নিজস্ব সংবাদদাতা, ঢাকা;  মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ও সিনিয়র সাংবা‌দিক সুমন মাহমুদ করোনা উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। আজ শুক্রবার (২২ মে ২০২০)  বিকেলে ঢাকার গেন্ডারিয়ায় আসগর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক পুত্র ও এক কন্যাসহ অসংখ্য আত্মীয় ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তার স্ত্রী অধ্যাপক ডা. পারভীন শাহীদা আকতার দেশের প্রখ্যাত ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ।

ভোরের কাগজের নিজস্ব প্রতিবেদক ইমরান রহমান জানান, ভোরের কাগজের সাবেক এই সিনিয়র সাংবাদিকের করোনায় মৃত্যু হয়েছে কিনা নিশ্চিত নয়। তার করোনা উপসর্গ ছিল। তিনি দুই বার টেস্ট করান। দুই বারই ফলাফল নেগেটিভ আসে। পরে শ্বাসকষ্ট ও করোনার বিভিন্ন উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।

আজ রাতেই তার লাশ বনানীতে বাবা-মায়ের পাশে দাফন করা হবে বলে জানিয়েছে পরিবার।

সাংবাদিক সুমনের ভাই কর্নেল (অব.) মঞ্জুর আহমেদ হেলাল বলেন, জামালপুর জেলার মেলানদহ থানার পাচতইলা গ্রামের মরহুম নিজামউদ্দিন আহমেদের ছেলে সুমন। রাজধানীর আসাদ অ্যাভিনিউয়ের একটি বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। ১২ মে থেকে প্রচণ্ড শ্বাসকষ্টের সমস্যায় ভুগছিলেন সুমন। যেহেতু শ্বাসকষ্ট করোনার উপসর্গ তাই সুমন মাহমুদকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা শেষে একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকার ব্যবস্থা করে দেয় কর্তৃপক্ষ। সেখানে থাকা সম্ভব নয় ভেবে সুমন মাহমুদকে বাসায় নিয়ে আসলে পরিস্থিতি খারাপ হতে থাকে।

তিনি জানান, পরে ওই দিন রাতেই আজগর আলী হাসপাতালের আইসিইউতে নেয়া হয়। ১৩ তারিখ শ্বাসকষ্ট আরো বেড়ে যায়। ১৪ তারিখ থেকে নেবুলাইজার দেয়াসহ সব ধরনের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। ওই দিন থেকেই তিনি অচেতন অবস্থায় ছিলেন। এর মাঝখানে দুইবার করোনা টেস্ট করানো হয়। যার রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। শুক্রবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

সুমন মাহমুদ দীর্ঘদিন থেকে অবসর জীবন যাপন করছিলেন। পেশাগত জীবনে তিনি দৈনিক ভোরের কাগজসহ বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে যুক্ত ছিলেন।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের করোনাভাইরাস সংক্রান্ত নিয়মিত হেলথ বুলেটিনের সর্বশেষ (২২ মে ২০২০) তথ্য অনুযায়ী, দেশে মহামারি করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ২৪ জনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এ নিয়ে ভাইরাসটিতে মোট ৪৩২  জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন আরও এক হাজার ৬৯৪ জন। এতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৩০ হাজার ২০৫ জনে।গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হ‌য়েছেন আরও ৫৮৮ জন। এ নি‌য়ে সুস্থ হ‌য়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ছয় হাজার ১৯০ জ‌নে। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সম্পর্কে জানানো হয়, হাসপাতালে মারা গেছেন ১৫ জন, বাড়িতে আটজন ও হাসপাতালে আনার পথে একজন। এদের মধ্যে ঢাকা বিভাগের ১৩ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৯ জন, বরিশাল বিভাগে একজন ও ময়মনসিংহ বিভাগের তিনজন। তাদের বয়স বিশ্লেষণে ২১-৩০ বছরের মধ্যে পাঁচজন, ৩১-৪০ বছরের মধ্যে তিনজন, ৪১-৫০ দুইজন, ৫১-৬০ পাঁচজন, ৬১-৭০ ছয়জন, ৭১-৮০ দুইজন এবং ৮১-৯০ বছরের মধ্যে একজন।
আমাদের বাণী ডট কম/২২ মে ২০২০/ডিএ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।