হুমায়ুন কবির, কুষ্টিয়া জেলা সংবাদদাতা; মহামারী করোনাভাইরাসে শিক্ষা কার্যক্রম থমকে যাওয়ার মাঝে এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে উপস্থাপিত হয়েছে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার শোমসপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণীর প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থীদের ঘরে বসে মুঠোফোন, ফেসবুক লাইভ, ইউটিউব চ্যানেল ও বিভিন্ন সময়ে সাজেশন সিট সরবরাহ করে। শিক্ষার্থীদের পিতা মাতাদের পরীক্ষক হিসেবে নিয়োজিত করে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন বিদ্যালয়ের পরিচালনা পরিষদের সদস্য ও শিক্ষকগণ।

মহামারী করোনাভাইরাস এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হওয়ার শুরুতেই মার্চের শেষদিকে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুজ্জামান  ও ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুর রহিম খানের আর্থিক সহযোগিতায় মুঠোফোনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বুদ্ধ করে শিক্ষার্থীদের ঘরে রেখে ফেসবুক লাইভ, ইউটিউব চ্যানেল ও সাজেশন সিট সরবরাহ করে শিক্ষাকার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে চলতি মাসের শেষ সপ্তাহে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস মূল্যায়ন পরীক্ষা ইংরেজি বিষয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশগ্রহণ করে শতাধিক শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক প্রশ্ন তৈরি করে খামের মাধ্যমে অভিভাবকদের মুঠোফোনের ডেকে এনে তাদের হাতে প্রশ্নপত্র ও উত্তরপত্র এর পাতা তুলে দেন। এবং পরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রতিটা শিক্ষার্থীর অভিভাবক পিতামাতাকে পরীক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেন। এতে বাড়িতে বসেই শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষার মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে পেরেছে। একদিকে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিতে পেরে আনন্দিত। অপরদিকে অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের শিক্ষা কার্যক্রম চলমান রাখতে পেরে নিজেরা উচ্ছ্বসিত।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুজ্জামান  বলেন, মহামারি করোনা ভাইরাসে সারাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমের কথা ভেবেই নিজ উদ্যোগে বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আর্থিক সহযোগিতায় মুঠোফোন, ফেসবুক লাইভ, ইউটিউব চ্যানেল ও বিভিন্ন সাজেশন সিট শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে সরবরাহ করে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ার গতি ধরে রাখার চেষ্টা করেছি। এরই ফলশ্রুতিতে আজ দীর্ঘ তিন মাসের ক্লাস-পরীক্ষা মূল্যায়নে শিক্ষার্থীদের প্রকৃত মেধার কোনো কমতি হয়নি।

অপরদিকে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, করোনা কালীন ছুটিতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের প্রচেষ্টায় ভার্চুয়াল শিক্ষায় সকল শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আনন্দিত ও উচ্ছ্বসিত। তিনি আরো বলেন, এ রকম প্রতিটা বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয় তাহলে অবশ্যই শিক্ষার্থীরা বাড়িতে থেকে ক্লাস-পরীক্ষা দিতে পারবে। তবে এ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য অবশ্যই শিক্ষার্থীর অভিভাবক ও শিক্ষকদের এগিয়ে আসতে হবে।

আমাদের বাণী ডট কম/২৯ জুন ২০২০/পিপিএম

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।