নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা;  করোনায় আক্রান্ত হয়ে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জের নীলকান্ত সরকারি কলেজের দর্শন বিভাগের অধ্যাপকের মৃত্যু হয়েছে। মারা যাওয়া অধ্যাপকের নাম আল মামুন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।

গত মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, আল মামুনের বাড়ি নাটোরের লালপুর থানার চক মশুরিয়া গ্রামে। তিনি স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকী, দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার সুবিধার্থে তার স্ত্রী সাভারে থাকতেন। করোনা পরিস্থিতিতে কলেজ বন্ধ থাকায় আল মামুন সাভারের বাসায় ছিলেন। গত ২৪ মে করোনা পজিটিভ হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হন। ২৫ মে তাকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ার একপর্যায়ে তিনি মারা যান। তাকে রাজধানীর রায়েরবাজার কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।

আল মামুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দর্শন বিভাগে ১৯৯০–৯১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন, ১৯৯৪ সালে স্নাতকোত্তর ডিগ্রী নেন, এরপর শুরু করেন শিক্ষকতা। ১৯৯০–১৯৯১ ব্যাচের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা আল মামুনের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। শোক বিবৃতিতে সহপাঠীরা বলেন, আল মামুন সততা ও নিষ্ঠার সাথে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন।

এদিকে বুধবার দেশে–বিদেশে অবস্থানরত আল মামুনের সহপাঠীরা তার পরিবারের পাশে দাঁড়ানো ও সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় মেটাফিজিয়ানস ৯৪’ গ্রুপে ব্যাংক হিসাব ও বিকাশ নম্বর দিয়ে সহপাঠীরা তার পরিবারের পাশে দাঁড়াতে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।

সরকারের উপসচিব ও আল মামুনের সহপাঠী আবুল কালাম আজাদ গতকল বুধবার এই তথ্য জানান।

আল মামুনের আরেক সহপাঠী নূরুল আমিন বলেন, ‘আল মামুনের তিন সন্তান লেখাপড়া করে। উপার্জনক্ষম আর কেউ নেই, পরিবারটির সঞ্চয় বলতে তেমন কিছু নেই। এ জন্য সহপাঠীরা এই উদ্যোগ নিয়েছেন।’

স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (২৭ মে ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় সাত হাজার ৮৪৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় আগের কিছু মিলিয়ে আট হাজার ১৫টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো দুই লাখ ৬৬ হাজার ৪৫৬টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার উপস্থিতি পাওয়া গেছে আরও এক হাজার ৫৪১ জনের দেহে। নমুনা পরীক্ষার তুলনায় গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ২২ শতাংশ। এ নিয়ে দেশে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ হাজার ২৯২ জন। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ২২ জন। ফলে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ৫৪৪ জনে। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ৩৪৬ জন এবং এ পর্যন্ত সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৭ হাজার ৯২৫ জন। সুস্থতার হার ২০.৭৪ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১.৪২ শতাংশ। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে জানানো হয়, পুরুষ ২০ জন ও নারী দুইজন। বয়স বিশ্লেষণে জানা যায়, ০-১০ বছরের মধ্যে একজন, ২১-৩০ দুইজন, ৩১-৪০ দুইজন, ৪১-৫০ দুইজন, ৫১-৬০ সাতজন, ৬১-৭০ সাতজন, ৭১-৮০ বছরের মধ্যে একজন।

আমাদের বাণী ডট কম/২৭  মে ২০২০/সিসিপি 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।