মতলব উত্তর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক  মুক্তিযোদ্ধা এমএ কুদ্দুস বলেছেন, দেশের সার্বিক উন্নয়ন করতে চাইলে নারী উন্নয়নের বিকল্প নেই। নারীকে বাদ দিয়ে মানবসম্পদ উন্নয়নের কথা কেউ ভাবলে তা হবে বোকার স্বর্গে বাস করার মতো। দেশে উন্নয়নের যে অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে, সেটা ধরে রাখতে হলে নারীকে বাড়তি কিছুু সুযোগ দিতে হবে।

বাল্যবিবাহ এবং নারী নির্যাতনকে নারী উন্নয়নের পথে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করে এমএ কুদ্দুস এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সমন্বিত কার্যক্রম বাড়ানোর তাগিদ দেন। একই সঙ্গে নারীদের বিষয়ে সমাজের নেতিবাচক মানসিকতা পরিবর্তনেও সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ কুদ্দুস শহুরে নারীর পাশাপাশি গ্রামীণ নারী যাতে কোনো ভাবেই পিছিয়ে না থাকে সে দিকে নজর দিতে সবার প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় নারীরা যাতে ঘরে বসে উপার্জন করতে পারে, সে জন্য ইনকাম জেনারেটিং প্রোগ্রামের আওতায় ১৮টি ট্রেডে বিনা মূল্যে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে। এতে প্রশিক্ষণ নিতে আসা নারীদের যাতায়াত ভাতাও দেওয়া হচ্ছে। নারীদের শুধু সেলাই ফোড়াই নয়, মোবাইলে অর্থ উপার্জন, ড্রাইভিং, কম্পিউটারসহ বিভিন্ন প্রশিক্ষণও দেওয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) মতলব উত্তর উপজেলার ছেংগারচর পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত মহিলা সদস্যদের সাথে নিজ কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ কুদ্দুস এসব কথা বলেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি শহীদ উল্লাহ প্রধান, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. শাহজাহান প্রধান, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মিরাজ খালিদ’সহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, সাংবাদিক ও মহিলা সংরক্ষিত মহিলা সদস্যবৃন্দ।

উপজেলা চেয়ারম্যান এমএ কুদ্দুস বলেন, দেশে বতর্মানে ৪৮৬ উপজেলায় ৫ হাজার ৪০২টি ইউনিয়ন পরিষদ রয়েছে। স্থানীয় সরকারের সবের্শষ ধাপ হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ। দেশের সিংহভাগ লোকের বসবাস ইউনিয়নে। স্থানীয় সরকারে নারীর অংশগ্রহণ ও ক্ষমতায়নে ইউনিয়ন পরিষদে সংরক্ষিত মহিলা আসন রাখা হয়েছে।

সভায় জানানো হয়- স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এর ১০ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ইউনিয়ন পরিষদ একজন চেয়ারম্যান ও ১২ জন সদস্য নিয়ে গঠিত হবে যাদের নয়জন সাধারণ এবং তিনজন সংরক্ষিত আসনের সদস্য হবেন। এ আইনের একই ধারার উপধারা ৩-এ বলা হয়েছে, প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদে শুধু মহিলাদের জন্য তিনটি আসন সংরক্ষিত থাকবে, যা সংরক্ষিত আসন এবং ওই আসনের সদস্যরাও এ আইন ও বিধি অনুসারে প্রত্যক্ষ ভোটে নিবাির্চত হবেন। একজন মহিলা ইউপি সদস্য তিনটি ওয়াডের্র জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নিবাির্চত প্রতিনিধি।

তবে এ ক্ষেত্রে মহিলা সদস্যদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, সচেতনতা ও অধিকারচচার্র ঘাটতি অনেকাংশে দায়ী। দেখা গেছে, বেশির ভাগ মহিলা সদস্য শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি উল্লেখ করলেও প্রকৃতপক্ষে তাদের কেবল অক্ষরজ্ঞান রয়েছে। জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা তাদের দায়িত্ব ও অধিকার সম্পকের্ সচেতন নন।

পরিষদের ১৩টি স্ট্যান্ডিং কমিটি সম্পর্কে মহিলা ইউপি সদস্যরা সঠিকভাবে জানেন না। নিজ উদ্যোগে অনেক মহিলা ইউপি সদস্য যৌতুক, বাল্যবিবাহ, এসিড নিক্ষেপ ও মাদকাসক্তের মতো সামাজিক সমস্যা দূরীকরণে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে কাজ করছেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।