কুষ্টিয়া সদর থানার মাদক মামলায় তিনজনের এবং দৌলতপুর থানার পৃথক নারী পাচার মামলায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ অর্থদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার (০৫ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের বিচারক মুন্সী মো: মশিয়ার রহমান জনাকীর্ণ আদালতে আসামীদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষনা করেন।

মাদক মামলায় যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন- সদর উপজেলার মজমপুর (ঝাউতলা গলি)র আজাহার আলীর ছেলে মহিরুল ওরফে মহিদুল (৫০), মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজীপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে শিশির ওরফে নাহিদ (৪০) এবং ফজল মন্ডলের ছেলে কাজল (৩২)। এছাড়াও এ মামলায় আসামী মহিদুলের স্ত্রী রানী খাতুন (৩০) এবং পলাতক আসামী কাজীপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে হাসানকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডসহ অর্থ দন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

অপরদিকে দৌলতপুর থানার নারী পাচার মামলায় উপজেলার চামনাই আল্লারদর্গা গ্রামের বাদল মন্ডলের ছেলে মো: সেলিম রেজা (৩৮)কে যাবজ্জীবনসহ এক লক্ষ টাকা জরিমানা আদেশ দিয়েছেন আদালত।

আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ০৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় র‌্যাব-১২, সিপিসি-১ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের অভিযানিক দল আসামী মহিরুল ওরফে মহিদুলের নিজ বাড়িতে অভিযানকালে ৫৪২ বোতল ফেন্সিডিল এবং ১৩শ ৯০পিস ইয়াবাসহ মাদক ক্রয়-বিক্রয়রত আসামীদের আটক করে মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে র‌্যাব সদস্য ডিএডি মনিরুজ্জামান বাদি হয়ে মামলা দায়েরসহ কুষ্টিয়া মডেল থানায় সৌপর্দ করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৮এপ্রিল আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন পুলিশ।

এছাড়া ২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় দৌলতপুর উপজেলার আল্লারদর্গা গ্রামের দিনমজুর আব্দুল করিমের কন্যা রিতা আক্তার ১৯ কে চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসামী সেলিম রেজা তাকে ভারতে পাচার করেন। এঘটনায় ওই তরুণীর পিতা বাদি হয়ে দৌলতপুর থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২র ৬(২) ধারায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন পুলিশ।

আদালতের সরকারী কৌসুলী এ্যাড. অনুপ কুমার নন্দী জানান, কুষ্টিয়া মডেল থানার চিহ্নিত এই মাদক চক্রের মামলায় বিজ্ঞ আদালতের রায়ের মধ্যদিয়ে প্রমাণ হলো- মাদক চক্রের সাথে যারাই জড়িত থাক তাদের পার পাওয়ার কোন পথ নেই। এই প্রথম একই মামলায় ক্রেতা-বিক্রেতা ও বহনকারীসহ পুরোচক্রের সাথে জড়িতদের অপরাধের মানদণ্ডের ভিত্তিতে সাজা দিয়েছেন বিজ্ঞ আদালত।

মামলার প্রধান আসামী মহিরুলকে যাবজ্জীবনের সাথে একলক্ষ, ২ ও ৩ নং আসামীকে ৫০ হাজার টাকা টাকা জরিমানা । অনাদায়ে আরও ১বছর সাজা, এবং ৪ ও ৫নং আসামীর ৫ বছর সাজাসহ ১০হাজার টাকা অনাদায়ে তিনমাসের সাজা দিয়েছেন আদালত।

পৃথক নারী পাচার মামলায় আসামী সেলিম রেজার যাবজ্জীবনসহ একলক্ষ টাকা জরিমানা ধার্যসহ তা আসামীর স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও নিলাম থেকে পাওয়া টাকা বাদির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রদানে বিজ্ঞ আদালত নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন ভারপ্রাপ্ত সরকারী কৌসুলী সাইফুল ইসলাম বাপ্পী।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।