বেসরকারি নিরাপত্তা সংস্থা জিফোরএস সিকিউরিটি সার্ভিসের (G4S) সিনিয়র ম্যানেজার জুলফিকার আমিনের বিরুদ্ধে এক নারী চাকরি প্রার্থীকে নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নারীর ফেসবুক পোস্ট এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ নিয়ে চলছে নানা মন্তব্যের ঝড়। জুলফিকার আমিন জি ফোর এস এর ফেসিলিটি সার্ভিস ডিভিশনে কর্মরত ছিলেন। তবে এই ঘটনায় তাকে ইতোমধ্যে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

জানা যায়, ৯ জুলাই বিকাল ৪ টায় স্বপ্না খান নামে ভুক্তভোগী তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন।

যাতে তিনি লিখেন, “একজন পটেনশিয়াল ধর্ষককে চিনে রাখুন…. G4S কোম্পানিতে আজকে একটা ইন্টারভিউ কল ছিল, ইন্টারভিউটায় এটেন্ট করলাম। শুরুতে সব ভালো থাকলেও এক পর্যায় কথার ভাবরুপ ছিল এমন “If u can make us happy, we will do everything for you.we will give u a secure career” সে আরো নানান কথা, এই তর্জমা শুনার পর আমি শুধু বললাম if i’m not wrong than I’m capable for my job, not any one personal reason….right যাই হোক তার কথার ধরন ছিল ভালো ক্যারিয়ারের জন্য স্রোতে গা ভাসানোই বুদ্ধিমানের কাজ। তারা পরবর্তীতে জানাল আগামী বৃহস্পতিবার আমাকে নক করা হবে। আমি চলে আসব এমন সময় ভদ্রতা দেখাতেই এই জুলফিকার আমিন (সিনিয়র ম্যানেজার) এগিয়ে আমার সাথে লিফটে উঠে এলেন। তারপর ডোন্ট ফিল আনকমফোর্টেবল বলেই আমার কাঁধে হাত দিল এবং হাত নিচে নামাতে থাকল, আমি তার হাত ঝাড়া দিয়ে ফেলে এক্সকিউজ মি বলে উঠলাম। সে একটা দুশ্চরিত্র মার্কা হাসি দিয়ে বলল U r hot…..লিফট খুলে নামতেই সে আমাকে চাকরি কনফার্ম, লাইফ সেটেল্ড, হ্যানত্যান গল্প শুনাতে লাগল আমি শুধু গরম হয়ে তার চোখের দিকে তাকিয়ে থাকলাম। জবানে লাগাম দিলাম। কিছুক্ষনের ভিতর সেখান থেকে বেরিয়ে আসলাম, মাথা ঘুরতেছিল, চোখ মুখ অন্ধকার। অফিস থেকে বের হবার পর পরবর্তী মুহূর্তে ম্যাসেজটি আমার ফোনে আসে যার স্ত্রিনশট ও দিলাম।

সুন্দর একটা থ্রিপিস পরে গিয়েছিলাম কোন গেঞ্জি প্যান্ট না, চাকরির জন্য ভদ্রতা দেখিয়েছিলাম কোন ওয়াইল্ডনেস না কিন্তু ফায়দা কি হল !! রাজমেস্ত্রি, কাঠমেস্ত্রী, মাদ্রাসার শিক্ষকরা ধর্ষক হিসেবে পরিচয় পায় আর সমাজের বড় স্তরের মানুষরা গায়ে বাতাস লাগিয়ে ঘুরে বেড়ায়।

হয়তো অনেক কিছুই করা যেত কিন্তু কোথাও না কোথাও তো চাকরি আমাকে করতেই হবে, ৯৯৯ এ ফোন দিয়ে হারেজমেন্টের শিকার তাদের পাশাপাশি আমাকেও হতে হবে। তাই শুধু এই ভয়াবহ এক্সপেরিয়েন্স এখানেই শেয়ার করলাম।”

ভুক্তভোগী নারী তার এই পোস্টের সঙ্গে ৩ টা স্ত্রিনশট যুক্ত করেন। স্ক্রিনশটগুলোতে দেখা যায়, জুলফিকার আমিনের ফেসবুক আইডি, তার মুঠোফোন দিয়ে করা এসএমএস এবং তার ব্যবহৃত ভিজিটিং কার্ডের ছবি। এদিকে আরো এক নারী এই প্রতিষ্ঠান নিয়ে তার একই ধরনের অভিজ্ঞতা ফেসবুকে পোস্ট করেছেন।

এ ব্যাপারে জানতে জুলফিকার আমিনকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।

যোগাযোগ করা হলে জিফোরএস এর এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘তাকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।’ কবে দেওয়া হয়েছে জানতে চাইলে বলেন, ‘ভুক্তভোগী তরুণীর ফেসবুকের পোস্ট আমাদের নজরে আসার পরপরই ওই দিন আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করি।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।