট জাল নিয়ে ব্যাবহার করে। ক্রমাগতভাবে অবৈধভাবে দেশী মাছের পোনা ধরার ফলে অনেক মাছই এখন আর দেখা যায় না।

ব্যবসায়ীদের দাবী কতৃপক্ষ এসব অসাধু মৎসজীবিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ পূর্বক পোনা মাছ নিধনে তাদের বিরত করার।

আমাদের বাণী-আ.আ.হ/মৃধা

[wpdevart_like_box profile_id=”https://www.facebook.com/amaderbanicom-284130558933259/” connections=”show” width=”300″ height=”550″ header=”small” cover_photo=”show” locale=”en_US”]

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।