ডেস্ক রিপোর্ট, ঢাকা;  ছেলেদের নামে সম্পত্তি লিখে না দেওয়ার ৯০ বছর বয়সী বৃদ্ধা শাশুড়িকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন ছেলের বউ।

গত বুধবার (২৭ মে ২০২০) সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার মাধাইনগর ইউনিয়নের জাহাঙ্গীরগাঁতী এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, আয়েশা খাতুন (৯০) ও খলিল মুন্সি (১০০) দম্পতির ফসলি জমির পরিমাণ প্রায় ৪০ বিঘা। তাদের দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। ছেলেরাও উচ্চ শিক্ষিত। অথচ সেই বৃদ্ধা মাকে ছেলে করিমের (৬০) সামনে তার স্ত্রী গোকুল খাতুন (৫০) তাদের জমিজমা ছেলেদের নামে লিখে না দেওয়ায় বেধরক পিটিয়ে সারাদিন খেতে না দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেন।

পরে ওই বৃদ্ধা এখানে সেখানে ঘুরে আজ বৃহস্পতিবার লাঠিতে ভর করে রাস্তায় এসে কান্নাকাটি করতে থাকেন। একপর্যায়ে স্থানীয় এক অটো রিকশাচালক ওই বৃদ্ধাকে নিয়ে তাড়াশ থানার গেটে নামিয়ে দেন।

এদিকে থানার গেটের সামনে বসে আয়েশা খাতুন কাঁদতে থাকলে পুলিশ ও স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের নজরে আসে। তারা তাকে থানায় নিয়ে বসিয়ে খাবারের ব্যবস্থা করেন।

  • পরে তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলমকে ওই বৃদ্ধা জানান, তার নামে ৫ বিঘা ও তার স্বামীর নামে ৩৫ বিঘা ফসলি জমি ও বাড়ি রয়েছে। কিন্তু সেই জমিজমা ছেলেদের নামে লিখে না দেওয়ায় তার দুই সন্তান তাদের ঠিকমত ভরণপোষণ করেন না। উপরন্তু ছেলে করিম ও তার স্ত্রী গোকুল খাতুন প্রায়ই তাকে মারধর করে থাকে বলে তিনি অভিযোগ করেন।

বৃদ্ধা আয়েশার শারীরিক নির্যাতনের কথা শুনে তাৎক্ষণিকভাবে তাড়াশ থানার ওসি মাহবুবুল আলম বৃদ্ধার ছেলে আব্দুল করিম ও তার স্ত্রী গোকুল খাতুনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।

  • পরবর্তীতে বিকেল ৪টার দিকে গ্রাম্য প্রধানদের মাধ্যমে ছেলে আব্দুল করিম ও তার স্ত্রী গোকুল খাতুন ভবিষতে বৃদ্ধ শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে আর এ ধরনের অমানবিক কাজ করবেন না বলে মুচলেকা নেওয়া হয়। পরে বৃদ্ধা আয়েশাকে তার ছেলে ও ছেলের বৌয়ের সঙ্গে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

ওসি মাহবুবুল আলম বলেন, ‘স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের অনুরোধে বৃদ্ধা মাকে নির্যাতনকারী ছেলে ও ছেলের স্ত্রীকে মুচলেকা নিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভবিষতে আবারও এ ধরনের অমানবিক ঘটনা ঘটালে তাদের বিরুদ্ধে মামলা নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

আমাদের বাণী ডট কম/২৮  মে ২০২০/সিসিপি 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।