ঢাকাঃ দেশে করোনাভাইরাস ও বন্যার প্রভাবে সবজির দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। এদিকে বন্যায় ব্যাপক ক্ষতি হয় ফসলের, নষ্ট হয়ে যায় রোপণকৃত চারা।ফলে বাজারে সবজির দাম ১০০ টাকার নিচে ছিল না। নিত্য প্রয়োজনীয় এসব পন্যের দামে বেসামাল অবস্থায় পড়েন নিম্ন-মধ্যবিত্তরা। অনেকেই ঢাকা ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হন।
এদিকে শীতের শুরুতে শীতকালীন সবজির সরবরাহ বাড়ায় কিছুটা দাম কমতে শুরু করে সবজির।
বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে শীতকালীন সবজির সরবরাহের সঙ্গে সঙ্গে দাম কমে আসছে। তবে সবজির দাম কমলেও সাধারণ ক্রেতারা বলছেন, সবজির সরবরাহের তুলনায় মোটেও দাম কমছে না। সপ্তাহের ব্যবধানে সবজিভেদে কেজিতে ১০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত দাম কমেছে সবজির। তবে কিছুটা দাম বেড়েছে আলু, রসুন ও আদার। অন্যদিকে চাল, ডাল, ভোজ্যতেল, মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও দাম কমেছে মাছ ও মুরগির।
শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর কমলাপুর, টিঅ্যান্ডটি, ফকিরাপুল, সেগুনবাগিচা, শান্তিনগর, মগবাজার, মালিবাগ ও রামপুরা কাঁচা বাজার ঘুরে এসব চিত্রে উঠে এসেছে।
এসব বাজারে কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা পর্যন্ত দাম কমে প্রতিকেজি গাজর বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, সিম ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বিট ৪০ থেকে ৫০ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৪০ টাকা, ধনিয়া পাতা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১০০ টাকায়।
কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা পর্যন্ত দাম কমে প্রতিকেজি শসা বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৫০ টাকা, পটল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঢেরস ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৩৫ থেকে ৮০ টাকা, পেঁপে ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, চিচিংগা ৪০ টাকা, ধুন্দল ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ঝিঙা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, উস্তা ৬০ থেকে ৭০ টাকায়। ১০ টাকা কমে প্রতিপিস বাঁধা ও ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কলা প্রতিহালি ২৫ থেকে ৩০ টাকা, জালি কুমড়া প্রতিপিস ৩০ থেকে ৪০ টাকা, লাউ ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
বাজারে দুই টাকা দাম বেড়ে প্রতিকেজি বগুড়া ও বিক্রমপুরের আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি ডায়মন্ড আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়। ছোট আলু (ভর্তা আলু) বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়।
বাজারে প্রতিমোড়া (আঁটি) শাকে দুই থেকে পাঁচ টাকা পর্যন্ত দাম কমে লাল শাক বিক্রি হচ্ছে ১০ থেকে ১৫ টাকা, পালং শাক ২০ টাকা, ডাটা শাক ১৫ টাকা, মুলা শাক ১০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, লাউ ও কুমড়ার শাক ৩০ টাকায়।
এসব বাজারে প্রতিকেজি মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১২০ টাকা, চিনি ৬২ থেকে ৬৫ টাকা, আটাশ চাল ৫২ থেকে ৫৩ টাকা, পায়জাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, মিনিকেট প্রকারভেদে ৫৭ থেকে ৬০ টাকা, নাজির ৫৫ থেকে ৫৮ টাকা, পোলাওর চাল বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়। প্রতিকেজি খোলা ভোজ্যতেল বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১০৮ টাকার মধ্যে।
এসব বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, আমদানিকৃত মিশরের পেঁয়াজ ৭০ টাকা, চায়না পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। আর গাছসহ দেশি নতুন পেঁয়াজ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে প্রতিকেজি দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা, চায়না রসুন ১০০ থেকে ১১০ টাকা, আদা (কেরালা) বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকায়।
এসব বাজারে মাংস ও ডিমের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও কমেছে মাছ ও মুরগির দাম। বর্তমানে বাজারে কেজিতে ১০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত দাম কমে প্রতিকেজি শিং মাছ (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ৪৫০ টাকা, রুই (আকারভেদে) মাছ ১৮০ থেকে ৩০০ টাকা, মৃগেল ১৭০ থেকে ২৫০ টাকা, পাঙাস ১১০ থেকে ১৬০ টাকা, কাতল ১৭০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১১০ থেকে ১৫০ টাকা, সিলভার কাপ ১০০ থেকে ১৫০ টাকা, কৈ মাছ ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, মিরর কাপ ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, কাচকি-মলা ২৩০ থেকে ৩০০ টাকা, দেশি চিংড়ি (ছোট) ৩৫০ থেকে ৪৫০ টাকা, হরিণা চিংড়ি ৪৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, বাগদা-গলদা ৬০০ থেকে ৭৫০ টাকা, পাবদা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকায়।
বাজারে প্রতিডজন লাল ডিম বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা, দেশি মুরগির ডিম ১৭০ টাকা, হাঁসের ডিম ১৩০ থেকে ১৪০ টাকায়। প্রতিকেজি খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকা, বকরির মাংস ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা, গরুর মাংস ৫৫০ থেকে ৫৮০ টাকা, মহিশের মাংস ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকায়। কেজিতে পাঁচ থেকে ১০ টাকা কমে প্রতিকেজি বয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ থেকে ১৪৫ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৩০ থেকে ২৪০ টাকা, সোনালি মুরগি ২৪০ থেকে ২৫০ টাকায়।