নিজস্ব সংবাদদাতা, রাজশাহী; জেলার দূর্গাপুর পালিবাজারের সাবাসপুর বিলে প্রায় ৬০বিঘা আয়তনের একটি পুকুর খনন করছে রুহুল নামের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি।

রুহুল বলেন, পুলিশসহ সকলকেই ম্যানেজ করে পুকুর খনন করছি। টাকা যতই খরচ হোক পুকুর খনন সম্পন্ন করেই ছাড়বো। এছাড়াও উপজেলার ৬নং মাড়িয়া ইউনিয়নের শাহবাজপুর, ডুমুরকান্দি বিলে, রাত হলেই শুরু হচ্ছে পুকুর খননের কাজ।

এদিকে স্থানীয় কৃষক ও সাধারন জনতার অভিযোগ, উচ্চ আদালতের আদেশ অমান্য করেই দিনের পর দিন রাতের আধারে প্রতিযোগীতা মূলক চলছে অবৈধ ভাবে পুকুর খনন কার্যক্রম।

রাজশাহী জেলার মধ্যে সবচাইতে বেশি পুকুর খনন হচ্ছে দূর্গাপুর উপজেলায়। সরেজমিনে গেলেই দেখা মিলবে তার বাস্তব চিত্র। আর এ সকল অপকর্মের সাথে জড়িত রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা, মেম্বার চেয়ারম্যান ও দূগাপুর থানা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক কৃষক ও স্থানীয়রা জানায়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী করোনাভাইরাস সংকটের মধ্যে বাড়ির আশপাশে কোন জমিই ফাঁকা রাখা যাবেনা। সেখানে ফসলি জমি কেটে মাটি নেয়া হচ্ছে ইট ভাটায়। আর কৃষদের বেকার করে শতশত বিঘা ফসলি জমি খনন করে তৈরী করা হচ্ছে পুকুর। এসকল লোকজন দলের নাম ভাঙ্গাচ্ছেন বলেও অভিযোগ স্থানীয়দেরা।

এ বিষয়ে দূর্গাপুর উপজেলার সচেতন ব্যক্তিরা পুকুর খননকারীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

এ বিষয়ে দূর্গাপুর (ইউএনও) উপজেলা নির্বাহি অফিসারের মুঠো ফোনে ফোন দিলে তিনি বলেন, দূর্গাপুর থানার ওসিকে জানান।

জানতে চাইলে দূর্গাপুর থানার ওসি খুরশিদ বানু কনা বলেন, গতকাল সোমবার রাতে পুকুর খনন বন্ধ করেছিলাম। পরে খনন করেছে কি না আমার জানা নেই। তিনি রাগাম্বিত হয়ে চিৎকার করে বলেন, আপনাদের সমস্যা কি। এতো ফোন দেন কেন ? কি চান আপনারা।

উত্তরে এই প্রতিবেদক বলেন, সরকার যেই নির্দেশ দিয়েছেন। তার ব্যতিক্রম যাতে না হয় সেটাই আমরা চাই। আমরা চাই পুরো দূর্গাপুরসহ রাজশাহী বিভাগে পুকুর খনন বন্ধ হোক। ফসলি জমিতে ফসল ফলুক। কৃষক যাতে কর্মহীন হয়ে না পড়ে সেটাই আমাদের চাওয়া।

দুঃখ জনক হলেও সত্য সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে রিতি মতো ফুটবলে পরিনত হচ্ছে। ওসি বলে ইউএনওকে বলেন, ইউএনও বলে ওসিকে বলেন। এ ভাবেই হয়রানীর হচ্ছে সাংবাদিক।

আর সাংবাদিকদের দৌঁড়ের উপর রেখেই বিশাল আকারের দানব যন্ত্র ভেকু মেশিন দিয়ে দ্রুত পুকুর খনন কাজ সম্পন্ন করছে অসাধু অর্থলোভী, সুবিধাভোগী নামধারী নেতা ও কতিপয় ব্যক্তিরা। পাশাপাশি যার যতটুকু প্রাপ্য তাদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে অর্থ। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে দেশ ও দেশের মানুষ। বেকার হচ্ছে কৃষক। এছাড়া পরিবেশ পড়ছে ক্ষতির মুখে। ঘটছে জলবায়ুর পরিবর্তন।

এদিকে, রাজশাহী জেলা প্রশাসক মোঃ হামিদুল হক তার ফেসবুক পেজে লিখেছেন। বিশ্বব্যাপি চলমান করোনা পরিস্থিতিতে সারাবিশ্বে দেখা দিতে পারে খাদ্য সংকট। তাই আমাদের সকল কৃষি জমিকে চাষের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। এমনকি সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা সমূহের অনাবাদি জমিও ফেলে রাখা যাবেনা।কোন জমিতে ধান চাষ না হলে, শাকসবজি, ফলমূল চাষাবাদ করতে হবে। মনে রাখতে হবে কোন জমি পরপর তিন বছর অনাবাদি পড়ে থাকলে সরকার ইচ্ছা করলে রাষ্ট্রীয় অধিগ্রহন ও প্রজাসত্ব আইন ১৯৫০ অনুযায়ী খাস করতে পারে।

আমাদের বাণী ডট/১৩  মে ২০২০/পিবিএ

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।