গ্যাসের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে রবিবার দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসাবে নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ ও শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে বাম গণতান্ত্রিক জোট নারায়ণগঞ্জ জেলা।

বাম গণতান্ত্রিক জোট ও বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা সমম্বয়ক নিখিল দাসের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শিবনাথ চক্রবর্তী, বাসদ নারায়ণগঞ্জ জেলা ফোরামের সদস্য আবু নাঈম খান বিপ্লব, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি মাহমুদ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আবু হাসান টিপু, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন, অঞ্জন দাস।

নেতৃবৃন্দ বলেন, জনমত উপেক্ষা করে সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে গ্যাসের দাম গড়ে ৩২.৮০ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। বাসাবাড়িতে সিঙ্গেল চুলা ৭৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯২৫ টাকা এবং ডাবল চুলা ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৭৫ টাকা করা হয়েছে। সব রকম ব্যবহারে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। বাসÍবে লুটপাটকারী ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এল এন জি আমদানির ঘাটতি পোষাতে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে। আইনে আছে গ্যাস ও বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলো লাভজনক অবস্থায় থাকলে দাম বাড়ানো যাবে না। যদিও প্রতিটি কোম্পানি লাভজনক অবস্থায় রয়েছে তারপরেও আইন লঙ্ঘন করে গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে সারা দেশের মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে। বাম গণতান্ত্রিক জোটের আহ্বানে ৭ জুলাই দেশব্যাপী অর্ধদিবস হরতাল পালিত হয়েছে। অথচ চীন সফর শেষে দেশে ফিরে সংবাদ সম্মেলন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ”উন্নয়ন চাইলে গ্যাসের দাম বৃদ্ধি মেনে নিতে হবে”। তিনি রেগে গিয়ে বলেন, ”৯.২০ টাকা মেনে না নিলে যে দামে কিনি অর্থাৎ ৬১ টাকা দামেই গ্রাহককে মেনে নিতে হবে”। একজন প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্যে দেশবাসী স্তম্ভিত হয়েছে। জনগণের প্রতি ন্যূনতম দায়বোধ থাকলে তিনি এই কথা বলতে পারতেন না। যেখানে বাজেট বক্তৃতায় ১২ পৃষ্ঠার ৩৮ অনুচ্ছেদে উল্লেখ ছিল সরকার এমন কোন সিদ্ধান্ত নেবে না যাতে জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি ঘটে। অথচ বাজেট পাশের দিনই গ্যাসের মূল্য ৩২.৮০% বৃদ্ধিতে রড, সিমেন্ট, বাড়িভাড়া, পরিবহন ভাড়া, চুলার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির লাগামহীন যাত্রা শুরু হয়েছে। উন্নয়নের কথা বলে সরকারের দুর্নীতি ও লুটপাটের দায় জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে। চুরি, দুর্নীতি বন্ধ করে কথিত সিস্টেম লস কমিয়ে যে ঘাটতি পুরণ করা যেত তাতে মূল্যবৃদ্ধির প্রয়োজন ছিল না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, এসময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে গ্যাসের দাম ৫০ ভাগ কমেছে। এতে ভারতে গ্যাসের দাম ১০১ রুপি কমেছে। কিন্তু আমাদের সরকারের জনগণের স্বার্থ রক্ষার ব্যাপারে কোন ভ্রƒক্ষেপ নেই, তাই দাম না কমিয়ে বরং দাম বাড়ানো হয়। বক্তাগণ অবিলম্বে গ্যাসের বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহার, সিলিন্ডার গ্যাসের দাম কমানোর দাবিতে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।