ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা; করোনাভাইরাস মহামারীতে দেশের পাঁচ জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ব্র্যাকের এক জরিপে এ তথ্য প্রকাশ হয়েছে।

  • করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জনমানুষের পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পেতে ব্র্যাক সম্প্রতি ওই জরিপটি পরিচালনা করে। গত ৯ মে থেকে ১৩ মে পর্যন্ত দেশের ৬৪ জেলায় পরিচালিত এই জরিপে বিভিন্ন আর্থসামাজিক অবস্থার ২ হাজার ৩১৭ জন অংশ নিয়েছেন। যার ৬৮ ভাগ গ্রামাঞ্চল ও ৩২ ভাগ নগর এলাকার বাসিন্দা।

গতকাল মঙ্গলবার (০৯ জুন ২০২০)  এক ডিজিটাল সংবাদ সম্মেলনে এই জরিপের ফলাফল তুলে ধরা হয়।

  • জরিপে বলা হয়, আর্থিক কর্মকাণ্ডের দিক থেকে নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছেন ২৮ শতাংশ ব্যক্তি। সাধারণ ছুটি শুরু হওয়ার আগে যেখানে খানাভিত্তিক গড় মাসিক আয় ছিল ২৪ হাজার ৫৬৫ টাকা। সেখানে মে মাসে ৭৬ ভাগ কমে ৭ হাজার ৯৬ টাকায় নেমে আসে। শহর এলাকায় আয় কমার হার (৭৯ ভাগ) গ্রাম অঞ্চলের (৭৫ ভাগ) তুলনায় কিছুটা বেশি। পাঁচ জেলা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত বলে জরিপে বেরিয়ে এসেছে। এগুলো হলো পিরোজপুর (৯৬ ভাগ), কক্সবাজার (৯৫ ভাগ), রাঙামাটি (৯৫ ভাগ), গাইবান্ধা (৯৪ ভাগ) ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া (৯৩ ভাগ)।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবেলার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জনমানুষের পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পেতে ব্র্যাক সম্প্রতি এ জরিপটি পরিচালনা করে। গত ৯ মে থেকে ১৩ মে পর্যন্ত দেশের ৬৪ জেলায় পরিচালিত এই জরিপে বিভিন্ন আর্থসামাজিক অবস্থার ২ হাজার ৩১৭ জন অংশ নিয়েছেন। যার ৬৮ ভাগ গ্রামাঞ্চল ও ৩২ ভাগ নগর এলাকার বাসিন্দা।

  • করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ঘোষিত ছুটির ফলে ৯৫ ভাগ মানুষ উপার্জনের দিক থেকে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। ৫১ ভাগ মানুষের খানাভিত্তিক আয় শূন্যে নেমে এসেছে। দৈনিক মজুরির ওপর নির্ভরশীল ও স্বল্প আয়ের মানুষদের ৬২ শতাংশ চাকরি বা উপার্জনের সুযোগ হারিয়েছেন।

ডিজিটাল সংবাদ সম্মেলনে প্যানেল আলোচক প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বিষয়ক বিভাগের সাবেক প্রধান সমন্বয়কারী আবুল কালাম আজাদ বলেন, দেশের সব ক্ষুদ্র ঋণ সংস্থা এবং এনজিওগুলোকে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে তাদের সঞ্চয় ব্র্যাককে অনুসরণ করা উচিত। সরকার শ্রমঘন খাতকে আর্থিক সহায়তা দেয়ার চেষ্টা করছে। যাতে নতুন কর্মসংস্থানের সৃষ্টি করা যায়। প্রবাসফেরত শ্রমিকদের দক্ষতা উন্নয়ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। যাতে তারা কাজ ফেরত পায়।

  • বাংলাদেশে ইউএনডিপির আবাসিক প্রতিনিধি সুদীপ্ত মুখার্জী এই মহামারীর সংকট মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার ওপর জোর দেন।

তিনি বলেন, কাউকে পেছনে ফেলে যাওয়ার উপায় নেই। সেবার দ্বৈততা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার চেয়ে এটাই বেশি জরুরি। বাংলাদেশের মতো কল্যাণ রাষ্ট্রের জন্য সার্বজনীন সুরক্ষার ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি।

  • ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক কেএএম মোর্শেদের পরিচালনায় ডিজিটাল সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের ঊর্ধ্বতন পরিচালক শামেরান আবেদ, প্রথম আলোর যুগ্ম সম্পাদক মিজানুর রহমান খান, ব্র্যাকের পরিচালক নবনীতা চৌধুরী প্রমুখ।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (০৯  জুন ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৪৫ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯)। ফলে ভাইরাসটিতে মোট ৯৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে করোনায় আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন ৩ হাজার ১৭১ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়াল ৭১ হাজার ৬৭৫জনে। নতুন করে সুস্থ্য হয়েছে ৭৭৭ জন এবং মোট সুস্থ হয়েছেন ১৫৩৩৬জন।গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৫টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১৪ হাজার ৬৬৪টি। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৪ লাখ ২৫ হাজার ৫৯৫টি। ২৪ ঘণ্টায় এই সংগৃহীত নমুনা থেকে শনাক্ত রোগী পেয়েছি ৩ হাজার ১৭১ জন। শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৬২ শতাংশ।’ ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছে ৭৭৭ জন। মোট সুস্থ হয়েছে ১৫ হাজার ৩৩৬ জন। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ২১ দশমিক ৪০ শতাংশ। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণ করেছে ৪৫ জন। এ পর্যন্ত মৃত্যু দাঁড়ালো ৯৭৫ জন। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩৬ শতাংশ। মৃত্যুর বিশ্লেষণে পুরুষ ৩৩ জন, নারী ১২ জন।

আমাদের বাণী ডট কম/১০ জুন ২০২০/ডিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।