ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের ব্যস্ততম গোয়ালন্দ রেলগেটে নেই বেরিয়ার ঝুঁকি নিয়ে বাঁশ দিয়ে চলছে গেট প্রতিবন্ধকতার কাজ। এ রেলগেট দিয়ে প্রতিদিন ৮টি ট্রেন চলাচল করে, রাজশাহী, খুলনা, পরাদাহ, রাজবাড়ী গোয়ালন্দ গ্রামী।

গত ফেব্রয়ারী মাস থেকে প্রায় ৯ মাস ধরে চলছে এ অবস্থা। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সাথে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের মাধ্যম ব্যস্ততম ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংলগ্ন রেলগেটে বেরিয়ার না থাকায় চরম ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে রেলগেটি। এতে করে অরক্ষিত ওই এলাকায় যে কোনো সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

জানা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের উপর দিয়ে গোয়ালন্দ ঘাট-পোড়াদহ রেল লাইন গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপে¬ক্স এলাকায় ক্রস (ই-২-এ) করেছে। প্রতিদিন এই ব্যবস্ততম রেলগেট পাড়ি দিয়ে ১০/১২ হাজার ছোট বড় যানবাহন চলাচল করে। এ কারনে এ রেলগেটটি অত্যন্ত ব্যস্ততম। কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ এই রেলগেটে স্থায়ী কোন বেরিয়ার নেই।

ব্যবস্ততম এ গেটে গেট কিপারের দায়ীত্বে আছেন ৩জন ব্যক্তি। যারা প্রতিনিয়ত ট্রেন যাতায়াতের সময় জীবনের ঝুকিঁ নিয়েই জনসাধারণের নিরাপত্তা দিতে কেউ লাল পতাকা, কেউ বাস, কেউ সবুজ পতাকা উড়িয়ে দাঁড়িয়ে যান মহাসড়কে যানবাহনের থামাতে।

তবে এক পাশে বাঁশের জড়াজীর্ণ অস্থায়ী বেরিয়ার ব্যবহার করে থাকেন তারা। ট্রেন আসার সংক্ষেত পেলে দায়িত্বরত গেইটম্যানরা বাঁশ কাঁধে করে এনে মহাসড়কের এক পাশে বেরিয়ার হিসেবে ফেলে রাখে। যে কারনেই রেলগেটি ঝুকিঁপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ট্রেন আসার সংকেত পেলে ওই গেটে দায়িত্বরত ৩ইজন গেট কিপার (ম্যান) একটি বাঁশ কাঁধে করে এনে গেটের এক পাশে প্রতিবন্ধক হিসেবে ফেলে রাখেন। অপর পাশে লাল-নীল রং এর পতাকা হাতে ঝুঁকি নিয়ে গাড়ীর সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন একজন গেটম্যান।

অনেক সময় দ্রুত গতির যানবাহনগুলো বাঁশের তোয়াক্কা না করে রেল লাইনের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। কখনও দেখা যায় ট্রেন একটু দূরে থাকায় গেটম্যানকে তোয়াক্কা না করে কোনো কোনো যানবাহন গেট পার হয়ে চলে যায়। এঅবস্থায় হঠাৎ কোনো যানবাহন লাইনের মধ্যে এসে ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলে ঘটতে পারে বড় ধরণের দুর্ঘটনা।

গেইট কিপার ( গেইট ম্যান) সফিকুল ইসলাম জানান, গত ফেব্রয়ারী মাসের প্রথম দিকে ব্রেরিয়ার দুটি নষ্ট হয়ে যায় প্রথমে মৌখিক পরে ১৮/০২-/২০১৯ তারিখে উর্ধতন উপ সহকারী প্রকৌশলী (কার্য) কে লিখিত ভাবে জানানো হয় পরে ২৮/০২/২০১৯ ইং- অভিযোগটি গ্রহণ করেন।

কিন্তু বিগত ৯মাস অতিবাহিত হলেও কোন সমাধান হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে জীবনের ঝকি নিয়ে ট্রেন আসার সময় হলেই বাস,লাল ও সবুজ পতাকা নিয়ে ব্রেরিয়ারের কাজ করে যাচ্ছি।

তিনি আরো বলেন, কুষ্টিয়া থেকে গোয়ালন্দ ঘাট থেকে পর্যন্ত ৩৮টি রেলগেট ও গুন্টিঘর নতুন নির্মাণ জন্য রেলওয়ের পক্ষ থেকে টেন্ডারের মাধ্যমে কাজ দেওয়া হয় ,, একটি ঠিকাদতী প্রকিষ্ঠানকে।

যার মধ্যে গোয়ালেন্দে আছে ৫টি রেলগেট ও গুন্টিঘর। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রায় প্রতিটি রেল গেট ও গুন্টিঘর আংশিক কাজ করে ফেলে রেখেছে। গোয়ালন্দ গুন্টিঘরটি নির্মাণ হলেও তানেই বাথরুম ও টিবয়েল। যার কারনে আমরা সেটি ব্যবহার করতে পারছি না।

জানা গেছে, মেসার্স মাহবুব অ্যান্ড ব্রাদার্স নামে ঢাকার একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান গোয়ালন্দের ওই গেটসহ রাজবাড়ী জেলার রেল গেটগুলোর মেরামত ও নতুন গেট স্থাপনের দায়িত্ব পেয়েছে।

ওই প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সালাম নামে রাজবাড়ীর একজন প্রভাবশালী স্থানীয় ঠিকাদার ওই কাজগুলোর সাব কন্ট্রাক্ট নিয়েছেন। কিন্তু তিনি এ গেটটির কাজ কিছু টা করেই ফেলে রেখেছেন।

সরেজমিন সোমবার দেখা যায়, সকাল সাড়ে ১১ টায় খুলনা থেকে দৌলতদিয়া গামী নকশী কাঁথা এক্সপ্রেস মেইল ট্রেনটি এ গেট পার হচ্ছিল। এ সময় মিতুল কুমার সরকার ও সোহেল রানা নামে দুইজন গেটম্যান একটি বাঁশ দিয়ে মহাসড়কের গাড়ী আটকে দেয়।

মেইল ট্রেনটি গেট পার হয়ে যাওয়ার পর পূনরায় ওই বাঁশটি গেটম্যান সড়কের বাইরে রেখে দেয়। এ সময় শরিফুল নামে অপর গেটম্যান লাল-সবুজ পতাকা হাতে নিয়ে গেটের অপর প্রান্তে সড়কের মাঝখানে গাড়ীর সামনে দাঁড়িয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে রাজবাড়ীর রেলওয়ে অফিসার (আইডব্লিউ) হাফিজুর রহমান ও এইএন আবু বক্কার সিদ্দিক জানান, গেট প্রতিবন্ধটি মেরামতের কাজটি চলমান আছে। ঢাকার মেসার্স মাহবুব এন্ড ব্রাদার্স নামে একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এলাকার গেটের কাজগুলো সম্পন্ন করার কথা। তবে ওই ঠিকাদার কর্তৃপক্ষ স্থানীয় আঃ সালাম নামে একজন ঠিকাদারকে দায়িত্ব দিয়েছে কাজগুলো সমাধানের জন্য। আশা করছি দ্রুত ঠিক হয়ে যাবে।

এ বিষয়ে রাজবাড়ীর রেলওয়ের কর্মকর্তা এ.ই.এন আবু বক্কার সিদ্দিক জানান, গেট বেরীয়ার মেরামতের কাজটি চলমান আছে। আসা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে ওইখানে স্থায়ী রেলগেট বেরীয়ার নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হবে। তবে কবে নাগাদ হবে তা তিনি বলতে পারেননি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।