বছরে একাধিকবার বিদ্যুৎ গ্যাস-ডিজেল-জ্বালানীর মূল্য বৃদ্ধির বিধান রেখে বিইআরসির আইন সংশোধনের অনুমোদন মন্ত্রীসভা দেওয়ার প্রতিবাদে প্রতিবাদে বগুড়ায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বগুড়া জেলা শাখা।

আজ সোমবার (০৬ জানুয়ারী ২০২০) বেলা ১১:৩০ টায় জেলার সাতমাথায় এই বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে বাসদ জেলা আহ্বায়ক অ্যাড: সাইফুল ইসলাম পল্টুর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন বাসদ জেলা সদস্য সচিব সাইফুজ্জামান টুটুল, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট জেলা সা:ম্পাদক মাসুদ পারভজ, সমাজতান্ত্রিক ক্ষেতমজুর ও কৃষক ফ্রন্ট জেলা সা: সম্পাদক শাহিদুল ইসলাম, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম জেলা আহ্বায়ক দিলরুবা নূরী, বাসদ জেলা সদস্য শ্যামল বর্মন, রাধা রানী বর্মন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট জেলা সভাপতি ধনঞ্জয় বর্মন প্রমুখ।

সভাপতির বক্তব্যের সাইফুল ইসলাম পল্টু বলেন, “গত ৩০ ডিসেম্বর, ১৯ সোমবার জ্বালানির দাম বছরে একাধিকবার পরিবর্তন করা যাবে, এমন বিধান রেখে বিইআরসি (সংশোধন) আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা: বিইআরসির বিদ্যমান আইনে এক অর্থবছরে একবারের বেশি বিদ্যুৎ, গ্যাস ও তেলের দাম বাড়ানের যায়না। আইন সংশোধিত হলে বছরে একাধিকবার দাম বাড়াতে পারবে বিআরসি। তিনি বলেন “মন্ত্রিসভার এই খসড়ার অনুমোদন গন বিরোধী। গত ১০ বছরে খুচরা বা গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বেড়েছে ছয়বার, পাইকারি পর্যায়ে বেড়েছে ৪ বার। সরকারের অব্যস্থাপনা, রেন্টাল, কুইক-রেন্টালের মাধ্যমে ভাড়ার ভিত্তিতে জনগনের টাকা তসরুপ বন্ধ না করে, বিইআরসি আইনের পরিবর্তন করে দূর্নীতি-লুটপাটকে বৈধতা দেয়ার চক্রান্ত চলছে। যা জনগণের সাথে তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয়।”

 বাসদ জেলা সদস্য সচিব সাইফুজ্জামান টুটুল বলেন, “সরকার শুধুমাত্র অব্যবস্থাপনা রোধ করতে পারলে গ্যাস খাতে ১২ হাজার কোটি টাকা ও বিদ্যুৎ খাতে ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যায় কমানো সম্ভব। তাহলে আর গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর দরকার পড়ে না। কিন্তু সরকার সে পথে না হেটে লুটপাটকে আইনের মাধ্যমে বৈধ্যতা দেবার এক স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত জনগনের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে।”

সমাবেশে নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সরকার তেল দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে ব্যায় বেশি বলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র গুলো বন্ধ রাখছে। এই বন্ধ কেন্দ্রের ভড়া গুনতে গত বছর ১৫ হাজার কোটি টাকা লোকসান করেছে যা এ বছর ২০ হাজার কোটি টাকায় দাঁড়াবে। যেখানে গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে প্রতি ইউনিট ব্যায় হয় ২ টাকা ৭৩ পয়সা সেখানে তেলভিত্তিক কেন্দ্রের গড় ব্যায় ২০ টাকা ৪১ পয়সা, আর ডিজেল ভিত্তিক ব্যায় ২৭ টাকা ২১ পয়সা । সরকার গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে গ্যাস উত্তোলন করে গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন না করে বরং অব্যবস্থাপনার লোকসান, দূর্নীতি-লুটপাট বহাল রাখতে মূল্যবৃদ্ধির বোঝা জনগনের উপর চাপিয়ে দিতে বিইআরসির আইন পরিবর্তনের ষড়যন্ত্র করছে।

নেতৃবৃন্দ এই গনবিরোধী খসড়া আইন অনুমোদনের তীব্র নিন্দা জ্ঞাপন করেন এবং তা বাতিল করার দাবি জানান। সেইসাথে পেঁয়াজসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় মূল্যবৃদ্ধির উপর যদি এই আইন পাশ হয় তা হবে মরার উপর খাড়ার ঘা। মূল্যবৃদ্ধির এই নিপীড়ন থেকে রক্ষা পেতে নেতৃবৃন্দ জনগনকে মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধের আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।