কুষ্টিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মুনসুর আলী চৌধুরীর ব্যবহৃত গাড়িটি না চালিয়ে এবং মেরামত না করেই ভুয়া বিল ভাওচারে সরকারী টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে দুদকের অভিযানকালে তিনি দাবি করেন, অনিয়ম বা দুর্নীতির সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। গাড়ির তেল ও মেরামত দেখিয়ে চালক মাসুদ করিমই সরকারী টাকা আত্মসাত করেছেন বলে তার দাবি এই কর্মকর্তার।

তবে চালক মাসুদ পাল্টা অভিযোগে বলেন, গত তিন মাসে গাড়ি না চালিয়েও ফিলিং ষ্টেশন থেকে ৪৯০ লিটার অকটেন ও মবিল বাবদ ৫৫ হাজার এবং মেরামত বাবদ ৪৫হাজার সরকারী টাকা আত্মসাত করেছেন ডিপিও নিজেই।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার তার গাড়ির তেল ও মেরামত দেখিয়ে কুষ্টিয়া মটরর্স ও মোজাফফর ফিলিং ষ্টেশনের বিল-ভাওচার দাখিল করে সরকারী টাকা আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে জানালেন দুর্নীতি দমন কমিশন কুষ্টিয়ার উপ-পরিচালক মোহমম্মদ জাকারিয়া। শুধুমাত্র একটি গাড়ির খাত থেকেই যদি এমন অনিময় তাহলে অন্যান্য আরও খাতে অনিয়ম দুর্নীতি আছে কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কুষ্টিয়া মজমপুর এলাকাকার মেরামত কারখানা ‘কুষ্টিয়া মটরস’ এর মালিক ঝন্টু মিয়া বলেন, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের ব্যবহৃত ঢাকা মেট্র্রো: ঘ ১৫-২১০৯ কালো রংয়ের গাড়িটি একেবারে আনকোরা নতুন। গত তিন মাসে একদিনও সার্ভিসে আসেনি। ওই গাড়ি সার্ভিসিং বাবদ কোন বিল ভাওচারও দেয়া হয়নি বলে জানালেন ওয়ার্কসপ মালিক।

গত এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের গাড়ির জন্য স্লিপের মাধ্যমে ৪শ ৯০ লিটার অকটেন যার দাম ৪৩ হাজার ৮শ ৬০টাকা নেয়া হয়েছে বলে জানালেন মোজাফ্ফর ফিলিং স্টেশনের ম্যানেজার খায়রুল ইসলাম। পাম্প থেকে নেয়া অকটেনে অন্তত আড়াই হাজার কি:মি: গাড়ি চলার কথা বলে জানালেন পাম্প ম্যানেজার। যেখানে উল্লেখিত সময়কালে গাড়ির ডিজিটাল মিটার রিডিং পাওয়া যাচ্ছে ৬৯৭ কি: মি:।

তিন মাসে ডিপিও যেসব বিল ভাওচারে গাড়ির তেল ও মেরামত বাবদ ৫৫ হাজার ও ৪৫ হাজার সরকারী টাকা আত্মসাত করেছেন সেখানে তার কোন স্বাক্ষর নাই, সব বিল ভাওচারই ভুয়া বলে দাবি গাড়ি চালক মাসুদ করিমের। এই সময়ের মধ্যে দুই দিনের বেশী গাড়ি চালানোই হয়নি বলে দাবি চালকের।

কুষ্টিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মুনসুর আলী চৌধুরী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, গাড়ির তেল ও মেরামত বাবদ যা কিছু করার সবই চালক মাসুদ করেছেন। অনিয়ম বা দুর্নীতির করে থাকলে তার দায় চালকের। এখানে কোন অনিয়ম বা দুর্নীতির সাথে নিজের কোন সম্পর্ক নেই দাবি করেন তিনি।

অভিযোগ আছে অফিস মেইন্ট্যানেন্স, কম্পিউটার খাতের টাকা আত্মসাত ছাড়াও মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে বদলি ও সংযুক্তি বানিজ্য এই অফিসে ওপেন সিক্রেট। এর সবই করেন ডিপিও নিজেই।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।