নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা;  করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধ এবং পরিস্থিতির উন্নয়নের লক্ষ্যের সাধারণ ছুটি আগামী ৩০ মে পর্যন্ত বাড়িয়েছে সরকার। আর এ কারণে দেশব্যাপী গণপরিবহন বন্ধের সিদ্ধান্ত আগামী ৩০মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার ( ১৪ মে ২০২০ ) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মো. আবু নাছেরের স্বাক্ষরিত এক নোটিশের এ তথ্য জানানো হয়।

সেখানে বলা হয়েছে, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী পরিবহন করা যাবে না। এছাড়া জরুরি পরিসেবা বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস ও অন্যান্য জ্বালানি, ফায়ার সার্ভিস, বন্দরসমূহের কার্যক্রম (স্থলবন্দর, নদীবন্দর ও সমুদ্রবন্দর), পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম, টেলিফোন ও ইন্টারনেট, ডাকসেবা ও সংশ্লিষ্ট কাজ, খাদ্যদ্রব্য, কাঁচাবাজার, সড়ক ও নৌপথে সবপ্রকার পণ্য, রাষ্ট্রীয় প্রকল্পের মালামাল, ওষুধ, ওষুধশিল্প, চিকিৎসা সেবা ও চিকিৎসা বিষয়ক সামগ্রী পরিবহন, শিশুখাদ্য, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়া, ত্রাণ, কৃষিপণ্য, শিল্পপণ্য, সার, বীজ, কীটনাশক, পশুখাদ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ খাতের উৎপাদিত পণ্য, দুগ্ধ ও দুগ্ধজাত পণ্য এবং জীবনধারণের মৌলিক পণ্য উৎপাদন ও পরিবহন এ নিষেধাজ্ঞার আওতামুক্ত থাকবে।

এদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঈদের আগে কোনো যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল করবেনা বলে জানিয়েছেন নৌ-পরিবহন সচিব মোহম্মদ মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী।

তিনি বলেন, সরকারি আদেশে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সচিব জানান, লঞ্চে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রী পরিবহন সম্ভব নয় তাই এমন সিদ্ধান্ত। এরআগে মন্ত্রী পরিষদ বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ঈদ পর্যন্ত সব আন্তঃজেলা পরিবহন বন্ধ রাখার আহ্বান জানানো হয়।

প্রতি বছর ঈদের সময় দক্ষিণাঞ্চলের কয়েক লাখ মানুষ নদীপথে বিভিন্ন জেলায় যাত্রা করে থাকে। দেড় মাসেরও বেশি সময় ধরে আন্তঃজেলা লঞ্চ চলাচল বন্ধ রয়েছে।

আজ দুপুরে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশে বলা হয়, আগামী ১৭ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত সাধারণ ছুটির মেয়াদ কার্যকর থাকবে। ২১ মে শবে কদরের সরকারি ছুটি, ২২, ২৩, ২৯ ও ৩০ মে সাপ্তাহিক ছুটি (শুক্র ও শনিবার) এবং ২৪, ২৫ ও ২৬ মে ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটি এই সাধারণ ছুটির অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

আদেশে আরও বলা হয়, সাধারণ ছুটির এই সময়ে এক জেলা থেকে অন্য জেলা এবং এক উপজেলা থেকে অন্য উপজেলায় জনসাধারণের চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই নিয়ন্ত্রণ সতর্কভাবে বাস্তবায়ণ করবে। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। রাত ৮টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত অতি জরুরি প্রয়োজন ছাড়া (প্রয়োজনীয় বেচাকেনা, ওষুধ কেনা, চিকিৎসাসেবা, মৃতদেহ দাফন/সৎকার) কোনোভাবেই বাড়ির বাইরে আসা যাবে না। ছুটির মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের জারি করা নির্দেশমালাও কঠোরভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (১৪ মে ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাস শনাক্তে আরও সাত হাজার ৮৩৭টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় সাত হাজার ৩৯২টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো এক লাখ ৫১ হাজার ৯৩০টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় আরও এক হাজার ৪১ জনের দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ৮৬৩ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ১৪ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ২৮৩-এ।

আমাদের বাণী ডট/১৪ মে ২০২০/পিবিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।