ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা;  প্রায় ৪০ ধরনের কাগজপত্র প্রস্তুত করে রাখতে হবে নতুন এমপিওভুক্ত ও স্তর পরিবর্তন হওয়া প্রতিষ্ঠান ও শিক্ষক-কর্মচারীদের। তবে কারো কারো জন্য দুই একটি কাগজ নাও লাগতে পারে। যারা এনটিআরসিএর মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন তাদের যেসব কাগজ লাগবে কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ বা এনটিআরসিএ শুরুর আগের নিয়োগ যারা তাদের জন্য কিছু ভিন্নতা রয়েছে।

এছাড়া স্তর পরিবর্তন, স্কুল-কলেজ, কারিগরি ও মাদরাসা ক্ষেত্রে কিছু কাগজের ভিন্নতা থাকতে পারে। তবে মোটামুটি নিম্নবর্ণিত কাগজগুলো রেডি রাখার পরামর্শ থাকলো। ইএমআইএস ও মেমিসে প্রবেশের পর জানতে ও দেখতে পারবেন আপনার কোনগুলো প্রয়োজন।

যে ৪০টি কাগজ প্রয়োজন হবে- প্রতিষ্ঠান প্রধানের স্বাক্ষরিত ও সভাপতির প্রতিস্বাক্ষরিত অগ্রায়ন পত্র, ছবিযুক্ত শিক্ষক/কর্মচারীর তথ্য সম্বলিত পূরণকৃত আবেদন পত্র, এসএসসি সনদ(মূল কপি), এইচএসসি সনদ (মূল কপি), বি এ (স্নাতক/সম্মান) সনদ মূল কপি, এম এ সনদ (মূল কপি), অন্যান্য সদন (যদি থাকে), বিএড সনন (মূল কপি), এনটিআরসিএ সনদ (মূল কপি), বিএ নম্বরপত্র (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শেষ অর্জিত সনদের নম্বরপত্র), নিয়োগপত্র (মূল কপি), যোগদানপত্র (মূল কপি), ব্যাংক একাউন্ট খোলার প্রত্যয়ন ও টাকা জমার রশিদ, সংশ্লিষ্ট বিষয়/ বিভাগে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা (e-SIF/TOT list),গ্রন্থাগার সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র, ল্যাব সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ল্যাব সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রত্যয়ন পত্র, প্রতিষ্ঠান প্রধান কর্তৃক ল্যাব সংক্রান্ত হালনাগাদ প্রত্যয়ন পত্র।

এছাড়া শিক্ষক কর্মচারীর নামের তালিকা, স্পষ্টকরণ (কাঙ্ক্ষিত পদ কিভাবে শূন্য হলো ও তৎসংক্রান্ত কাগজপত্র), নন-ড্রয়াল ব্যাংক সনদ ও স্টেটমেন্ট (মূল কপি), প্রতিষ্ঠানের শেষ স্বীকৃতি ও অধিভুক্তি পত্রের কপি, সর্বশেষ/বর্তমান কমিটি অনুমোদনের কপি, প্রতিষ্ঠানের অবস্থান সনদের মূল কপি, পদশূন্য ঘোষণা ও বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের রেজুলেশন, বাছাই কমিটি ও নিয়োগ বোর্ড গঠন, নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের সুপারিশ, নিয়োগপত্র ইস্যুকরণ/অনুমোদনের রেজুলেশন, যোগদান অনুমোদন রেজুলেশন, নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পত্রিকার মূল কপি, প্রতিষ্ঠানের প্রথম এমপিও কপি, প্রতিষ্ঠানের শেষ এমপিও কপি, নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল শীট (মূল কপি)/ e-Requistion, Recommendation Letter of NTRCA, বিষয় বা বিভাগ অনুমোদনের কপি, শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা, ডিজি প্রতিনিধির চিটি/ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধির চিটি, অন্যান্য কাগজপত্র এবং ৩০০ টাকার নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা।

নতুন এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা যেভাবে রেজিস্ট্রেশন করবেন

এমপিওর জন্য নতুন তালিকাভুক্ত ও স্তর পরিবর্তনকৃত স্কুল ও কলেজ শিক্ষকদেরকে ইএমআইএস-এ (emis.gov.bd) গিয়ে প্রথমেই রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনে যেসব তথ্য লাগবে। তা এখনই প্রস্তত করে রাখুন। এটা প্রথম ধাপ। এটা শিক্ষকদের করতেই হবে। এই নিবন্ধন করার পরের কাজ প্রতিষ্ঠান প্রধানের। তারা প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত আরো অনেক তথ্য এমপিওর সফটওয়ারে আপলোড করবেন। প্রতিষ্ঠান প্রধানরা তাদের কাছে থাকা পাসওয়ার্ড দিয়ে সফটওয়্যারে ঢুকে যাবতীয় তথ্য দেবেন। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কাছে পাসওয়ার্ড পাঠানো হবে। না পেলে জেলা বা উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকেও পাওয়া যাবে।

ইএমআইএস-এ ঢুকে উপরের ডানদিকে দুটি মেনুবার। একটি register আরেকটি login। নতুন শিক্ষকরা register মেনুতে ক্লিক করবেন। এরপর দেখবেন ইংরেজিতে লেখা online registration পাতা খুলেছে। তার ঠিক নিচেই দেখবেন ইংরেজিতে লেখা রয়েছে দুটি মেনুবার একটি non-govt college teacher অপরটি non-govt school teacher। আপনি যে ধরনের শিক্ষক সেই মেন্যুতে যাবেন।

নিবন্ধনের জন্য শিক্ষকদের যা দরকার হবে। ১. নাম (একবার বাংলায় একবার ইংরেজিতে)। ২. পিতা ও মাতার নাম ইংরেজিতে। ৩. জন্মতারিখ। ৪. জাতীয় পরিচয়পত্র। ৫. মোবাইল নম্বর। ৬. নিজ জেলা। ৭. ব্যক্তিগত ইমেইল। ভুল ইমেইল হলে চলবে না্। ৭. পদের ধরণ, বিষয় ও নিয়োগ সুপারিশকারী। ৮. বর্তমান পদবি ও প্রতিষ্ঠানের নাম। ৯. যোগদানের তারিখ। ১০. এনটিআরসিএ পরীক্ষার বছর ও রোল নং। ১১. নিজের স্কান করা ছবি আপলোড করবেন। ১২. নিয়োগ সংক্রান্ত সংযুক্তি যেমন নিয়োগ ও যোগদানপত্র স্কান করে আপলোড করতে হবে।

আজ ২ মে সকাল থেকে শত চেষ্টা করেও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের ইএমআইএস সাইটে ঢুকতে পারেননি অধিকাংশ শিক্ষক। অনেক চেষ্টার পর দুপুরে একবার ঢুকতে পারলেও কোড নম্বর না পাওয়ায় এমপিওভুক্তির জন্য সফটওয়্যারে ঢুকে আবেদন করতে পারছেন না। অথচ আবেদন শুরুর আগেই তাদের কাছে কোড নম্বর দেয়ার আদেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কোড নম্বর না পেয়ে উপজেল ও জেলা শিক্ষা অফিসে যোগাযোগ করলে কর্মকর্তারাও কোনো সমাধান দিতে পারেননি। অনেকেই বলেছেন তারা কিছুই জানেন না।

নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষক কর্মচরাীদের তথ্য প্রদানের সময়সীমা বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম। এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানিয়েছে নতুন এমপিওভুক্ত স্কুল ও কলেজ ব্যানবেইজে তথ্য পাঠাতে মাত্র (২-৪মে)দুই দিন সময় দেয়া হয়েছে।

করোনার প্রাদুর্ভাবে দেশে লক ডাউন চলছে। সকল কম্পিউউটার সেবা বন্ধ। কারিগরি অধিদপ্তর বলছে হার্ড কপি জমা দিতে। কিন্তু সকল যানবাহন বন্ধ। এমতাবস্থায় দুই দিনের মধ্যে তথ্য সূচারুভাবে সমপন্ন করে পাঠানো বা প্রেরণ করা সম্ভবপর হবে না। বিষয়গুলো বিবেচনা করে তথ্য প্রদান এবং কাগজপত্র জমাদানের সময় আগামী ১০ মে পর্যন্ত বৃদ্ধি করার দাবি জানিয়েছে এই সংগঠনটি।

আমাদের বাণী ডট কম/০২ মে ২০২০/পিপিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।