ঈদে পরিবারের সদস্যদের কেনাকাটার জন্য ব্যাংকে টাকা পাঠিয়েছিলেন সৌদি প্রবাসী রত্না খাতুন। কিন্তু ব্যাংক থেকে সেই টাকা তুলে নিচে নামতেই একদল প্রতারক চক্রের অভিনব প্রতারনায় স্বর্বস্ব খোয়ালেন তার মাতা রোকেয়া খাতুন। সোমবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে কালীগঞ্জ শহরের জনতা ব্যাংক মোড়ে এ প্রতারনার ঘটনাটি ঘটে। এদিকে ঈদের কেনাকাটার স্বর্বস্ব টাকা খুইয়ে ওই দরিদ্র পরিবারটির এবারের ঈদের আনন্দ একেবারেই বিলিন হয়ে গেছে। তাই শোকে মহিলাটি বুক চাপড়ে আহাজারি ও বিলাপ বকছিল জনতা ব্যাংক মোড়ে। ঈদকে সামনে রেখে কালীগঞ্জে শুরু হয়েছে প্রতারনা। আর এ প্রতারনার জন্য দরকার পুলিশ প্রশাসনের টহল জোরদার ও ব্যাংক বা বড় বড় মার্কেটের সামনে পুলিশের টহল বা মোতায়ন রাখা।

প্রতিবছরই কালীগঞ্জ শহরে ঈদের আগে এ ধরনের প্রতারকদের দেখা যায় বিভিন্ন ভাবে প্রতারনা করতে। বিগত বছরের মত এবার পুলিশের টহল জোরদার করা হয়নি। যে কারণে প্রতারকরা এভাবে প্রতারনা করতে সুযোগ পাচ্ছে। প্রতারনার শিকার কালীগঞ্জ শহরের ফয়লা গ্রামের বাসিন্দা রোকেয়া খাতুন জানায়, তার মেয়ে রত্না খাতুন সৌদী আরবে থাকেন। এবারে ঈদে পরিবারের কেনাকাটার জন্য জনতা ব্যাংক কালীগঞ্জ শাখায় তার একাউন্টে ৩০ হাজার ৭৩০ টাকা পাঠায়। তিনি ওই টাকা উত্তোলনের জন্য সোমবার সকালে ব্যাংকে যায়। ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন শেষে নিচে নামতেই ৩ জন বয়স্ক লেবাসধারী লোক তার সামনে এসে দাড়ায়। তারা তাকে সালাম দিয়ে খালাম্মা সন্মোধন করেই প্রতারকদের মধ্যে এক মুরব্বি হুজুরকে দেখিয়ে সালাম দিতে বলে। মহিলাটি তখন ওই হুজুরকে ছালাম দেবার পরই সে বলে তোমার ব্যাগে কত টাকা আছে বের কর। কিন্তু মহিলাটি টাকা বের করতে অস্বিকার করেন। এরপর প্রতারকরা তাদের কাছ থেকে একটি পাথর বের করে মহিলাকে বলেন, তোমার টাকা গুলি পাথরে ছুইয়ে ৪১ কদম হাটলেই টাকা দিগুন হয়ে যাবে। কিন্তু তাতেও মহিলাটি রাজি না হওয়ায় একপর্যায়ে মেডিসিন মেশানো ওই পাথরটি মহিলার মুখের সামনে ধরা মাত্রই হতভম্ব হয়ে পড়ে। এরপর প্রতারকরা মহিলার ব্যাগ থেকে দ্রুত টাকাগুলি নিয়ে চম্পট দেয়। কিছু সময় পর মহিলাটির হুশ ফিরে আসলে ব্যাগে টাকা না পেয়ে বিলাপ ও আহাজারি করতে থাকে।

এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে ঘটনাটি শুনে সেবা সুস্থ করে তাকে থানা পুলিশে পাঠায়। এ বিষয়ে কালীগঞ্জ জনতা ব্যাংকের ম্যানেজার এম এ করিম জানাান, প্রতারনার শিকার ওই মহিলাটি তার ব্যাংকের একজন গ্রাহক। সকালে সে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচে নামার পর প্রতারকদের খপ্পড়ে পড়েছে। ব্যাংক কর্তারা ঘটনটি শোনার পর পরই নিচে নেমে খোজা খুজি করেছেন। পরে তিনি বিষয়টি থানা পুলিশকে জানালে কিছু সময় পরই পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে আসে।

এ বিষয়ে কালীগঞ্জ থানার অফিসাস ইনচার্জ ইউনুচ আলী জানান, ঘটনাটি তিনি শোনা মাত্রই পুলিশের একটি টহলটিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়েছেন। তারা বিসয়টি দেখে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করবে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।