নাটোর সংবাদদাতা; জেলায় করোনা টেস্টিং ল্যাব স্থাপন, অক্সিজেন সরবরাহসহ পর্যাপ্ত আইসিইউ বেড নিশ্চিত করা,স্বাস্থ্যখাতে দূর্নীতি – অব্যবস্থাপনা বন্ধ, রাষ্ট্রীয় পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে পাটকল আধুনিকায়ন করার দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ  করেছে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটি নাটোর জেলা শাখা।

আজ শনিবার (১৮ জুলাই ২০২০) বিকেলে জেলার পুরাতন বাসষ্ট্যান্ডে এই মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা আহ্বায়ক এড.লোকমান হোসেন বাদল এবং সমাবেশ সঞ্চালনা করেন জেলা সদস্য সচিব দেবাশীষ রায়।সমাবেশে অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব এড.সুখময় রায় বিপলু,ভিক্টোরিয়া পাবলিক লাইব্রেরীর সা: সম্পাদক আলতাব হোসেন,ন্যাপ জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ,বাসদ জেলা নেতা মোবারক হোসেন,কৃষক ফ্রন্ট নেতা কোরবান হোসেন, ওয়ার্কার্স পার্টির জেলা সদস্য মিজানুর রহমান,সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সাজ্জিদ হোসেন ঝর্না,ঈংগিত থিয়েটারের সদস্য বুলবুল হোসেন,সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট নাটোর শহর কমিটির সদস্য অমিয় পাল সহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, “দেশে করোনা মহামারী মোকাবিলায় স্বাস্থ্যখাতে চরম অব্যবস্থাপনা আর দূর্নীতি চলছে। করোনা টেস্টের নামে ভূয়া রিপোর্ট দিয়ে মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়া হচ্ছে।সাহেদ-সাবরিনা-মিঠু দের মত চক্র তৈরি করে এই লুটের ব্যবস্থা করা হলেও, এখন এর দায় সরকারের কেউ নিতে চাইছে না।স্বাস্থ্য মন্ত্রী এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের চরম অব্যবস্থাপনায় এবং ভূমিকা না থাকায় করোনা মহামারী সারা দেশে জটিল আকার ধারণ করছে। দেশের বেশির ভাগ জেলায় করোনা টেস্টে এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই।সরকারের এসব ব্যাপারে কোন পরিকল্পনাও নেই।

করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সরকার রাষ্ট্রীয় ২৫ টি পাটকল ১২শ কোটি টাকা লোকসান দেখিয়ে ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করে বন্ধ ঘোষণা করেছে।এতে শুধু হাজার হাজার শ্রমিক বেকারই হয়নি সারা দেশে লাখ লাখ পাট চাষী ব্যবসায়ীদের হাতে জিম্মি হয়ে পরল।অথচ পাটকলের লোকসানের জন্য দায়ী মাথাভারী প্রশাসন এবং পাটকলের সিন্ডিকেট চক্র।তাদের লুটপাটের দায় এখন শ্রমিক,পাটচাষী এবং জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে।কিন্তু পাটকল আধুনিকায়ন করে দেশে-বিদেশে ক্রমবর্ধমান পাটের চাহিদা পূরণ সম্ভব ছিল।

ঠিক একই ভাবে দেশের রাষ্ট্রায়ত্ব চিনিকল নিয়েও চলছে ষড়যন্ত্র। চিনিকলের লোকসান দেখিয়ে প্রচার করে চিনিকলগুলোও ভবিষ্যতে বন্ধ করে দেয়া হতে পারে। এমন আশঙ্কায় চিনিকল শ্রমিক,আখচাষী এবং দেশের জনগণ উদ্বিগ্ন।দেশের ১৩ টি রাষ্ট্রায়ত্ব চিনিকল গুলো বছরের মোট চাহিদার ১০ভাগও উৎপাদন করেনা, কিন্তু চিনি অবিক্রীত পরে থাকে, আখচাষীদের অর্থও লোকসানের কথা বলে পরিশোধ করা হয় না।অথচ চিনিকলের যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য ব্যবস্থা আধুনিকায়ন করা হয় না বহু বছর ধরে। ফলে যন্ত্রপাতি গুলো উৎপাদন ক্ষমতার ২০ %ভাগও উৎপাদন করতে পারছে না।এখনি চিনিকল গুলোকে আধুনিকায়ন করে দেশের চিনিশিল্প রক্ষা করা সময়ের দাবি।

করোনা মহামারী আমাদের শিক্ষা দিয়ে যাচ্ছে যে প্রকৃতিকে ধ্বংস করার পরিণতি কি হতে পারে। কিন্তু আমাদের সরকার নির্বিকার, তারা উন্নয়নের বুলি আওড়ে দেশের এবং বিশ্বের সকল মানুষের মতামত উপেক্ষা করে সুন্দরবনের রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ চালিয়ে যাচ্ছে। সুন্দরবনকে উজার করার জন্য আরো সাড়ে তিনশো প্রকল্প অনুমদন দিয়ে রেখেছে।সরকারের এসব কার্যক্রম চরম আত্নঘাতী”।পরিশেষে বক্তারা বলেন, “তাই দেশের সকল মানুষকে জীবন রক্ষায়,শিল্প রক্ষায়,প্রাণ-প্রকৃতি রক্ষায় বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে”।

আমাদের বাণী ডট কম/১৮  জুলাই ২০২০/পিপিএম

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।