ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা; ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রণয়ণে প্রভাব ফেলেছে করোনা মহামারীতে তৈরি হওয়া সংকট। দেশের স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজাতে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ২৯ হাজার ২৪৬ কোটি টাকা। এর বাইরে করোনা সংকট উত্তরণে বিশেষ প্রণোদনায় বরাদ্দ থাকছে ১০ হাজার কোটি টাকা। মহামারী মোকাবেলায় ফ্রন্টলাইনে যারা কাজ করছেন তাদের জন্য রাখা হয়েছে ৮০০ কোটি টাকার থোক বরাদ্দ।

  • অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল স্বাস্থ্য খাতের বরাদ্দ বাড়ানোসহ নতুন বাজেটে একটি ‘মেগা প্ল্যান’ ঘোষণা করবেন এর মধ্যে থাকবে ৩ বছরের মধ্যম এবং ১০ বছরের দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা। অর্থ মন্ত্রণালয়ের একাধিক এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র জানায়, করোনা মহামারী কতদিন স্থায়ী হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। আগামীতে করোনার প্রভাব বেড়ে গেলে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতাল নির্মাণসহ আইসিইউ, ভেন্টিলেশন, সাপোর্ট কেয়ার সরঞ্জাম, করোনাভাইরাস পরীক্ষার কিটসহ নানা যন্ত্রপাতি কিনতে হতে পারে। এছাড়া করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে।

  • ভ্যাকসিন আবিষ্কৃত হয়ে গেলে জরুরি ভিত্তিতে তা আমদানির প্রয়োজন পড়বে। করোনাভাইরাস-সংক্রান্ত নানা ধরনের গবেষণার কাজ চলছে দেশে। সেসব খাতেও এ বরাদ্দ থেকে ব্যয় করার সুযোগ থাকবে।

করোনাভাইরাস মহামারী দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দৈন্য ফুটিয়ে তুলেছে। মেডিকেল টেকনোলজিস্টের অভাবে রোগীর নমুনা সংগ্রহ যেমন বিঘ্নিত হচ্ছে, তেমনি আক্রান্তদের সেবা দিতে পর্যাপ্ত চিকিৎসক ও নার্সের অপ্রতুলতার প্রকাশও ঘটেছে। সেজন্য তড়িঘড়ি করে নিয়োগ দিতে হয়েছে সরকারকে।

  • বিভিন্ন হাসপাতালে আইসিইউ (নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) স্বল্পতার বিষয়ও প্রকাশ্য হয়েছে। সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) সক্ষমতার ঘাটতিও নজরে এসেছে।

সেই অবহেলার গর্ত থেকে এ স্বাস্থ্য খাতকে তুলে আনতে নতুন বাজেটে ‘মেগা প্ল্যান’ ঘোষণা করা হচ্ছে বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

  • জানা গেছে, করোনার প্রভাবে কর্মহীনদের কথা বিবেচনায় নিয়ে বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতা বাড়ানো হচ্ছে। কর্মসৃজনের কর্মসূচিও থাকছে। ভিজিডি, ভিজিএফের আওতায় খাদ্যসহায়তা কর্মসূচিতে বাড়তি বরাদ্দ রাখা হচ্ছে। তা সত্ত্বেও করোনাভাইরাসের প্রভাবে জরুরিভাবে অতিরিক্ত ত্রাণ বিতরণের প্রয়োজন হলে এই থোক বরাদ্দ থেকে অর্থ সংস্থান করা হবে।

ফ্রন্টলাইনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনা সংক্রমিত হয়ে যারা মারা যাবেন, তাদের জন্য বাজেটে ৮০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বরাদ্দ রাখা অর্থ থেকে এ রোগে আক্রান্তদেরও বিশেষ প্রণোদনার সুযোগ রয়েছে।

এর আগে স্বাস্থ্য খাতে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া ২ লাখ ৫ হাজার ১৪৫ কোটি টাকার বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে ১৩ হাজার ৩৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (১০   জুন ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৩৭  জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ১০১২  জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৯০  জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭৪ হাজার ৮৬৫ জনে। নতুন করে সুস্থ্য হয়েছে ৫৬৩ জন এবং মোট সুস্থ হয়েছেন ১৫৮৯৯ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা সংগ্রহ হয়েছে ১৬ হাজার ৯৯৪টি। আর নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৫ হাজার ৯৬৫টি। ২৪ ঘণ্টায় এই সংগৃহীত নমুনা থেকে শনাক্ত রোগী পেয়েছি ৩ হাজার ১৯০ জন। শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ। এ পর্যন্ত পরীক্ষা হয়েছে ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫৬০টি নমুনা এবং এ পর্যন্ত শনাক্ত হয়েছে ৭৪ হাজার ৮৬৫ জন।’

আমাদের বাণী ডট কম/১১ জুন ২০২০/ডিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।