স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, দিনাজপুরের ইউএনও ওয়াহিদা খানম-এর চিকিৎসার কোনো রকম ত্রুটি রাখা হয়নি। তার চিকিৎসায় আরও উন্নত ব্যবস্থা নেয়ার প্রয়োজন হলে সরকার দ্রুততার সাথে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

আজ রবিবার রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে ভর্তি হওয়া চিকিৎসারত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমকে দেখতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

জাহিদ মালেক বলেন, সময় মতো চিকিৎসা কেন্দ্রে আসার কারণে বড় রকম কোনো ক্ষতি হয়নি। এখন তিনি ক্রমেই সুস্থ হচ্ছেন। তার স্বাভাবিক জ্ঞান ফিরে এসেছে। কথাও বলতে পারছেন। ধীরে ধীরে তার স্মৃতিশক্তি ফিরে আসছে। তবে আপাতত রোগীর ডান পার্শ্ব অবশ হয়ে আছে। নিয়মিত থেরাপি দিলে আশা করা যায় তাঁর শরীর পুরোপুরি সুস্থ হয়ে যাবে।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রোগী এখন যে পর্যায়ে আছে তাতে করে তাকে দেশের বাইরে নেয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। ভবিষ্যতে যদি প্রয়োজন হয় তখন সেটা সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। ওয়াহিদা খানমের চিকিৎসায় যা যা দরকার, তার সবই দেয়া হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ইউএনও ওয়াহিদা আমার সঙ্গে কথা বলেছে। আমার কাছে মনে হয়েছে তিনি এখন অনেক ভালো অবস্থায় আছেন। তার আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে ৮ জন চিকিৎসক আড়াই ঘণ্টা ধরে সফলতার সঙ্গে অপারেশন করেছেন। তার ডান দিকের অংশটা এখনও অবশ আছে। চিকিৎসক বলেছেন, ফিজিক্যাল থেরাপি দিলে আস্তে আস্তে এটা ভালো হয়ে যাবে। এরকম একটা জটিল রোগীকে সফলতার সঙ্গে নিউরো সায়েন্স চিকিৎসা দেয়ায় আমরা গর্বিত। প্রধানমন্ত্রী নিজেও রোগীর সম্পর্কে সবসময় খোঁজখবর রাখছেন।

জাহিদ মালেক বলেন, আগামীকাল সোমবার সকালে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণ শেষ হবে। এখনও ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা যায়নি। দোয়া করি, ইনফেকশন যেন না হয়।

হাসপাতাল পরিদর্শনকালে নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের পরিচালক ডা. কাজী দীন মোহাম্মদ, যুগ্ম পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. বদরুল আলম মন্ডলসহ অন্যান্য চিকিৎসকবৃন্দ স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সাথে ছিলেন।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমকে দেখা শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী ৪৫০ শয্যা বিশিষ্ট ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসয়েন্সেস ও হাসপাতালে ২০ শয্যার আইসোলেসন ওয়ার্ডসহ ১০০ শয্যা বিশিষ্ট বিশেষায়িত স্ট্রোক ইউনিটে ভর্তিকৃত রোগীদের চিকিৎসা সেবার খোঁজ খবর নেন এবং পরিদর্শন করেন।

এদিকে দুপুরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নারায়ণগঞ্জ মসজিদে বিস্ফোরণে আহতদের দেখতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ণ ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট-এ যান এবং চিকিৎসারত মুসল্লী রোগীদের ব্যাপারে খোঁজ নেন ও অন্যান্য সেবা কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। এ সময়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৪ জন মারা গেছেন। জীবিত আছেন ১৩ জন। তবে তাদের সবারই শ্বাসনালি পুড়ে গেছে, শরীরের ৫০ থেকে ৭০-৮০ ভাগও পুড়ে গেছে। ফলে কেউই আশঙ্কামুক্ত নয়। জীবিতদের সারিয়ে তোলার সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, এ ঘটনায় মোট ৩৭ জন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি হয়েছেন। অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক যে তাদের মধ্যে ২৪ জন মারা গেছেন। যারা বেঁচে আছেন তাদের সবার শরীরের ৫০ থেকে ৭০-৮০ ভাগ পর্যন্ত পোড়া। জীবিত ১৩ জনের শারীরিক অবস্থাও আশঙ্কাজনক, তাদের সবার শ্বাসনালি পোড়া। তাদের মধ্যে ছয়জনকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে। এই ছয়জনের অবস্থা ক্রিটিক্যাল আর বাকিরাও আশঙ্কামুক্ত নয়।

 

আমাদের বাণী ডট কম/০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০/পিপিএম

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।