সারাদেশে বন্যার প্রভাবে উর্ধ্বমুখী ঠাকুরগাঁও জেলার নিত্যপণ্যের বাজার গুলো । তবে তুলনামূলক কমে পাওয়া যাচ্ছে পেঁয়াজ। পেঁয়াজের দাম কমলেও গত সপ্তাহের মতো চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ সহ ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে বেড়ে যাওয়া মসলা এখনও চড়া দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

শুক্রবার ঠাকুরগাঁও জেলার বালিয়াডাঙ্গী বাজার, লাহিড়ী বাজার, রানীশংকৈল বাজার, নেকমরদ বাজার, হরিপুর বাজার, যাদুরানী বাজার, কাতিহার বাজার, পীরগঞ্জ বাজার, জাবর হাট বাজার, গৌগর হাট বাজার, শিবগঞ্জ হাট, ভুল্লি বাজার, চৌধুরী হাট, গড়িয়া বাজার, খোচাবাড়ী বাজার, রুহিয়া রাম নাথ বাজার, ঠাকুরগাঁও রোড বাজার, ঠাকুরগাঁও আরত বাজার,

এলাকার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

ব্যবসায়ীরা জানান, বন্যা ও টানা বৃষ্টির কারণে সব ধরনের সবজির ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মরিচের। যে কারণে কাঁচা মরিচের দাম সব থেকে বেশি বেড়েছে। এছাড়া দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও জেলার বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা। যা গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকায়। আর নিম্নমানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ টাকা কেজি।

ঈদ আসতে তিন সপ্তাহ বাকি থাকলেও চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে আদা, রসুন, গোল মরিচ, হলুদ, মরিচ গুড়া, জয়ত্রী, এলাচ, দারুচিনি। বাজারে প্রতিকেজি এলাচ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৭০০ থেকে দুই হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে, জয়ত্রী বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার ৫০০ থেকে দুই হাজার ৬০০ টাকায়, লবঙ্গ প্রতিকেজি ৮৫০ টাকা, গোল মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৫৮০ থেকে ৬০০ টাকায়, জিরা ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকায়, দারুচিনি ৪৫০ টাকায়। এছাড়া আমদানি করা চায়না আদা বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা। আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি আর দেশি ১৩০ টাকা কেজি।

গত সপ্তাহের মতো মানভেদে চড়া দামে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচা মরিচ। মরিচের পর সব থেকে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে টমেটো। গাজর ও শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ১২০ টাকা কেজি।

এছাড়া অন্যান্য সবজি ৫০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। গত সপ্তাহের মতো করলা, কাঁকরোল, উস্তা, ঝিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, ঢেঁড়স, পেঁপে, পটল, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন, বরবটি ৬০ থেকে ৮০ টাকা, আলু ২০ থেকে ২২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া বাজারে প্রতি আটি লাল শাক, মুলা শাক, কলমি শাক ২৫ টাকা, পুঁই শাক, লাউ শাক ৩০ টাকা, ধনে পাতা কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এদিকে মাংসের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বয়লার মুরগির গত সপ্তাহের মতো ১৩৫-১৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি কক বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৩০ টাকা কেজি। একই দামে বিক্রি হচ্ছে লাল লেয়ার মুরগি। গরুর মাংস বাজার ভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫৫০-৫৭০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০-৮৫০ টাকা কেজি।
মাছ-মাংসের দামের উচ্চমূল্যে ডিম ছাড়া চিন্তাও করতে পারেন না স্বল্প আয়ের মানুষ। কিন্তু সেই ডিমও এখন সাধ্যের বাইরে। বর্তমানে রাজধানীর বাজারে প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪২ টাকায়। পাড়া-মহল্লার দোকানগুলোতে তা ৪৫ টাকা ছাড়িয়েছে। অথচ এক মাস আগেও ডিমের হালি ছিল ২৮ থেকে ৩০ টাকার মধ্যে। মাসের ব্যবধানে প্রতি হালিতে বেড়েছে ১০ টাকারও বেশি।

আগের দামেই বিক্রি হচ্ছে চাল ও অন্যান্য মুদিপণ্যের দাম। বাজারে প্রতিকেজি নাজির ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মিনিকেট চাল ৫৫ থেকে ৫২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। স্বর্ণা ৩৫ থেকে ৩৮ টাকা, বিআর ২৮ নম্বর ৩৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে। এছাড়া খোলা আটা বিক্রি হচ্ছে ২৬ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা, লবণ ৩০ থেকে ৩৫, পোলাউর চাল ৯০ থেকে ৯৫। খোলা ময়দা ২৮ টাকা, প্যাকেট ৩২ টাকা। প্রতি কেজি চিনি ৫২ টাকা, ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, খেসারি ৬৫ থেকে ৭০ টাকা, মসুর ডাল ১০০ থেকে ১১০ টাকা, বুট ৩৮ থেকে ৪০ টাকা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।