বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) সেই বিদায়ী ভিসি প্রফেসর ড. খোন্দকার নাসিরউদ্দিনের ভাতিজা এবার শিক্ষার্থীদের বিরল ভালোবাসা দেখিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের চেয়ারম্যান খন্দকার মাহমুদ পারভেজ ৩৪ শিক্ষার্থীকে শূন্য দিয়েছেন।

তবে এটা নাকি তিনি শিক্ষার্থীদের ভালোবাসার জন্যই করেছেন। যদিও এটি ভালোবাসা নাকি চাচার বিদায়ের প্রতিশোধ, এনিয়ে ক্যাম্পাসে তোলপাড় শুরু হয়েছে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শুধুমাত্র ক্ষমতা প্রদর্শনের জন্য অনৈতিকভাবে শূন্য দিয়েছেন তিনি।

যদিও খন্দকার পারভেজের অভিমত তিনি শিক্ষার্থীদের নিজের সন্তানের মত ভালোবাসেন, তাদের ভালো চান এবং এ কারণে কপি পেস্ট করায় শূন্য দিয়েছেন তিনি। উল্লেখ্য, খন্দকার পারভেজ ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে সেকশন অফিসার হিসেবে যোগদান দেন।

পরে তিনি স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ে দ্বিতীয় শ্রেণি থাকা সত্বেও মাত্র দেড় বছরে ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর হিসেবে পদোন্নতি পান। জানা গেছে, আইআর দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টারের ‘রিফিউজিস মাইগ্রেন্ট এন্ড দ্যা ডিসপ্লেসড’ নামের ওই কোর্সটির ফলাফলে দেখা যায়, ৯৮ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৩৪ জনকে শূন্য দেয়া হয়েছে। এছাড়া এক নম্বর দেয়া হয়েছে ৫ জনকে, ২ দেয়া হয়েছে ১৬ জনকে, ৩ দেয়া হয়েছে ৭ জনকে ৪ দেয়া হয়েছে ৮ জনকে এবং ৫ দেয়া হয়েছে ৮ জনকে। অবশিষ্ট শিক্ষার্থীদেরকে দেয়া হয়েছে পাঁচ এর অধিক নাম্বার।

শূন্যপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তাদের শুধুমাত্র এসাইনমেন্ট পেপার জমা দিতে হয়েছে তা নয় দিতে হয়েছে ভাইভাও। কিন্তু এরপরেও খোন্দকার পারভেজের নিকট থেকে তারা এক নম্বরও অর্জন করতে সক্ষম হননি। শূন্যপ্রাপ্ত একজন জানান, খোন্দকার পারভেজ তার এসাইনমেন্ট পেপার পড়েই দেখেননি। খন্দকার বানানে ‘ই’ এর জায়গায় ‘এ’ লেখায় খাতা ছুড়ে ফেলে দেন তিনি।

আরেক শিক্ষার্থী জানান তিনি এসাইনমেন্টের ভাইভা দিতে গেলে খন্দকার পারভেজ তাকে জানিয়েছেন, ‘তোমার এসাইনমেন্টে বানানে অনেক ভুল রয়েছে তাই আমি তোমাকে ইতিমধ্যে শূন্য দিয়ে দিয়েছি। তুমি আসতে পারো।’ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করেন তারা কয়েকজন মিলে শূন্য দেয়ার কারণ জানতে চাইলে খোন্দকার পারভেজ বলেছেন, ‘আমার ইচ্ছে হয়েছে তাই শূন্য দিয়েছি।’

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ শুধুমাত্র নাম্বার কম দেয়া নয় সর্বদাই স্বেচ্ছাচারী আচরণ করেন এই শিক্ষক, কথায় কথায় শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ক্যারিয়ার ধ্বংস করার হুমকি দেন তিনি। তবে খন্দকার পারভেজ সাংবাদিকদের বলেন, সাত আটজন এসাইনমেন্ট জমা না দেয়ায় শূন্য দিয়েছি।

আর অবশিষ্ট শিক্ষার্থীরা কপি পেস্ট করায় এবং লেখার মান ভালো না হওয়ায় শূন্য দিয়েছি। ভাইভাতেও কিভাবে শূন্য পেলো এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যথাযথ উত্তর না পাওয়ায় শূন্য দিয়েছি’।

এসময় তিনি এও বলেন, শিক্ষার্থীদের তিনি নিজ সন্তানের মতো ভালোবাসেন এবং সর্বদা তাদের সহযোগিতা করেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।