নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা; দেশে মহামারি করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২১  জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩৪৯ জনে । একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও ১৬০২ জন। সব মিলিয়ে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ২৩৮৭০ জন ।

আজ সোমবার (১৮ মে ২০২০) দুপুরে স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়। অনলাইনে বুলেটিন উপস্থাপন করেন স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও নয় হাজার ৯৩৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় নয় হাজার ৭৮৮টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ৮৫ হাজার ১৯৬টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও এক হাজার ৬০২ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৩ হাজার ৮৭০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ২১ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩৪৯ জনে।

নাসিমা সুলতানা আরো জানান, ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২১২ জন এবং এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪ হাজার ৫৮৫ জন। সুস্থতার হার ১৯.২১ শতাংশ ও মৃত্যুর হার ১.৪৬ শতাংশ।

মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে জানানো হয়, পুরুষ ১৭ জন ও নারী চারজন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের সাতজন, সিলেট বিভাগের একজন ও রাজশাহী বিভাগের একজন। ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা সিটির আছেন ছয়জন। তাদের বয়স বিশ্লেষণে ৩১-৪০ বছরের মধ্যে দুইজন, ৪১-৫০ ছয়জন, ৫১-৬০ আটজন এবং ৬১-৭০ বছরের মধ্যে পাঁচজন।

২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ২৩১ জনকে। আইসোলেশন থেকে ছাড় দেয়া হয়েছে ৯৬ জনকে।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি  এড়াতে সবাইকে ঘরে থাকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ-নির্দেশনা মেনে চলার অনুরোধ জানানো হয় বুলেটিনে।

গতকাল রবিবারের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় পরীক্ষা করা হয় আট হাজার ১১৪টি  নমুনা পরীক্ষা করে  এক হাজার ২৭৩ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২২ হাজার ২৬৮ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১৪ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৩২৮ জনে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ২৫৬ জন। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন চার হাজার ৩৭৩ জন। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে জানানো হয়, পুরুষ ১৩ জন ও নারী একজন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ৯ জন ও চট্টগ্রাম বিভাগের পাঁচজন। ঢাকা বিভাগের মধ্যে ঢাকা সিটির আছেন পাঁচজন। তাদের বয়স বিশ্লেষণে ১১-২০ বছরের মধ্যে একজন, ৩১-৪০ একজন, ৫১-৬০ তিনজন, ৬১-৭০ তিনজন, ৭১-৮০ তিনজন ও ৮১-৯০ বছরের মধ্যে একজন।

করোনাভাইরাস প্রথম শনাক্ত হয় গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে। তবে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাস ক্রমে গোটা বিশ্বকে বিপর্যস্ত করে দিয়েছে। চীন পরিস্থিতি অনেকটাই সামাল দিয়ে উঠলেও এখন মারাত্মকভাবে ভুগছে ইউরোপ-আমেরিকা-এশিয়াসহ বিশ্বের অন্যান্য অঞ্চল। পৃথিবীর ১২০টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়া এ মারণ ভাইরাসে মারা গেছে তিন লক্ষাধিক মানুষ।

গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর প্রথম দিকে কয়েকজন করে নতুন আক্রান্ত রোগীর খবর মিললেও এখন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে এ সংখ্যা। বাড়ছে মৃত্যুও। এদিকে ক্রমেই আক্রান্ত সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশে ৭ম দফা ছুটি বাড়িয়ে আগামী ৩০ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।

আমাদের বাণী ডট/১৮ মে ২০২০/পিবিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।