প্রস্তাবিত বাজেট বিশ্লেষণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও শিক্ষাবিদ রাশেদা কে চৌধুরী একটি অনলাইন পোর্টালকে বলেন, ২০১৯-২০ সালের প্রস্তাবিত জাতীয় বাজেটে শিক্ষা খাতে ১১ দশমিক ৮ শতাংশ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত ৭-৮ বছর ধরে আমরা ১১ থেকে সাড়ে ১১ শতাংশের মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছি। দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে শিক্ষা খাতে এটি নিম্নতম বাজেট। উন্নত শিক্ষার আমরা যে স্বপ্ন দেখছি এ বাজেট দিয়ে তা বাস্তবায়ন কিভাবে সম্ভব? বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নতুন প্রজন্মকে বিনির্মাণ করতে হলে বিনিয়োগ ছাড়া কোনোভাবে তা সম্ভব নয়।

রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, সরকার বলছে বাজেটের সংখ্যা কম হলেও টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে, তাই যদি হয় তবে প্রতিবছর শিক্ষার্থীর সংখ্যাও তো হু হু করে বাড়ছে, সেটিও তো বিবেচনা করতে হবে। ছাত্রছাত্রীর প্রতি বিনিয়োগ বাড়েনি। এবার নতুন দুটি বিষয় আনা হয়েছে। তার মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তি করা ও উচ্চশিক্ষায় গবেষণায় বরাদ্দ বাড়ানো বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে। এমপিওভুক্তি করলে যে শিক্ষার মান বাড়বে সেটি নিশ্চিত নয়, তবে এটি ব্যবস্থাপনায় ক্রটি থেকেই যাচ্ছে, কাদের এমপিওভুক্তি করা হবে সেটিও সুনির্দিষ্ট করা দরকার।

অন্যদিকে কিভাবে গবেষণা বাড়ানো হবে সে বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা দেয়া হয়নি মন্তব্য করে এই শিক্ষাবিদ বলেন, কিভাবে গবেষণা কার্যক্রম বাড়ানো হবে সেটিও স্পষ্ট করে উল্লেখ করা দরকার। বেসরকারি খাতের গবেষণা না বাড়ালে বাংলাদেশের গবেষণায় কাঙ্ক্ষিত সফলতা সম্ভব নয়। এর জন্য রাষ্ট্রীয় প্রণোদনা দরকার। কৃষি খাতে যেমন বরাদ্দ বাড়িয়ে সফল হয়েছে। সিঙ্গাপুর, চীন ও শ্রীলংকা শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ বাড়িয়ে অনেক উপরে উঠে গেছে। শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ না বাড়ালে বৈষম্য কমানোর সরকারের যে অঙ্গীকার তা বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না।

রাশেদা কে চৌধুরী আরও বলেন, গতানুগতিক বাজেট দিয়ে মানসম্মত শিক্ষা বাস্তবায়ন সম্ভব নয়, টেকসই লক্ষ্যমাত্রা তো দূরের কথা। শিক্ষা খাতে যে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে তা দিয়ে ভালো কিছু আশা করা যাবে না। শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানোর বিষয়টি বর্তমান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার রয়েছে। মোট বাজেটে ২০ শতাংশ না হলেও প্রতি বছর শিক্ষা খাতে কিছু কিছু করে আকার বাড়ানো দরকার, নতুবা আমরা কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে সক্ষম হব না।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।