গ্রেড পরিবর্তনের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন প্রাথমিক বিদ‌্যালয়ের শিক্ষকরা। দাবি না মানলে আসন্ন প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা বর্জনেরও ঘোষণা দিয়েছেন তারা। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষকরা জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন বলে জানা গেছে। দফায় দফায় বৈঠক করছেন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে। এর অংশ হিসেবে ফের প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আকরাম আল হোসেনের সঙ্গে বৈঠক কিরেছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় সচিবের কার্যালয়ে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ও শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে কথা হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ, শিক্ষক নেতা আনিসুর রহমান, মো. বদরুল আলম, আনোয়ারুল ইসলাম তোতা, আবদুল্লাহ সরকার, আবুল কাশেম প্রমুখ।

জানা গেছে, গণশিক্ষা সচিব শিক্ষকদের প্রতি অনুরোধ করেছেন সমাপনী পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি থেকে সরে আসতে। সচিব এ সময় জানান, এই মুহূর্তে প্রধান শিক্ষকদের ১১তম ও সহকারীদের ১৩ গ্রেড দেওয়া ছাড়া উপায় নেই। তবে শিক্ষকদের মহাজোট তা প্রত্যাখ্যান করেছে। মহাজোটের কর্মসূচী চলবে।

জানা গেছে, ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত দাবি মেনে নেওয়ার জন্য মহাজোট সরকারকে সময় দিয়েছেন। ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে মহাসমাবেশের মাধ্যমে দাবী আদায় না হলে জানুয়ারি থেকে দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি।

জানা যায়, দাবির বিষয়ে গত সপ্তাহে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. এ এফ এম মনজুর কাদিরের সঙ্গে বৈঠকে বসেন শিক্ষক নেতারা। পরে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন তারা। সেখানে এসব দাবি তুলে ধরেন শিক্ষকরা।

বৈঠক সূত্র জানায়, সভায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা নেয়ার অনুরোধ করেন শিক্ষকদেরকে। এ সময় শিক্ষকরা তাদের দীর্ঘদিন ধরে জানিয়ে আসা দাবির যৌক্তিকতা তুলে ধরেন। বিশেষত প্রধান শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেড মেনে নেয়ার সুনির্দিষ্ট আশ্বাস চান।

জবাবে মহাপরিচালক এ বিষয়ে সরকারের অবস্থান তুলে ধরে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে অবগত আছেন। এ সময় শিক্ষক নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার ব্যবস্থা করতে অনুরোধ করেন। তবে এ বিষয়ে তার এখতিয়ানে নেই, জানিয়ে প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান ড. মনজুর কাদির।

একই বিষয়ে শিক্ষকরা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেছেন বলে জানা গেছে। সেখানে দাবি মেনে নেয়া, ২ হাজার ৭০০ শিক্ষকের বিরুদ্ধে শোকজ নোটিশ প্রত্যাহার এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেন।

প্রতিমন্ত্রী তাদেরকে আশ্বাস্ত করে বলেন, প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক। তিনি এ বিষয়টি দ্রুত সমাধান করার নির্দেশ দিয়েছেন।

সমাপনী পরীক্ষায় বিঘ্ন সৃষ্টি না করার অনুরোধ জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, পাবলিক পরীক্ষার কথা বিবেচনা করে শিক্ষকদের বর্জনের কর্মসূচি থেকে সরে আসতে হবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।