সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে দুদক কমিশনার (তদন্ত) এএফএম আমিনুল ইসলাম বলেন, জনগণের করের টাকায় আমাদের বেতন। তাদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা আছে। মানুষ মানুষের জন্য। সেবাই আমাদের ধর্ম। তাই জনসাধারণকে সেবা দেয়া সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের নৈতিক দায়িত্ব।

তিনি বলেন, দুদক আপনাদের শোধরানোরর সুযোগ দেবে। প্রথম পর্যায়ে ক্ষমা। পরে দুর্নীতির অভিযোগ পেলে তাদেরকে আর ক্ষমা করার সুযোগ নেই। দুর্নীতিবাজ যেই হউক না কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তাই ঘুষ ও দুর্নীতি পরিহার করে জনগণের সেবায় এগিয়ে আসতে হবে।

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার স্থানীয় জেলা পরিষদ হলরুমে সোমবার দিনব্যাপি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় ময়মনসিংহ আয়োজিত জেলা ও উপজেলার সরকারি ও বেসরকারি দপ্তরের দুর্নীতির চিত্র নিয়ে অনুষ্ঠিত গণশুনানিতে তিনি এসব কথা বলেন।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম, পুলিশ সুপার জয়দেব চৌধুরী। স্বাগতিক বক্তব্য রাখেন দুদক পরিচালক কামরুল হাসান।

গণশুনানিতে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ যোগ দেন। সময়ের অভাবে ৮ জনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৪ টি নিষ্পত্তি করা হয়। বাকি অভিযোগগুরো দুর্গাপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানমসহ ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে নিষ্পত্তির দায়িত্ব দেয়া হয়।

প্রধান অতিথি বলেন, তথ্য পাওয়া আমার আইনি অধিকার। সেবা পাওয়া আমার নাগরিক অধিকার ও দুর্নীতিমুক্ত দেশ আমার সাংবিধানিক অধিকার। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এ দেশটাকে স্বাধীন করে দিয়েছেন। তারই কন্যা জননেত্রী প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনা নিরলস পরিশ্রম করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে পরিচিত করেছেন। জনগণ সুন্দরভাবে জীবন যাপন করবে। কোনো ঘুষ-দুর্নীতি থাকবে না। জনগণকে সচেতন হতেই হবে এটাই আমাদের কাম্য। এই অনুষ্ঠান কাউকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্যে নয়।

১০৬ নম্বরে ফোন করলে আপনারা সেবা পাবেন। এ পর্যন্ত ১৫ টি ‘গণশুনানি’ অনুষ্ঠান হয়েছে।

অভিযোগকারীদের মধ্যে ছিলেন উপজেলার শান্তিপুরের মোতালেব, থাউশাল পাড়ার জামাল উদ্দিন, ইন্দ্রপুরের আবুল উদ্দিন, বড়ই কান্দির হাবিবুর রহমান, শাতাশি গ্রামের আবুল কালাম, মিঠাপুকুর পাড়ের দুলাল চক্রবর্তী, তেরীবাজারের হাজী মুকুল ভান্ডারী, চন্ডিগড়ের চাঁন মিয়া ফকির ও আব্দুর রশীদ, পৌরসভার রোকেয়া খাতুন ও কবিতা রায়।

তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ভূমি কর্মকর্তা, সাবরেজিস্টার, পল্লীবিদুৎ কর্মকর্তা, বনবিভাগ কর্মকর্তা, মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা ও বালুমহালের বিডার বক্তব্য দেন।

দলিল লেখক দেলোয়ার হোসেন তাৎক্ষণিক ঘুষের ২৫ হাজার টাকা ফেরত দেন। এছাড়াও উপজেলা সাব-রেজিস্টার গোপাল সরকার ঘুষের ৮১০ টাকা ফেরত দেন এবং আর ঘুষ নেবেন না বলে জনগণের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন।

আর যাদের আদালতের মামলা রয়েছে তাদের অভিযোগ খারিজ করা হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জান্নাতুল ফেরদৌস আরা ঝুমা তালুকদার, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফারজানা খানম, পৌর মেয়র হাজী আব্দুস ছালাম, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুল হাসান নীরা (সাদ্দাম আকঞ্জী), পারভীন আক্তার, জেলা পরিষদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শফিক, প্রিন্ট ও মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।