নিজস্ব সংবাদদাতা, পটুয়াখালী; জেলার রাঙ্গাবালী উপজেলায় চায়ের দোকানে চুরি করার অপরাধে এক শিশুকে মারধর করে অর্ধবেলা শিকলবন্দি করে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি ২০২০)  রাত ৭টায় চরমোন্তাজ ইউনিয়নের স্লুইস বাজারের একটি চায়ের দোকান থেকে তাকে শিকল মুক্ত করা হয়। ওই শিশুটির নাম রিপন মৃধা (১১)। সে চরমোন্তাজ স্লুইস বাজার আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা মৃত. রুবেল মৃধা ছেলে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার দুপুর ১টায় চরমোন্তাজ স্লুইস বাজারের বেল্লাল প্যাদার মালিকানাধীন চায়ের দোকানে চুরি করার সন্দেহে শিশু রিপনকে আটকে জিজ্ঞাসাবাদ করে দোকান মালিক। একপর্যায় ওই দোকানের পেছনেই শিশুটির পায়ে শিকল পরিয়ে আটকে রাখে বেল্লাল। এ খবর পেয়ে রাত ৭টার দিকে স্থানীয় সংবাদকর্মীরা উপস্থিত হন। বিষয়টি টের পেয়ে ওই শিশুটিকে তাৎক্ষণিক শিকল মুক্ত করে দেয় বেল্লাল।

নির্যাতিতা রিপন জানায়, ৪০০ টাকা চুরি করায় চা দোকানদার বেল্লাল তাকে ধরে চড়-থাপ্পর ও কিলঘুষি দিয়ে পায়ে শিকল পড়িয়ে আটকে রাখে।

ভুক্তভুগি শিশুটির মা জাহানারা বলেন, ছেলেকে মারধর করে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখার খবর শুনে তিনি ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে ইউপি সদস্যের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করার প্রস্তাব দিয়ে ছেলেকে ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু বেল্লাল এতে রাজি হননি। পরে আবার ছেলে লোকজন দিয়ে মারধর করানো হচ্ছে, এমন খবর পেয়ে আবার গেলে তাকে গালিগালাজ করেন বেল্লাল।

অভিযুক্ত চায়ের দোকানদার বেল্লাল প্যাদা বলেন, ‘চাকু দিয়ে দোকানের পিছনের টিন কাইট্টা রিপন হাজার-বারো শো টাকা নিছে। আর কিছু বিস্কুট খাইছে।’ এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ক্যান্না (যদি) জাইগ্যায়, তাই শেকল দিয়া প্যাচায়া রাখছি। অরে থাবরও দেই নাই, কিছুই করি নাই। অরে চা, জেলাপি খাওয়াইছি। অর মা’ও আইয়া আমার ধারে বলে নাই যে, ওরে দিয়া দে। পরে ছাইড়া দিছি, আমি মাফটাফ চাইছি।’

এ বিষয়ে চরমোন্তাজ পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ আনিসুর রহমান জানান, ‘বিষয়টি শুনে দায়িত্বরত এএসআই রিয়াজকে দেখতে বলেছি। তবে শিকল দিয়ে যদি বেঁধে রাখে, এটি আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার মতো অপরাধ। এ ধরণের অপরাধ করলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।