জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে আগামীকাল রোববার থেকে অনশন কর্মসূচি পালন করবে চার হাজার ১৫৯টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে শনিবার (২৯ জুন) সকাল থেকে প্রতীকী অনশন পালন করছেন তারা। সেখান থেকেই এ ঘোষণা দেয় শিক্ষকরা।

শনিবার বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ মামুনুর রশিদ খোকন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। চলতি মাসের ১৬ তারিখ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি শুরু হয়।

বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোঃ মামুনুর রশিদ খোকনের সভাপতিত্বে এবং মহাসচিব কামাল হোসেনের উপস্থাপনায় জাতীয়করণ থেকে বঞ্চিত সকল বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এ কর্মসূচিতে অংশ নেয়। আজ শনিবারের মধ্যে দাবি মানা না হলে রোববার থেকে অনশনে যাবারও ঘোষণা দেন শিক্ষকরা।

শিক্ষকরা জানায়, জাতীয়করণের দাবিতে দেশের বিভিন্ন উপজেলা ও জেলা হতে হাজার হাজার বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ অংশ গ্রহণ করছেন। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মোঃ জাকির হোসেন এমপি মহোদয়ের সাথে দেখা করলে তিনি শিক্ষকদের আশ্বস্ত করেছেন দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সাথে আলোচনা করে এই বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। কিন্তু তার অগ্রগতি নেই।

শিক্ষকরা বলেন, ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়ে জাতির পিতার মত আরও একটি ইতিহাস রচনা করলেন। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, জাতীয়করণকালীন ২৬ হাজার ১৯৩টি বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিসংখ্যান করা হয়েছিল তার সংখ্যা যথাযথ না হওয়ায় জাতীয়করণযোগ্য আরো কিছু সংখ্যক বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও কর্মরত শিক্ষকগণ বঞ্চিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর ততকালীন বিএনপি জামাত জোট সরকারের সীমাহীন দলীয়করণ ও বে-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর রেজিট্রেশন বন্ধ করে দিলে শিক্ষকরা বেতন ভাতা ও ছাত্র-ছাত্রীরা উপবৃত্তি ও মিটডে মিল থেকে বঞ্চিত হয়। আওয়ামী লীগ যেহেতু শিক্ষা বান্ধব সরকার, আর শিক্ষকরাও আওয়ামী পরিবারের সন্তান। তাই প্রধানমন্ত্রী ছাড়া এসব বিদ্যালয় জাতীয়করণের কোনো আশা নেই।

শিক্ষকরা আররো জানান, বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণ না হওয়ায় আমরা মানবেতর জীবন যাপন করছি। শিক্ষক হয়েও সমাজের কাছে অবহেলিতক্তি হিসাবে পরিচিত হয়েছি। মা-বাবা স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে দিন কাটছে অভাব অনটনে।

আন্দোলনে অংশ নেয়া শিক্ষকরা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে আজ পর্যন্ত বঞ্চিত এসব বিদ্যালয় প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেও জাতীয়করণের আওতাভূক্ত করা হয়নি। আমাদেরকে বঞ্চিত করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই। অবিলম্বে বিদ্যালয়গুলোকে জাতীয়করণের আওতায় আনার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

এদিকে আজ পর্যন্ত কর্মসূচিতে অংশ নেয়া ৭৯জন শিক্ষক-শিক্ষিকা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অসুস্থরা হলেন- সুভন্দ্রা বৈরাগী, মোছাঃ ছালেহা খাতুন, মোছাঃ আসমা খাতুন, মোছাঃ রিনা বেগম, মোছাঃ আকলিমা, মোঃ এনামুল হক, ধরনী মহন রায়, মোঃ সানাউল হক, মোঃ ফজলুল হক, মশিয়ার রহমান, লায়লা পারভীন, সেকেন্দার, মিনা আক্তার, মোবারক হোসেন, মীর আমির হামজা, শাহাজান আলী, মশিউর রহমান, তাসলিমা আক্তার, মফিজুল ইসলাম, আ: মালেক, আ: বাশেদ, নাজমুল সালাম, কল্পনা, লিমা আক্তার, রূপসী বেগম, শাহাজাহান, আবুল কালাম বেলু, সিদ্দিক, রুবেল, তাছলিমা, সালমা রহমান, রফিক, খলিল, আব্দুল হাই, রুহুল আমিন, শাহনাজ পারভীনসহ অন্যরা।

১৪তম দিনের কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, ধরনী মহন রায়, আ: মতিন, শাহজাহান মিয়া, মিজান, বোরহান, সবুজ আহমেদ, বেলাল, রায়হান, রফিক, তাছলিমা আক্তার, অহিদুজ্জামান, রাবিয়া বশ্রী, জুয়েল মিয়া, নাজিয়া জাহান, মালা, সেলিম, জাকির হোসেন, হাসান, তোফায়েল আহমেদ, নাছরিন, প্রতিভা বিশ্বাস, নওশাদ প্রমূখ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।