বগুড়ায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় মোবাইল ফোনের মাধ্যমে উত্তর আদান প্রদান ও চাকরি দেওয়ার নামে টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টার অভিযোগে ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১৩ জনকে শুক্রবার ও ১ জনকে বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়।

শুক্রবার ছিল জেলার ৬টি উপজেলার প্রার্থীদের পরীক্ষা। ৩৭টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা চলাকালে বিভিন্ন কেন্দ্রের আশপাশ থেকে পুলিশ ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করে।

তারা হলেন- রাজু, সালাম, ইউনুস আলী, ইসমাইল হোসেন, মেহেদী হাসান, ওবায়দুর রহমান, হারুন, সিজু মিয়া, আহসান, আলমগীর কবির, সুমন, হাসনাতুন জাহান ও সাইফুল ইসলাম। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, পরীক্ষা কেন্দ্রের বাইরে থেকে সুকৌশলে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রশ্নের উত্তর পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে আদান প্রদান করছিলেন তারা।

র‌্যাব বলছে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা ছিল শুক্রবার। এই পরীক্ষা সামনে রেখে প্রশ্ন ফাঁসের প্রলোভন দিয়ে অর্থ লেনদেনে জড়িত প্রতারক চক্রের সন্ধান পায় র‌্যাব।

বৃহস্পতিবার রাতে র‌্যাব সদস্যরা শহরের লতিফপুর কলোনি এলাকা থেকে আলমগীর হোসেন নামের একজনকে ১০ লাখ টাকার চেকসহ গ্রেপ্তার করে। তিনি লতিফপুর এলাকার আবেদ আলীর ছেলে।

গ্রেপ্তার আলমগীর এক প্রার্থীকে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি দেয়ার নামে ১০ লাখ টাকা চুক্তি করেন এবং প্রার্থীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা করে ১০ লাখ টাকার দু’টি চেক নিয়ে রাখেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র‌্যাব সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করে। শুক্রবার গ্রেপ্তার আলমগীর হোসেনকে সদর থানায় হস্তান্তর করে তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়।

র‌্যাব-১২ বগুড়ার স্পেশাল কোম্পানির অধিনায়ক মেজর এস এম মোর্শেদ হাসান বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের নামে অর্থ আদায়ে প্রতারক চক্রের সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি জড়িত বলে র‌্যাব তথ্য পেয়েছে। আলমগীরকে আটকের পর অন্য ব্যক্তিদের ধরতে মাঠে নেমেছে র‌্যাব।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম বদিউজ্জামান জানান, পরীক্ষা কেন্দ্রের আশপাশ থেকে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বেগম তহমিনা খাতুন জানান, শুক্রবার জেলার ১২ উপজেলার মধ্যে ছয় উপজেলার ৩১ হাজার ৯৯৭ জন পরীক্ষার্থীর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ২৮ জুন অপর ছয় উপজেলার পরীক্ষার্থীদের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

বগুড়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) আবদুল মালেক বলেন, এবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ছাপানো থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছানো পর্যন্ত নজিরবিহীন গোপনীয়তা এবং সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে।

এ কারণে কোনোভাবেই প্রশ্ন ফাঁস হওয়া সম্ভব নয়। প্রশাসনের কাজ প্রশ্ন ফাঁস ঠেকানো। এখন প্রশ্ন ফাঁসের প্রলোভন দিয়ে প্রতারক চক্র অর্থ লেনদেনে জড়িত থাকলে তা দেখার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।