দোয়ারাবাজারে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। অব্যাহত ভারী বর্ষণে নদ নদীর পানি বিপদ সীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বানভাসী মানুষের মধ্যে এখন আহাজারি শুরু হয়েছে। উপজেলার প্রধান প্রধান সড়ক গুলো তলিয়ে গিয়ে গত ৪ দিন ধরেই উপজেলার সঙ্গে বিভিন্ন ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে।

এ বছরের দ্বিতীয় দফা বন্যায় যেন কাবু হয়ে হয়ে পড়েছেন প্রত্যন্ত এলাকার মানুষ। গ্রামীণ রাস্তাঘাট গুলো অধিকাংশই পানির নিচে এবং বসত ভিটায় বানের পানি ঢুকে পড়ায় জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া বন্যার পানিতে ভেসে গেছে পুকুরের লাখ লাখ টাকার মাছ। বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। বিশেষ করে হাওরপাড়ের মানুষেরা পানিবন্দী হয়ে গৃহপালিত পশু,হাঁস মোরগ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন।

সর্বত্র এখন গো খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকার বয়স্ক লোকসহ শিশু ও নারীরা পানি বাহিত নানা রোগবালাই ভোগছেন। বিশুদ্ধ খাবার পানির অভাবে অনেকেই বন্যার পানি পান সহ প্রয়োজনীয় কাজ করতে হচ্ছে।

অন্যদিকে বন্যায় কাবু হয়ে উপজেলার প্রত্যন্ত এলাকার শ্রমজীবি মানুষ গৃহবন্দী হয়ে পড়েছেন। কাজ করতে না পারায় বন্যা কবলিত হয়ে খেয়ে না খেয়ে দুর্ভোগের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। কয়েক দিন ধরে পানি বন্দী হয়ে পড়ায় সরকারি ত্রাণ সহায়তার জন্য বন্যার্তদের মধ্যে এখন হাহাহাকার শুরু হয়েছে।

উপজেলা প্রশাসন নিশ্চিত করেছে, প্রশাসনের উদ্যোগে গত দুই দিনে বন্যা কবলিত উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বন্যার্তদের মধ্যে শুকনো খাবার প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে।

বন্যার্তদের জন্য শনিবার পর্যন্ত কোনো বরাদ্দ আসেনি। এর আগে প্রথম দফা বন্যায় সরকারি ভাবে ২৯ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ হয়েছিল। বন্যার পানি কমেেত শুরু করলে অব্যাহত ভারী বর্ষণে ফের দ্বিতীয় দফায় বন্যায় পানি বন্দী হয়ে পড়েন উপজেলার হাজার হাজার মানুষ।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আম্বিয়া আহমদ বলেছেন, প্রথম বার বন্যায় যে বরাদ্দ হয়েছিল শনিবার থেকে ওই বরাদ্দের চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। তবে দ্বিতীয় দফায় বর্তমানে বন্যার্তদের জন্য এখনো সরকারি কোনো বরাদ্দ দেয়া হয়নি।

শনিবার পর্যন্ত উপজেলা সদর সহ সুরমা ও নরসিংপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকার বন্যার্তদের মধ্যে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ২ শ’ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোনিয়া সুলতানা বলেছেন, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ইতিমধ্যে শুকনো খাবার প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। বন্যার্তদের ত্রানের জন্য চাহিদা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে।

এছাড়া বন্যা কবলিত এলাকার জনসাধারণ ও গৃহপালিত পশুর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করণে উপজেলা কন্ট্রোল রোমের মাধ্যমে সব ধরণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।